ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

স্মৃতিহীন কমপ্লেক্সে ঢাকা নজরুল

প্রকাশিত: ০৪:০০, ২৫ মে ২০১৫

স্মৃতিহীন কমপ্লেক্সে ঢাকা নজরুল

জাতীয় কবি নজরুলের জন্মশতবার্ষিকী বেশ আড়ম্বরের সঙ্গে উদযাপন করা হয়েছিল সরকারীভাবে। কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে দেশজুড়ে নানা আয়োজন করা হয়েছিল। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন সরকার নজরুলের সমাধিকে কেন্দ্র করে একটি স্মৃতিসৌধ গড়বে। নজরুল অনুরক্তসহ দেশবাসী সন্তুষ্ট হয়েছিল তাতে। এজন্য নকশা আহ্বানও করা হয়। কিন্তু সেই প্রকল্প আলোর মুখ দেখেনি। সৌধও হয়নি। পরবর্তীকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সৌধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। তৎকালীন উপাচার্য একে আজাদ চৌধুরী নির্মাণ তহবিল গঠনে শিল্পপতি, ব্যবসায়ীদের সহায়তা চান। নিজ বাসভবনে তাদের সম্মানার্থে চা চক্রের আয়োজনও করেন। সবাই বেশ খোশগল্প করলেও সৌধের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদানে কেউ এগিয়ে আসেননি। সব প্রচেষ্টা বিফলে যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে কবির সমাধি। সুপারি গাছে ঘেরা ছোট্ট প্রাঙ্গণটি চিরতরের জন্য যেন আপন করে নিয়েছেন। স্থানটি বাংলা সাহিত্যের তীর্থস্থান বলে মনে করে জাতীয় কবিতা পরিষদ। প্রতিবছর কবিতা উৎসবের প্রারম্ভে কবির সমাধিস্থল হতে শোভাযাত্রা বের করে তারা। সমাধি সংলগ্ন স্থানে ছোট আকারে একটা কমপ্লেক্স নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট ১৯৯৮ সালের ১৪ আগস্ট। ২০০৯ সালে কমপ্লেক্স উদ্বোধন করা হলেও অদ্যাবধি তা জনগণের জন্য খোলা হয়নি। কমপ্লেক্সে নজরুলের স্মৃতি স্মারক বিষয়ক তথ্যকেন্দ্র চালুর কথা থাকলেও তা হয়নি। কমপ্লেক্সে স্মৃতিহীন নজরুল বড় বেশি বেদনাদায়ক যেন। জাতীয় জাদুঘরে প্রতিষ্ঠিত ‘নজরুল কর্ণার’-এর অবস্থাও তাই। যদিও এখানে রয়েছে কবির ব্যবহৃত অনেক জিনিস। বাংলা একাডেমির বর্ধমান হাউসে রয়েছে নজরুলের অনেক স্মৃতি। এখানে বিভিন্ন সময়ে থেকেছেনও সেই বিশের দশক হতে। কবির সেই স্মৃতি ধরে রাখার জন্য সেখানে প্রতিষ্ঠিত হয় নজরুল স্মৃতি কক্ষ। অথচ সেটিও থাকে তালাবদ্ধ। নজরুল মঞ্চটিও অব্যবস্থাপনা আর অযতেœর শিকার বলে সমালোচনা হয়। ঢাকায় নজরুলের বহু স্মৃতি থাকলেও সে সব সংরক্ষণ হয়নি। নজরুল ইনস্টিটিউটও তাদের সীমাবদ্ধতার জন্য নজরুলকে জনগণের সামনে যথাযথভাবে তুলে ধরতে পারছে না। অসুস্থ হবার আগে নজরুল ঢাকায় এসেছেন অন্তত ১২ বার। ঢাকার বুকে ঘুমিয়ে থাকা নজরুল নামেই জাতীয় কবি। বাস্তবে কবিকে সেই মর্যাদাভূষিত করা হয় না। জাতীয় কবি নজরুলের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ১৯৭৭ সালে ঢাকাসহ দেশের নানা স্থানে তথ্য অধিদফতর প্রকাশিত একটি পোস্টার দেয়ালে দেয়ালে ঠাঁই পেয়েছিল। ডবল ডিমাই আকারের পোস্টারের অর্ধেকের বেশিজুড়ে সামরিক জান্তা শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমানের পোর্ট্রেট। আর তার কোমরের নিচে হাবিলদার নজরুলের ছোট আকারের পোর্ট্রেট। পদ-পদবীর