ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রাজধানীর পান্থপথে বহুতল ভবন নির্মাণে পাইলিং কাজের সময় দেয়াল ও ফুটপাথসহ রাস্তায় ধস;###;পুরো এলাকায় যানবাহন ও জনসাধারণের চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা ॥ গ্যাস ও বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন;###;বালু ও মাটির বস্তা ফেলে আশপাশের ভবন ঝুঁকিমুক্ত রাখার চেষ্টা

সুন্দরবন হোটেল ও মোনেম বিজনেস সেন্টার ঝুঁকিতে ॥ দুই শ’ ফুট ভূমিধস

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ২৮ মে ২০১৫

সুন্দরবন হোটেল ও মোনেম বিজনেস সেন্টার ঝুঁকিতে ॥ দুই শ’ ফুট ভূমিধস

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর পান্থপথে বহুতল ভবন নির্মাণের পাইলিং কাজের সময় পাশের দেয়াল ও ফুটপাথসহ একটি রাস্তা ধসে পড়েছে। ধসে পড়া অংশ অন্তত দু’শ’ ফুট নিচে চলে গেছে। সুন্দরবন হোটেলের নিচতলায় ফাটল দেখা দিয়েছে। হোটেলের পাশে থাকা প্রায় দেড় শ’ ফুট দেয়াল ও বাথরুম ধসে পড়েছে। হোটেল থেকে সকল অতিথি সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে অবশ্য হতাহতের কোন ঘটনা ঘটেনি। ভূমিধসে সুন্দরবন হোটেল এবং পাশের মোনেম বিজনেস সেন্টার নামের বহুতল ভবন রীতিমতো ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এসব ভবন রক্ষায় প্রয়োজনে সেনাবাহিনী সহায়তা করবে। বালু দিয়ে ও মাটির বস্তা ফেলে পাইলিং ভরাট করে আশপাশের ভবনগুলো ঝুঁকিমুক্ত রাখার চেষ্টা চলছে। পুরো এলাকায় যানবাহন ও সর্বসাধারণের চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি দল ছাড়াও ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র, স্থানীয় সংসদ সদস্য বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুত, রাজউক, তিতাস গ্যাসসহ সংশ্লিষ্ট দফতরের উর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বুধবার সকাল সাতটার দিকে রাজধানীর কলাবাগান থানাধীন পান্থপথ মোড়ে সি আর দত্ত সড়কের ১/সি/১ নম্বর হোল্ডিংয়ে ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার সময় সেখানে কোন কাজ চলছিল না। সকাল আটটা থেকে কাজ শুরুর কথা ছিল। তার আগেই ঘটনা ঘটায় ক্ষয়ক্ষতি হলেও হতাহতের কোন ঘটনা ঘটেনি। এলাকাবাসী জানায়, বেশ কিছুদিন ধরে প্রায় এক একর জায়গার ওপর বেসরকারী ন্যাশনাল ব্যাংকের দু’টি বহুতল ভবন (টুইন টাওয়ার) নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ চলছিল। কোরীয় প্রতিষ্ঠান হেরিম আর্কিটেক্ট এ্যান্ড প্যানার্স ও ডোঙ্গা এবং স্থানীয় প্রতিষ্ঠান প্রাইম কনস্ট্রাকশন, মাইডাস, ডিএইআইএল ইঞ্জিনিয়ার্স এ্যান্ড কনসাল্টটেন্টসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান মিলে ভবন নির্মাণ কাজ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছে। চারদিক স্টিলের শীট দিয়ে ঘিরে কাজ চলছিল। নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় ঠিকাদার এমএস কনস্ট্রাকশন ও মাম ইমপ্যাক্সের স্বত্বাধিকারী সালাউদ্দিন সাংবাদিককের জানান, কনস্ট্রাকশনের কাঠামোর দুর্বলতার কারণে ধসের ঘটনা ঘটেনি। সুন্দরবন হোটেলের সামনের রাস্তার নিচে ড্রেনেজ ব্যবস্থায় মাটির গ্যাপ (মাটি না থাকায় বা মাটি সরে যাওয়ায়) থাকার কারণে ধসের ঘটনা ঘটেছে। নির্মাণাধীন টুইন টাওয়ার লাগোয়া ছয়তলা সুন্দরবন হোটেল। আর হোটেলের পাশে মোনেম বিজনেস ডিস্ট্রিক্ট নামের বহুতল বাণিজ্যিক ভবন রয়েছে। সুন্দরবন হোটেল থেকে নির্মাণ কাজের দূরত্ব মাত্র পনেরো ফুট। প্রায় পনেরো ফুট রাস্তার পাশেই বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ চলছিল। নির্মাণ কাজের সামনে প্রায় ৩০ ফুট রাস্তা। আর রাস্তা লাগোয়া প্রায় ১০ ফুট ফুটপাথ। ফুটপাথে টং দোকান, রিক্সা-ভ্যান, ফুচকা দোকানসহ নানা ধরনের ভাসমান দোকান ছিল। স্থানীয়রা জানান, এমন পরিস্থিতিতে সুন্দরবন হোটেলের প্রায় শখানেক বোর্ডার ও শখানেক কর্মকর্তা-কর্মচারী আতঙ্কে চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকেন। তারা যার যার মতো দৌড়ে হোটেল থেকে বের হতে থাকেন। হোটেলের আন্ডারগ্রাউন্ডে ৩০ থেকে ৩৫টি গাড়ি পার্কিং করা ছিল। দ্রুত সেসব গাড়ি সামনের গেট খুলে বের করে ফেলা হয়। চোখের পলকে পুরো সুন্দরবন হোটেল খালি হয়ে যায়। হোটেলের একজন কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে জানান, ত্রুটিপূর্ণ পাইলিং কাজের জন্য দেড় মাস আগে পানি জমে হোটেলের নিচতলা ভরে গিয়েছিল। এছাড়া গত পনেরো দিনে দুই দফায় হোটেলের নিচের আন্ডারগ্রাউন্ডে গাড়ির গ্যারেজে পানি জমে ছিল। তবে সেটি পাইলিংয়ের কারণ ছাড়াও রাস্তার নিচে থাকা পানির লাইন ফেটে হতে পারে। এ নিয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ভবন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের বেশ কয়েক দফায় হাল্কা উত্তপ্ত কথাবার্তাও হয়েছে। যদিও হোটেলের দায়িত্বশীল কোন কর্তাব্যক্তি এ ব্যাপারে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। সকাল নয়টায় ঘটনাস্থলে গিয়ে কথা হয় নির্মাণাধীন ভবনের সামনের ফুটপাথে পঁচিশ বছর ধরে বিড়ি সিগারেট বিক্রির সঙ্গে জড়িত টং দোকানি শিরিন আক্তারের (৪০) সঙ্গে। তিনি বলছিলেন, প্রতিদিনের মতো আমি সকাল ছয়টার দিকে দোকান খুলতে যাই। যথারীতি দোকান খুলি। ওই সময় আর কোন দোকান খোলেনি। দোকান খোলার ঘণ্টাখানেক পরেই বিকট শব্দ হয়ে হুড়মুড় করে কি যেন আছড়ে পড়ে। পেছনে তাকিয়ে দেখি ঠিক আমার পেছনে থাকা পাইলিংয়ের পিলার, ফুটপাথে থাকা তিনটি মাঝারি ধরনের বড় গাছ আর একটি বৈদ্যুতিক তারের খুঁটি নিচে পড়ে গেছে। আমি দ্রুত দোকান ফেলে দৌড়ে সামনে থাকা কাওরান বাজার মোড়ের রাস্তা পারপারের জায়গায় চলে যাই। আমার চোখের সামনে আমার দোকান, ৮ থেকে ১০টি মালামাল আনা নেয়ার কাজে ব্যবহৃত ভ্যানগাড়ি, ৪ থেকে ৫টি ফুচকার দোকান নিমিষেই গর্তে পড়ে যায়। এরপর শুরু হয় ভাঙ্গন। দেখতে দেখতে পুরো ফুটপাথসহ রাস্তার অন্তত দশ ফুট ভেঙ্গে নিচে পড়ে যায়। এর আধঘণ্টা পরেই সুন্দরবন হোটেল আর নির্মাণাধীন ভবনের মাঝ দিয়ে যাওয়া প্রায় পনেরো ফুট রাস্তাটি ধসে নিচে পড়ে যায়। এরপর দ্রুত আশপাশের মাটিসহ অন্যান্য জিনিসপত্র পাইলিংয়ের গভীর গর্তে পড়ে যেতে থাকে। পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সেখানকার রডমিস্ত্রি মিজানুর রহমান জানান, পাইলিংয়ের গর্তে চারটি ক্রেন রয়েছে। ক্রেন চারটি ধসে জিনিসপত্রের নিচে চাপা পড়েছে। ক্রেনগুলো উদ্ধার করা খুবই কঠিন হবে। সরেজমিনে দেখা গেছে, নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের পান্থপথ মোড়ের দিকের অন্তত দু’শ’ ফুট রাস্তা ধসে গেছে। রাস্তার ফুটপাথে থাকা তিনটি গাছ, বিদুতের খুঁটি সবই নিচে পড়ে চাপা পড়েছে। ধসে পড়া জিনিসপত্রের নিচে চাপা পড়ে আছে চারটি ক্রেন। ক্রেনগুলোর আংশিক দেখা যাচ্ছে। আর সুন্দরবন হোটেল লাগোয়া প্রায় দেড় শ’ ফুট রাস্তা ধসে পাইলিংয়ের গভীর গর্তে পড়ে আছে। ধসে পড়ার রাস্তার সঙ্গে হোটেলের প্রায় দেড় শ’ ফুট সীমানা প্রাচীরও ধসে পড়ে গেছে। প্রাচীর দেয়াল ধসে পড়ার কারণে চাপে হোটেলের নিচে ফাঁটলের