ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রোমাঞ্চকর জয়ে উচ্ছ্বসিত কুক

প্রকাশিত: ০৬:০২, ২৭ মে ২০১৫

রোমাঞ্চকর জয়ে উচ্ছ্বসিত কুক

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রথম ইনিংসে পিছিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত লর্ডস টেস্টে রোমাঞ্চকর জয় পেয়ে উচ্ছ্বসিত ইংল্যান্ড অধিনায়ক এ্যালিস্টার কুক। সাফল্যের কৃতিত্ব ইংলিশ সেনাপতি সহযোদ্ধাদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন। বলেছেন, এটি দলীয় ঐক্যের ফল। প্রথম তিন দিনই ভাল অবস্থায় ছিল সফরকারী নিউজিল্যান্ড। কিন্তু শেষ দুই দিনে, আরও স্পষ্ট করে বললে, পঞ্চম দিনে বোলারদের দুরন্ত নৈপুণ্যে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ানো ইংল্যান্ড মাত্র দশ ওভার বাকি থাকতে প্রতিপক্ষকে অলআউট করে তুলে নেয় ১২৪ রানের নাটকীয় জয়! ৩৪৫ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামা নিউজিল্যান্ড সোমবার শেষ দিনের শেষ বিকেলে অলআউট হয় ২২০ রানে। প্রথম ইনিংসে সফরকারীদের সংগ্রহ ছিল ৫২৩। আর ইংল্যান্ড করে যথাক্রমে ৩৮৯ ও ৪৭৮ রান। ৯২ ও ১০১ রানের দৃষ্টিনন্দন দুই ইনিংস খেলার পর বোলিংয়ে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা স্টোকস। প্রথম ইনিংসে ৫শ’র বেশি রান করেও টেস্ট হারের মাত্র চতুর্থ ঘটনা এটি। লর্ডসে এভাবে জয় ধরা দেবে, সেটি হয়ত কুকও ভাবেননি। ইংলিশ অধিনায়ক যেমন বলেন, ‘প্রথম তিন দিন পিছিয়ে ছিলাম। এমনকি পঞ্চম দিন বিকেলেও ব্যাট হাতে আমাদের হতাশ করে তুলেছিল প্রতিপক্ষের দুই টেল-এন্ডার ট্রেন্ট বোল্ট ও ম্যাট হেনরি। মঈন ও স্টোকসকে ধন্যবাদ। ম্যাচ শেষ হওয়ার এক ঘণ্টা আগে ওরা অসাধারণ বোলিং করছে দারুণ জয় ছিনিয়ে এনেছে।’ তবে সর্বোপরি লর্ডস জয়ে দুই ম্যাচের ‘ইনভেস্টেক’ সিরিজে ১-০তে এগিয়ে যাওয়ায় সতীর্থ সবারই প্রশংসা করেছেন তিনি কুক ‘লর্ডসে এই ম্যাচ দেখতে গ্যালারি ভরে গিয়েছিল। এটা স্মরণীয় অভিজ্ঞতা, সবাই জয় চাইছিল। ছেলেরা সামনে থেকে লড়েছে এবং শেষ পর্যন্ত জয়টা আমাদেরই। স্টোকস-মঈনের পাশাপাশি সাফল্যের কৃতিত্ব সবার। এ ধারা অব্যাহত রাখতে চাই।’ লিডসে সিরিজ নির্ধারণী দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট শুক্রবার থেকে। প্রথম ইনিংসে ১৩৪ রানে এগিয়ে থেকে জয়ের স্বপ্ন দেখছিল বিশ্বকাপের রানার্সআপ কিউইরা। কিন্তু চতুর্থ দিন থেকে বদলে যেতে থাকে দৃশ্যপট। কুক (১৬২) ও স্টোকসের (১০১) দুর্দান্ত দুই সেঞ্চুরিতে ভর করে অতিথিদের সামনে ৩৪৫ রানের লক্ষ্যমাত্রা ছুড়ে দেয় ইংলিশরা। পঞ্চম দিনে নাটকীয় জয়ের ‘নায়ক’ স্টোকস, পাশাপাশি দুর্দান্ত বোলিং করেছেন স্টয়ার্ট ব্রডও। দ্বিতীয় ইনিংসে দু’জনই নিয়েছেন পার্থক্য গড়ে দেয়া ৩টি করে উইকেট। দুই ইনিংস মিলিয়ে ১৯৩ রান করার পর মহাগুরুত্বপূর্ণ ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা স্টোকস। ‘লর্ডসে সেঞ্চুরি করা, অলরাউন্ডার নৈপুণ্যে শেষ অবদি দলের জয়ে অবাদান রাখার মতো এমন অনন্দের আর কিছু হয় না। দ্বিতীয় ইনিংসে বোল্ট-সাউদি মিলে তোপ দাগতে শুরু করেছিল। কিন্তু আমরাও পাল্টা আক্রমণে যাই। রুট দারুণ ফর্মে, ব্যাটিং পার্টনার হিসেবে ওকে পাওয়ায় আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। সব মিলিয়ে লর্ডস জয়ে ভূমিকা রাখতে পেরে দারুণ খুশি আমি।’ ম্যাচসেরার পুরস্কার নেয়ার সময় বলেন স্টোকস। স্টোকসের জন্ম নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে। সে অর্থে লর্ডসে এক কিউই তরুণের হাতেই খুন হলো কিউইরা! দু’দলের চার ইনিংস মিলিয়ে উইকেট পড়েছে ৪০, আবার মোট রান উঠেছে ১৬১০! অলআউট ম্যাচে টেস্ট ক্রিকেট এত রান দেখল দীর্ঘদিন পর। ৪০ উইকেট পতন হওয়া ম্যাচে এর চেয়ে বেশি রান হয়েছিল সেই ১৯৩০ সালে। ৫শ’র ওপর তো দূরের কথা, নিকট অতীতে প্রথম ইনিংসে ৪শ’র বেশি রান করে নিউজিল্যান্ড সর্বশেষ হেরেছিল ২০০৫ সালে, (ক্রাইস্টচার্চে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে)। মার্টিন গাপটিল, টম লাথাম ও অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম দ্বিতীয় ইনিংসে শূন্য রানে আউট হন। দ্বিতীয় ইনিংসে তিন টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানের শূন্যতে সাজঘরে ফেরেন- নিউজিল্যান্ডের হয়ে এমন ঘটনা দশম। সর্বশেষ যা ঘটেছিল ২০১২ সালে, দক্ষিণ আফ্রিকা বিপক্ষে। সব মিলিয়ে ভাল অবস্থায় থাকার পরও শেষ পর্যন্ত হেরে যাওয়ায় অসন্তোষ ঝড়েছে ম্যাককুলামের কণ্ঠে। কিউই সেনাপতি বলেন, ‘ছেলেরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ম্যাচটি আমারা হেরে গেছি। এটা আমাদের জন্য সতর্ক সঙ্কেত। এখানকার শিক্ষাটা দ্বিতীয় ম্যাচে কাজে লাগাতে হবে।’
×