ভারে জান্তা শাসকরা তখন দিশেহারা যেন। তাদের কাছে নজরুল তখন সৈনিক কবি। সে কারণে জনগণকে ধারণা দেয়ার চেষ্টা হয় যে, সেনারাও কবিতা গান বানাতে পারে। তারা শুধুই শাসক নয়। তবে সে সৈনিক আবার হাবিলদার, সমস্যাটা সেখানেই। কবি হিসেবে গুরুত্বটা যেমনই হোক, তিনি যে সেনাদের অংশ সেটা বার বার বলা হতো প্রচার মাধ্যমে। এর ক’দিন পরই নজরুলকে আরেক ছাঁচে ফেলা হয় যে, তিনি ইসলামী জাগরণের কবি। তাই কবির ইসলামী গান ও কবিতার ব্যাপক প্রচার চলে। জাতীয় কবি হয়ে পড়েন খ-িত। সামরিক জান্তা শাসকদের কাছে হাবিলদারের অবস্থান হতে উপরে উঠতে পারেননি নজরুল। অপর সামরিক জান্তা শাসক জেনারেল এরশাদও হাবিলদারকে অনুরূপ মর্যাদাই দিয়েছিলেন। ১৯৮৩ সালে এরশাদের পত্রিকা দৈনিক জনতায় ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে বিশেষ সংখ্যার প্রথম পৃষ্ঠায় নজরুলের কবিতা এবং শেষ পৃষ্ঠায় এরশাদ বিরচিত কবিতা ছাপানো হয়। ক্ষিপ্ত হন জেনারেল। কেন জেনারেলের কবিতা শেষ পাতায় ও হাবিলদারের কবিতা প্রথম পাতায় ছাপা হলো। কৈফিয়ত চাইলেন। সাহিত্য সম্পাদক কবি শাহনূর খান তখন ছুটিতে, পাতার দায়িত্বে ছিলেন চিত্রকর ও লেখক রফি হক। তিনি জানালেন, নজরুল বড় কবি তাই প্রথম পাতায় দিয়েছেন। রফি হক সেই স্মৃতিচারণ করে জানালেন, এরশাদের কর্মকর্তাটি তাকে প্রায় নাস্তানাবুদ করে। পরে সাহিত্য সম্পাদককে চাকরিচ্যুত করা হয়। নজরুলকে তাঁর জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর পরও যে যার মতো করে নিজস্ব স্বার্থে ব্যবহার করে আসছেন আজও। কারও কাছে তিনি ইসলামের কবি, কারও কাছে সাম্যের কবি, কারও কাছে সৈনিক কবি, কারও কাছে তিনি কাফের, আবার কারও কাছে যবন, কারও চোখে সম্প্র্রীতির, অসাম্প্রদায়িক। আবার দেখা গেছে, মার্কসবাদী অনেকে তাঁকে তাদের কবি বলে মেনে নিতে পারেনি যেমন, তেমনি মৌলবাদী মুসলমানরাও তাঁকে প্যান ইসলামপন্থী হিসেবে চিহ্নিত করে তাঁকে তাদের কবি বলে ঘোষণা করতে পিছপা হননি। নজরুল নাস্তিকও ছিলেন নাÑ ধর্মান্ধ মৌলবাদীও নন। এই ষোলো কোটি মানুষের দেশে কয়জনই বা নাস্তিক, কয়জনই বা মৌলবাদী। কিন্তু বর্তমানকালে নাস্তিক-আস্তিক নামক এক দ্বন্দ্বকে সামনে এনে মানুষকে কুপিয়ে হত্যা করছে। ধর্মের নামে মানুষ হননের ঘোর বিরোধী ছিলেন নজরুল। বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর চেতনাদর্শের ধারক তিনি। নজরুল তাঁর অবস্থানকে স্পষ্ট করেছেন ‘আমার কৈফিয়ত’ কবিতায়। “আনকোরা যত নন্ ভায়োলেন্ট নন-কো’র দলও নয় খুশি,/ ‘ভায়োলেন্সের ভায়োলিন’ নাকি আমি বিপ্লবী মন তুষি/‘এটা অহিংস বিপ্লবীভাবে / নয় চরকার গান কেন গাবে?’/গোঁড়া-রাম ভাবে নাস্তিক আমি, পাতি-রাম ভাবে কনফুসি/স্বরাজীরা ভাবে নারাজি, নারাজি ভাবে তাহাদের অঙ্কুশি।