ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

তীব্র দাবদাহে পুড়ছে ভারত, মৃত বেড়ে ১১২০

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২৮ মে ২০১৫

তীব্র দাবদাহে পুড়ছে ভারত, মৃত বেড়ে  ১১২০

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ তীব্র দাবদাহে পুড়ছে ভারত। গত ১০ দিনে বিভিন্ন রাজ্যে অসহনীয় গরমে ১১২০ জন মারা গেছে। হিটস্ট্রোক ও অন্যান্য গরমজনিত কারণে প্রতিদিন হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তেলেঙ্গানায় মৃতের সংখ্যা সবচে বেশি। এছাড়া দিল্লী, মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব, উড়িষ্যা, উত্তর প্রদেশ, কলকাতা ও গুজরাটেও এ কারণে মৃতের ঘটনা ঘটেছে। গরমের কারণে আহমেদাবাদে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। তেলেঙ্গানায় বুধবারের তাপমাত্রা ছিল ৪৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস যা ১৯৪৭ সালের পর সর্বোচ্চ। ভারতের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এ রাজ্যে সহসাই বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। এরই মধ্যে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিং। ঘণ্টার পর ঘণ্টা কোনও কোনও এলাকা বিদ্যুতবিহীন থাকছে। গরমে নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই নির্মাণশ্রমিক, বয়স্ক এবং গৃহহীন মানুষ। এ অবস্থায় আবহাওয়া অফিস জরুরী প্রয়োজন ছাড়া লোকজনকে ঘরের বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। আর প্রয়োজনে বাইরে গেলে ক্যাপ এবং ছাতা ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লীতে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তাপমাত্রা কমার কোনও সম্ভাবনা নেই। এ শহরের বাস করা হাজার হাজার গৃহহীন লোক একটু আশ্রয়ের জন্য রাস্তার পাশের আশ্রয় কেন্দ্রগুলোকে ভীড় করছে। মনিশ সিং নামে দিল্লীর গুরগাঁও এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, প্রতি আধঘণ্টা অন্তর গোসল করতে হচ্ছে। এ গরম একেবারেই অসহনীয়। আমরা হিটস্ট্রোক এড়াতে বেশিরভাগ সময় ঘরের মধ্যেই থাকছি। খবর: এনডিটিভি, বিবিসি ও এএফপির। গত বছরের তুলনায় এ বছর আরও বেশি গরম পড়ছে। আবার বিদ্যুত না থাকায় এ্যায়ারকন্ডিশন মেশিন চলছে না। বুধবার এ শহরের অনেকেই একেবারে মাথা ঢেকে অল্প সময়ের জন্য বাইরে বের হয় বলে খবরে বলা হয়েছে। এ অবস্থায় দিল্লীতে এখন আখের রসের ব্যবসা বেড়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। ভারতের আবহাওয়া দফতরের পরিচালক ব্রহ্ম প্রকাশ যাদব বলেন, রাজধানী দিল্লীতে এখন ৪৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছে। আর সহসাই এ তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা নেই। এ অবস্থায় আগামী জুন মাসের ২ তারিখ পর্যন্ত ত্রাণ কার্যক্রম বৃদ্ধির পরামর্শ দেন তিনি। প্রচ- গরমে হাঁসফাঁস করা লোকদের বেশি পরিমাণ পানি এবং তরল খাবার গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছে ভারতের স্বাস্থ্য বিভাগ। এ অবস্থায় এক সরকারী বিবৃতিতে এনজিও সংস্থাগুলোকে রাস্তার ধারে খাওয়ার পানি সরবরাহের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি গণমাধ্যমগুলোকে গরমজনিত রোগের সতর্কতা এবং ক্যাপ ও ছাতা ছাড়া কাউকে ঘরের বাইরে না বেরোনোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকেই তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্র প্রদেশে দাবদাহ শুরু হয়। কিন্তু গেল সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অন্ধ্র প্রদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের কর্মকর্তা পি তুলসি রানি বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যারা সরাসরি প্রখর রোদের সংস্পর্শে এসেছে তারা দাবদাহের শিকার হয়েছে। এছাড়া, ৫০ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সী ব্যক্তি এবং যারা দিনমজুর তারা দাবদাহে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত্র হয়েছেন। আমরা জনগণকে সুরক্ষা ব্যবস্থা যেমনÑ ছাতা ও টুপি ব্যবহার করা, প্রচুর পরিমাণ পানি ও তরল পান করা এবং সুতি কাপড় পরার পরামর্শ দিয়েছি। এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় ফলে এ পরিস্থিতির হয়েছে বলে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে।
×