নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ, ২৬ মে ॥ নওগাঁর ধামইরহাটে একটি ক্লিনিকে সার্জন ছাড়াই সিজার করায় প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। ক্লিনিক মালিক সার্জন বা একজন এমবিবিএস না হলেও কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে অপারেশন করায় প্রসূতি ও সন্তানের মৃত্যু হয়। এমন অভিযোগে সোমবার রাতে প্রসূতির স্বামী আব্দুল গোফফার বাদী হয়ে ধামইরহাট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। বাদীর অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ মে দুপুর ১২টায় উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের আব্দুল গোফফার তার ১০ মাসের গর্ভবতী স্ত্রী ঝর্ণা বেগমকে (২৫) কথিত ডা. আমিনুল ইসলামের ‘ধামইরহাট সিটি হসপিটাল’ নামক ক্লিনিকে ভর্তি করে। সেখানে রোগীর অবস্থার অবনতি হলে ঝর্ণা বেগমের স্বামী আব্দুল গোফফার স্ত্রীর উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু এ সময় জয়পুরহাট থেকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এখানে আসবে বলে ডা. আমিনুল ইসলাম রোগীকে তার ক্লিনিকে আটকে রাখে। এক পর্যায়ে ডাক্তার না আসলে এমবিবিএস পাস না করা কথিত ওই ডা. আমিনুল ইসলাম তার হসপিটালের লোকজন নিয়ে নিজেই প্রসূতির সিজার অপারেশন করে এবং একটি মৃত পুত্র সন্তান আঃ গোফফারের হাতে তুলে দেয়। আঃ গোফফার জানান, ‘ডা. আমিনুল ইসলাম মৃত সন্তান তাকে দেয়ার পর তিনি তাঁর স্ত্রীর কথা জিজ্ঞাসা করলে তাকে ধমক দিয়ে আগে বাচ্চাকে দাফন করতে বলা হয়। গোফ্ফার নিরুপায় হয়ে তাঁর শিশু পুত্রকে দাফন করার প্রস্তুতি নেয়া শেষ না হতেই মোবাইল ফোনে তাঁকে স্ত্রীর মৃত্যু খবর দেয়া হয়। তিনি আরো জানান, ডা. আমিনুল আমার সন্তান ও স্ত্রীকে হত্যা করে ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে কথিত ডা. আমিনুল ইসলাম তার নিজস্ব এ্যাম্বুলেন্সযোগে জয়পুরহাট নেয়ার নাটক করে। জয়পুরহাট না গিয়ে মধ্যরাস্তা থেকে সে আমার শ্বশুর বাড়িতে আমার মৃত স্ত্রীকে ফেলে পালিয়ে যায়।’ কোন মেডিক্যাল কলেজ থেকে উচ্চতর ডিগ্রী না থাকা সত্ত্বে¡ও নিজে একজন দন্ত চিকিৎসক হয়ে অর্থের লোভে ও অসৎ উদ্দেশ্যে সিজার (অপারেশন)-এর মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করে অমার্জনীয় অপরাধ করেছে বলে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে এ ব্যাপারে বক্তব্য নেয়ার জন্য অভিযুক্ত ডা. আমিনুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে ধামইরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ মীর্জা মোঃ আব্দুস সালাম জানান, মামলা রেকর্ড হয়েছে, আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।