অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দিনভর সূচকের উত্থান-পতন শেষে পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রবণতা দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মোট ৭০ ভাগ কোম্পানির দর কমার কারণে সার্বিক সূচক বাড়লেও বাছাই সূচকটি কিছুটা বেড়েছে। ব্লু চিপস বা বাছাই তালিকাভুক্ত কোম্পানির বাইরে অন্যান্য কোম্পানির দর কমার কারণে ডিএসইর সার্বিক সূচকটি ১১.০৪ পয়েন্ট হারিয়েছে। দিনশেষে ডিএসইর প্রধান সূচকটি দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৬১৬.১২ পয়েন্টে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, সূচকের উর্ধমুখী প্রবণতা দিয়ে দিনের লেনদেন শুরু হলেও কিছুক্ষণ পরেই সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা দেয়। এরপর ফের উর্ধমুখী ধারায় ফিরলেও বিক্রির চাপে সূচক হারাতে থাকে বাজার। এভাবে সূচকের উত্থান পতনের মধ্য দিয়ে শেষ হয দিনের লেনদেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বিনিয়োগকারীদের মুনাফা তুলে নেয়ার প্রবণতার কারণে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে। গত কয়েকদিন ধরে অনেক কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়ে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মুনাফা তুলে নেয়ার প্রবণতা খুবই স্বাভাবিক।
এদিকে বুধবারও ডিএসইতে ৮০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। দিনশেষে লেনদেন হয়েছে ৮৪২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। মঙ্গলবারের তুলনায় লেনদেনের পরিমাণ সামান্য বেড়েছে। মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছিল ৮৩৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
এদিকে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর কমেছে। লেনদেন হওয়া ৩১১টি ইস্যুর মধ্যে ৭৩টির দর বেড়েছে। কমেছে ২১৯টির দর ও অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯টির দর।
গত কয়েকদিন ধরে লেনদেনের শীর্ষস্থানে রয়েছে খুলনা পাওয়ার। বুধবারও শীর্ষস্থানটি দখলে রয়েছে বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতের এ কোম্পানিটি। দিনশেষে কোম্পানির ৫৬ কোটি ২৩ লাখ ১ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনের দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকোর লেনদেন হয়েছে ৩৮ কোটি ৭০ লাখ ৩২ হাজার টাকা। ৩৫ কোটি ৪৯ লাখ ৪ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল। এরপরেই ইউনাইটেড পাওয়ার, এসিআই, সামিট এ্যালায়েন্স পোর্ট, সাইফ পাওয়ারটেক, সামিট পূর্বাঞ্চল পাওয়ার, এসিআই ফরমুলেশন্স।
ডিএসইর দরবৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলো হলো : বিএসআরএম লিমিটেড, বেক্সিমকো, বিএসআরএম স্টিল, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড, ইফাদ অটোস, নদার্ন জুটস, অলটেক্স, এসিআই ফর্মুলেশন, সামিট পূর্বাঞ্চল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড ও বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড।
দর হারানোর সেরা কোম্পানিগুলো হলো : দুলা মিয়া কটন, কে এ্যান্ড কিউ, আইসিবি ১ম এনআরবি, আজিজ পাইপস, ফাস্ট ফাইন্যান্স, বিআইএফসি, মেঘনা পেট, এইমস ১ম মিউচুয়াল ফান্ড, তুং হাই নিটিং ও এআইবিএল ১ম মিউচুয়াল ফান্ড।
ঢাকার বাজারে সূচকের মিশ্রাবস্থা থাকলেও অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সিএসইএক্স ১৩.১২ পয়েন্ট বেড়ে দিনশেষে ৮৬৯৯.৫৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সেখানে লেনদেন হয়েছে ৭৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা। সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৫৭টির, কমেছে ১৭১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯টির দর।
সিএসইর লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো : বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড, বেক্সিমকো, বিএসআরএম লিমিটেড, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন এ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, ইউনাইটেড এয়ার, কেয়া কসমেটিকস, আরএসআরএম স্টিল, মবিল যমুনা বাংলাদেশ ও আরএকে সিরামিক।