/” নজরুল প্রকৃত অর্থেই ছিলেন বাঙালী কবি, বাংলাদেশের কবি ও বাংলাভাষার কবি। তাই হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সকলের প্রতি ছিল তাঁর অকৃত্রিম ভালোবাসা। তাই ‘একেশ্বরবাদী’ হয়েও তিনি শ্যামাসঙ্গীত রচনা করতে কখনও কুণ্ঠাবোধ করেননি। মুসলমান-হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান অধ্যুষিত বাংলাদেশে তাই তিনি ‘জাতীয় কবি’র মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হয়েছেন। ১৯২৬ সালে সাংবাদিক-সাহিত্যিক আবুল কালাম শামসুদ্দিন নজরুলকে ‘জাতীয় কবি’ আখ্যায়িত করে মাসিক সওগাত পত্রিকায় লিখেছিলেন, ‘নজরুল বাঙ্গালার জাতীয় কবি। জাতীয় বেদনার কথাই তাঁহার কাব্যের ভিতর দিয়া প্রকাশ পাইতেছে। হিন্দু ও মুসলমান লইয়া বাঙ্গালা জাতি। সুতরাং এ জাতির বেদনার কথা প্রকাশ করিতে হইলে রচনায় ইসলামী এবং হিন্দুয়ানী উভয় জাতীয় প্রকাশভঙ্গির ছাপই দিতে হবে।’ নজরুলকে সৈনিকের ব্র্যান্ড বানিয়ে জেনারেল জিয়াউর রহমান পোস্টার শুধু নয়, র‌্যালিও করেছেন। কবির মৃত্যুর পর ঘোষণাও দিয়েছিলেন, কবির স্মৃতি রক্ষার্থে এবং কবির জীবন, সাহিত্য ও সঙ্গীত সম্পর্কে গবেষণা পরিচালনা, কবির রচনাবলী সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রশাসন ও প্রচারের জন্য ‘নজরুল ভবন’ করবেন। কিন্তু সেই ভবনের দেখা মেলেনি। বরং তার সহধর্মিণীর শাসনামলে ‘হাওয়া ভবন’ দেখা গেছে। যেখানে নজরুলের নামগন্ধও প্রবেশ করেনি। নজরুল কেবল কবি-সাহিত্যিক, সঙ্গীতজ্ঞ, অভিনেতা সৈনিক ছিলেন তা নয়, তিনি রাজনীতিও করেছেন। ঢাকার আসনে নির্বাচনে অংশ নিয়ে হেরেছেনও। রাজনৈতিক আন্দোলনের ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে তাঁর সৃষ্টি যথেষ্ট ভূমিকা পালন করলেও শেষতক তাঁকে কেউ রাজনীতিক হিসেবে মূল্যায়ন করেনি। বরং জান্তা শাসকরা তাঁকে হাবিলদার কবি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন। নিজেদের ক্ষমতাকে যুক্তিযুক্ত করতে নজরুলকে প্রয়োজনমতো ব্যবহার করেছেন। নির্বাক ও চলৎশক্তিহীন অবস্থায়ও কবিকে পোহাতে হয়েছে দুর্ভোগ এই বাংলায়। জান্তারা নিজেদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে কবির ইমেজকে নানাভাবে ব্যবহার করেছেন। পিজি হাসপাতালের ১১৭ নম্বর কেবিনেই কাটে জীবনের শেষ দিনগুলো। ১৯৭৫ সালের ২২ জুলাই হতে এক বছর এক মাস এক সপ্তাহ কাটে চিকিৎসায়। এমন অবস্থায়ও কবিকে নিয়ে চলে টানা হেঁচড়া। কবিকে একুশে পদক প্রদানের জন্য ১৯৭৬ সালে হাসপাতাল হতে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বঙ্গভবনে। সেখানে জান্তাদের নিয়োগ করা রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সায়েম কবিকে পদক পরিয়ে দেন। অথচ কবি তখন ভালভাবে চেয়ারেও বসতে পারছিলেন না। অসুস্থ, বাকশক্তিহীন ও স্মৃতিশক্তিলুপ্ত কবির এসব ব্যাপারে কোন অনুভূতি ছিল কি না, তা বলা কঠিন। ১৯৭৬ এর ২৫ মে কবিকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ‘আর্মি ক্রেস্ট’ উপহার দেয়া হয়। কবি ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে সব দেখছিলেন যেন। সমকালে যে নজরুল ছিলেন কাফের হিসেবে আখ্যায়িত, পাকিস্তানে তাঁকে খাঁটি মুসলমান করে তোলার জবরদস্ত প্রয়াসের ইতিহাস তো রয়েছেই। কবিতার শব্দও মুসলমানীকরণ করা হয়। বর্তমানেও জাতীয় কবির অভিধায় তাঁকে সীমাবদ্ধ করে ফেলার ঘটনা, তাঁকে অনুষ্ঠানসর্বস্ব করে তোলার হিড়িকও কম নয়। এসব কর্মকা- কবির গ্রহণযোগ্যতা বা