ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আমতলীতে হতাশ প্রতারিতরা

গ্রাহকের টাকা নিয়ে উধাও হায় হায় কোম্পানি

প্রকাশিত: ০৪:২৮, ২৮ মে ২০১৫

গ্রাহকের টাকা নিয়ে উধাও হায় হায় কোম্পানি

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী (বরগুনা), ২৭ মে ॥ আমতলী উপজেলার গাজীপুর বাজারে পল্লী প্রগতি সহায়ক সমিতির নামে একটি সংস্থা অসহায় ও হতদরিদ্রদের সহজ-শর্তে ঋণ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সঞ্চয় বাবদ লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে গেছে। পুলিশ অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। জানা গেছে, গত শনিবার (২৩ মে) আমতলী উপজেলার আঠারগাছিয়া ইউনিয়নের গাজীপুর বাজারে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রিপনের ঘর ভাড়া নিয়ে ‘পল্লী প্রগতি সহায়ক সমিতি’ নামে সংস্থাটি অফিস খুলেছে। এরা ঋণদান কর্মসূচীর নামে বিভিন্ন গ্রামে ৫ থেকে ১০ জন লোক নিয়ে দল গঠন করে। তিনজন কর্মকর্তা গ্রামে গ্রামে গিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থানীয় কয়েকজন দালালের সহযোগিতায় দল গঠনের কাজ শেষ করে। সংঘবদ্ধ চক্রটি সদস্যদের কাছ থেকে ভর্তি ফি বাবদ ২শ’ টাকা এবং ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা নিতে হলে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় আদায় করেছে বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছে। সহজ-শর্তে দুই বছরে ২৩ কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ যোগ্য বলে হতদরিদ্র ও কৃষকরা এ প্রলোভনে পরে সঞ্চয় টাকা জমা দেয়। বুধবার ছিল ঋণ দেয়ার দিন। সদস্যরা ওইদিন সকালে অফিসে এসে দেখে দরজায় তালা ঝুলছে এবং কর্মকর্তা নেই। ভুক্তভোগীরা অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও তাদের কোন সন্ধান পায়নি। সদস্য আমেনা বেগম জানান, ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেয়ার জন্য ভর্তি ফি বাবদ ২শ’ টাকা ও সঞ্চয় বাবদ ৫ হাজার টাকা নিয়েছে। একইভাবে মাকছু, চাঁনবড়ু ও খাদিজার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলে জানান। হাসান মৃধা, সাহাবুদ্দিন প্যাদা, রাসেল হাওলাদার জানান ১ লাখ টাকা করে ঋণ দেয়া নাম করে জন প্রতি ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় নিয়েছে। বুধবার ৩২৮ জন সদস্য গাজীপুর বাজারে অফিসের সামনে এসে ধরনা দিয়েছে। তাদের কোন সন্ধান না পেয়ে ভুক্তভোগীরা এ টাকা ফেরত পাওয়া ও প্রতারকদের গ্রেফতারের দাবিতে গাজীপুর পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ করেছে। ‘প্রতারিত হাসান মৃধা, সাহাবুদ্দিন প্যাদা ও আমেনা বেগম জানান, স্থানীয় আউয়াল হাওলাদারের সহযোগিতায় প্রতারক চক্রটি গাজীপুর এসে সাবেক চেয়ারম্যানের ঘর ভাড়া নিয়ে তাদের কাজ শুরু করে। স্থানীয় হারুন-অর-রশিদ, মোটরসাইকেল চালক আলাউদ্দিন ও মিজানুর রহমান টাকা দেয়ার জন্য লোকজন উৎসাহিত করেছে। এদিকে সংস্থার কর্মকর্তারা বিভিন্ন জনের কাছে হরেক রকমের নাম ও মোবাইল নাম্বার দিয়েছে। রাসেদুল, রাসেল, শামীম, ছগির, ওবায়েদুল মোবাইল নং- (০১৮৪৫৯৫২৭২১, ০১৮৪৫১১১০৩০, ০১৭৫৩৭১৩১৪১) এদের বাড়ির কথা বলে নড়াইল ও সিরাজগঞ্জ। এদের মোবাইল নাম্বারে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। ফাঁড়ির ইনচার্জ মাহামুদ-উল-হাসান জানান, অভিযোগ পেয়ে তাৎক্ষণিক অফিসে তালা ঝুলিয়ে সাইনবোর্ড খুলে আনা হয়েছে। ওই সাইন বোর্ডে লেখা আছে গভঃ রেজিনংসি-৫৮৯২২(৯২৮)। পল্লী প্রগতি সহায়ক সমিতি। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্প। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ঋণ কর্মসূচী। এম, আর, এ, সনদ নং ০০৮৫৩-০১৭১৭-০৭৫৩৪। গাজীপুর বাজার শাখা। আর্থিক সহযোগিতায় পিকেএসএফ। আমতলী থানা ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা সুকুমার রায় জানান, আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান জানান, প্রতারকদের ধরার চেষ্টা চলছে।
×