সৃষ্টি হয়। পানি ও গ্যাস লাইন ফেঁটে যায়। মোটা পাইপ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছিল। আর গ্যাস বেরুচ্ছিল। গ্যাস বের হয়ে পুরো এলাকা দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। দুপুর বারোটা নাগাদ পাইপ থেকে পানি পড়ছিল। পরে ওয়াসার লোকজন পানির লাইন বন্ধ করে দেয়। আর বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে গেলে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দুপুর সোয়া বারোটার দিকে বিদ্যুত বিভাগের লোকজন পুরো এলাকার বিদ্যুত লাইন বন্ধ করে দেয়। পরে বিকল্প লাইন দিয়ে বিদ্যুত চালু করে। দুপুর একটার দিকে তিতাস গ্যাসের লোকজন রাস্তা খুঁড়ে গ্যাস পাইপ লাইন বের করে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে। এদিকে হোটেলের নিচে থাকা পানির লাইন ফেটে যাওয়ার কারণে অনবরত পানি পড়তে থাকে। পানির তোড়ে মাটি দ্রুত মাটি সরে পাইলিংয়ের গর্তে গিয়ে পড়ছিল। বেলা এগারোটা নাগাদ পানির তোড়ে হোটেলের আন্ডারগ্রাউন্ডের অন্তত চল্লিশ ফুট উচ্চতার জায়গা ফাঁকা হয়ে যায়। সব মাটি সরে যায়। হোটেলের সামনে দিকে থাকা মূল দেয়াল ও বাথরুম ফেটে যায়। দুপুর একটার দিকে বাথরুমটি হুড়মুড় করে পাইলিংয়ের গর্তে পড়ে যায়। দেয়াল ও রাস্তা ধসে পড়ায় পাইলিংয়ের কাজে ব্যবহৃত স্টিলের পিলারগুলো ছিন্নভিন্ন হয়ে যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেছে। বেলা এগারোটার দিকে হোটেলটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াজেদ আলী সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার সময় এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। হোটেলের বোর্ডার আর কর্মকর্তা- কর্মচারীদের চিৎকারে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। ঘটনার পর পরই আমরা হোটেলের ৬০টি কক্ষে থাকা সব বোর্ডারকে জরুরীভাবে হোটেল ত্যাগ করতে বলি। সকালে এমন ঘটনায় বোর্ডাদের মধ্যে মারাত্মক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কারণ ওই সময় বোর্ডারদের অনেকেই ঘুমিয়ে ছিলেন। বোর্ডারদের অনেকেই পরনে যা ছিল তাই নিয়ে হোটেল ত্যাগ করেন। অনেকেই তাদের সঙ্গে থাকা মালামালও নিয়ে যাননি। যদিও পরে তারা মালপত্র নিয়ে যান। পরিস্থিতি খানিকটা স্বাভাবিক হলে হোটেলের আন্ডারগ্রাউন্ডে থাকা গাড়িগুলো বের করা হয়। সবাই নিরাপদে হোটেল ত্যাগ করেন। কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি। তিনি আরও বলেন, এমন ঘটনায় হোটেলটি ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। বোর্ডারদের টাকা ফেরত দিতে হবে। এছাড়া হোটেলের একপাশের দেয়াল ফেটে গেছে। সামনের বাথরুম ধসে পড়েছে। যেকোন সময় হোটেলটি ধসে পড়া বিচিত্র নয়। কারণ হোটেলের নিচের অধিকাংশ জায়গাতেই মাটি নেই। তারা এ ব্যাপারে ন্যাশনাল ব্যাংক ও ভবন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়ে কলাবাগান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তবে হোটেলটি কবে নাগাদ চালু করা সম্ভব হবে তা অনিশ্চিত। হোটেলটি রীতিমতো ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এমন অবস্থার মধ্যে হোটেলে কোন বোর্ডার আসবে না এটিই স্বাভাবিক। আর হোটেলের তরফ থেকেও হোটেলটির কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। খবর পেয়ে বেলা পৌনে এগারোটার দিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক ঘটনাস্থলে যান। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের বলেন, কাজটি দেখভালের দায়িত্ব মূলত রাজউকের (রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ)। ঘটনাস্থলে রাজউকের সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কাউকে না পেয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি যেকোন সময় ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে বিদ্যুত, ওয়াসা, তিতাস গ্যাস ও রাজউকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান তিনি। পরে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন ও স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বঙ্গবন্ধু পরিবারের সন্তান ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস ঘটনাস্থলে যান। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেন। মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, এমন ঘটনার জন্য রাজউক দায়ী। কারণ বিষয়টির দেখভালের দায়িত্ব রাজউকের। তিনি দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলেও সাংবাদিকদের জানান। এছাড়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক আহমেদ আনছারীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। অধ্যাপক আনছারী বলেন, পাইলিংয়ের দুর্বলতার কারণে ধসের ঘটনাটি ঘটেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলও ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন। প্রতিনিধি দলটি আশপাশের ভবন ঝুঁকিমুক্ত রাখতে প্রয়োজনে সেনাবাহিনী সহযোগিতা করবে বলে জানান। পরে দুই মেয়র, সংসদ সদস্য ও বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দল, সেনাবাহিনীর চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল, রাজউকের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান, ফায়ার সার্ভিস এ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খানসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করেন। রাজউকের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের অভিযোগ, নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। এ ব্যাপারে রাজউকের তরফ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। দুর্ঘটনাস্থল ঝুঁকিমুক্ত করতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হককে প্রধান করে একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে দুপুরের পর থেকেই পাইলিংয়ের গর্তে ঘটনাস্থলে বালুর বস্তা ও ক্রেন দিয়ে বালু ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। বিকেল চারটা নাগাদ ভরাট কাজ চলে। এরপর ভরাট কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়। যদিও বন্ধ করার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন কারণ সংশ্লিষ্টদের তরফ থেকে জানানো হয়নি। এদিকে ঘটনার পর থেকেই ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশনস) মেজর এ কে এম শাকিল নেওয়াজ একাধিক টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন। ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল প্রস্তুত রয়েছে। যে কোন ধরনের দুর্ঘটনা মোকাবেলায় তারা কাজ করার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন বলে জানান মেজর শাকিল নেওয়াজ। এদিকে ঘটনার পর থেকেই পান্থপথ মোড় থেকে সুন্দরবন হোটেলের সামনের রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পুরো এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে সেখানে যানবাহন ও জনসাধারণের চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
×