কালের বিচারে তাঁর মূল্যায়নে শুধুই প্রতিবন্ধকতাই তৈরি করে। অথচ জীবন ও শিল্পÑউভয় ক্ষেত্রেই প্রতিবন্ধকতা ভাঙতেই চেয়েছিলেন কবি। কবির ভাল চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু ভারত সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়ে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। ১৯৭২-এর ২৪ মে ঢাকায় পৌঁছার পরদিন কবির জন্মদিনে কবির বাসস্থানজুড়ে লোকে লোকারণ্য অবস্থা। এর পর হতে ভিড় বাড়তে থাকে। অসুস্থ মানুষটি এতে কতটা স্বস্তি পেয়েছিলেন জানা যাবে না কখনও। সাড়ম্বরে উদযাপন হয় কবির জন্মদিন। ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধুর আগ্রহে আয়োজিত বাংলাসাহিত্য সম্মেলনে প্রধান অতিথি করেছিল বাংলা একাডেমি। ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কবিকে সম্মানসূচক ডি-লিট প্রদান করে। এ জন্য সমাবর্তনের আয়োজন করা হয়। কবির কাছে এসবের তখন কানাকড়িও মূল্য ছিল তা নয়। নজরুলের মৃত্যুর পর তাঁর দাফন নিয়ে চলে খেলা। ভারত সরকার তাঁর মরদেহ দাবি করতে পারে, এমন প্রচারণায় জান্তা শাসক দ্রুত তাঁর দাফন সম্পন্ন করে। তাঁর পুত্র ও স্বজনরা ঢাকায় এসে পিতার লাশ দেখতে না পেয়ে কেঁদেছিলেন। কবির গানকে পুঁজি করে মসজিদের পাশে কবর দেয়া হয়। সেদিন বেতারে সারাদিন বেজেছিল, ‘মসজিদেরই পাশে আমায় কবর দিও ভাই।’ বাঙালীর চেতনা জাগিয়ে তোলার জন্য বার বার আঘাত করেছেন তিনি। আত্মবিশ্বাস, আত্মপ্রেরণা, আত্মমর্যাদায় বাঙালী জাতিকে দাঁড় করাতে চেয়েছেন। তাই বাঙালীর সম্পদ, সম্মান, শৌর্য এবং তেজোদীপ্ত গৌরবের ইতিহাসকে বার বার সামনে এনেছেন। উদ্দীপনার মন্ত্র শুনিয়ে একটি জাতির আত্মজাগরণকে প্রাণিত করতে চেয়েছেন। চেয়েছেন শানিত করতে। নজরুলের কলমে উঠে এসেছিল বাঙালী জাতিসত্তার বিকাশের ধারা। তাই লিখেছিলেন, বাংলা বাঙালীর হোক। বাংলার জয় চেয়েছিলেন। কারণ বাঙালীর অন্তর্লোকের সন্ধান তিনি পেয়েছিলেন। তাই অবলোকন করতে পেরেছেন বাঙালীর ভবিষ্যত। তাঁর বাঙালীর বাঙলা প্রবন্ধটি যেন সেই ভবিষ্যতের ইঙ্গিত বহন করেছে। কবিতায়ও উঠে এসেছে, ‘জয় বাঙলার পূর্ণচন্দ্র, জয় জয় আদি-অন্তরীণ / জয় যুগে যুগে আসা সেনাপতি, জয়প্রাণ আদি অন্তহীন।’ নজরুলের সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। নজরুল তাঁর প্রদীপ্ত উচ্চারণে বাঙালীর অন্তর্গত অন্ধকার ও বিভ্রমকে দূরীভূত করার যে প্রচেষ্টা চালিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু সেই আলোকধারায় স্নাত হয়ে প্রতিষ্ঠা করেন বাঙালীর বাংলা। নজরুল জীবন ও কর্ম বঙ্গবন্ধুকে ভীষণভাবে আলোড়িত করেছিল। নজরুলের চেতনায় উদ্দীপ্ত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর নজরুলের স্বপ্ন মিলে গিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠেছিলেন যেন নজরুলের সার্থক উত্তরসূরি। জয়বাংলার ধ্বনি তাই প্রতিধ্বনিত হয়েছিল বাংলাজুড়ে। নজরুল আছেন, থাকবেনও। নজরুলকে অনেকেই নিজ প্রয়োজনে আরও ব্যবহার করুক আর নাই করুক কিংবা স্মৃতিসৌধ হোক আর না হোক, বিদ্রোহী রণক্লান্ত শান্তিতে থাক ঘুমিয়ে।
×