ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আইএস অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক বিমান হামলা

প্রকাশিত: ০৪:৩৮, ২৪ মে ২০১৫

আইএস অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক বিমান হামলা

যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোট ইসলামিক স্টেটের (আইএস) আরও ভূখ- সম্প্রসারণ এবং একটি প্রধান সামরিক ঘাঁটির দখল প্রতিরোধে মরিয়া প্রচেষ্টায় শুক্রবার রাতে ইরাক ও সিরিয়ায় জিহাদীদের অবস্থানের ওপর বোমাবর্ষণ করেছে। বাগদাদ কর্তৃপক্ষ আইএস নিয়ন্ত্রণাধীন রামাদি থেকে পলায়নপর উদ্বাস্তুদের ইরাকী রাজধানীতে আগমন ঠেকাতে একটি প্রধান সেতু বন্ধ করে দিয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদ পালমিরা নগরীতে আটকেপড়া হাজার হাজার নাগরিকের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। খবর টেলিগ্রাফ, বিবিসি ও এএফপির। জোট আইএসের সাম্প্রতিক ভূখ- দখল আরও সম্প্রসারণ রোধ করতে শুক্রবার রাতে সিরিয়া ও ইরাকজুড়ে আইএস জঙ্গী গোষ্ঠীর ওপর ২০ দফা বিমান হামলা চালায়। আইএসের দখল করা ইরাকী নগরী রামাদি থেকে আসা সড়কে অবস্থিত হাব্বানিয়া ঘাঁটির প্রতিরক্ষায় নিয়োজিত যোদ্ধারা বলেছে, তাদের গোলাবারুদ দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। এই ঘাঁটি শিয়া মিলিশিয়া ও নিয়মিত সেনাবাহিনীর একটি মিলনস্থল। প্রধানত সুন্নি অধ্যুষিত আনবার প্রদেশের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ রাজধানী নগরী রামাদি পুনর্দখলের জন্য আক্রমণ চালাতে সেখানে তাদের জড়ো হওয়ার কথা। এর বদলে আইএস পূর্বদিকে অগ্রসর হওয়ার আগে নগরীতে তাদের অবস্থান সংহত করে। তারা হাব্বানিয়া ঘাঁটি অভিমুখী সড়কে হুসাইবা শহর দখল করেছে। ওয়াশিংটনে কর্মকর্তারা বলেছেন, ইরাকে ১৫টি বিমান হামলার মধ্যে ৫টি রামাদির কাছাকাছি অবস্থানে পরিচালিত হয়। হামলায় ‘আইএসের সাঁজোয়া যান, ট্যাক্সি, সৈন্যবাহী যান এবং দেশী বিস্ফোরক ধ্বংস হয়।’ একটি বোমা যোদ্ধাদের একটি ইউনিটে আঘাত হানে। রামাদিতে আইএসের চাঞ্চল্যকর বিজয় এবং প্রতিবেশী সিরিয়ার পালমিরা দখল ইরাক ও সিরিয়া দুই দেশেই এবং ওয়াশিংটনের রাজনৈতিক ও সামরিক প্রশাসনে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। পর্যবেক্ষকরা হিসাব করে দেখেছেন, আইএস বর্তমানে সিরিয়ার মোট ভূখ-ের অর্ধেক নিয়ন্ত্রণ করছে। অবশ্য এর বেশিরভাগ মরুভূমি এলাকা। ঐতিহাসিক পুরাকীর্তিসহ পালমিরা দখলের পর আইএস পশ্চিমে হোমস অভিমুখী সরকারী সৈন্যদের তাড়া করে। বৃহস্পতি ও শুক্রবার তাদের হাতে ২৮০ জন সরকারপন্থী যোদ্ধাও সৈন্য নিহত হয়। হুঁশিয়ারি হিসাবে রাস্তার ওপর ১৫০ জনের লাশ ফেলে রাখা হয়। রামাদি থেকে পলায়নপর বাস্তুচ্যুতরা যাতে বাগদাদে ঢুকতে না পারে সেজন্য কর্তৃপক্ষ রাজধানীর একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু বন্ধ করে দিয়েছে। এ সপ্তাহের প্রথমদিকে আইএস জঙ্গীরা রামাদি দখল করে নিলে ৪০ সহস্রাধিক বাসিন্দা নগরী ত্যাগ করে। বজেবিজ নামের সেতুটিকে আনবার প্রদেশ থেকে বাগদাদে প্রবেশের নিরাপদ পারাপার মাধ্যম বলে ধরা হয়। জাতিসংঘ খাদ্য কর্মসূচী বলেছে, তারা প্রদেশে খাদ্য সাহায্য পাঠাচ্ছে। বজেবিজ সেতুটি বন্ধের কারণ পরিষ্কারভাবে জানা না গেলেও জঙ্গীরা উদ্বাস্তুদের সঙ্গে মিশে গিয়ে রাজধানীতে অনুপ্রবেশ করতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। ১৫ সদস্যবিশিষ্ট জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ পালমিরায় আটকেপড়া বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদে সরে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়ার আহ্বান এবং বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রাচীন শহরটি রক্ষার ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। নিরাপত্তা পরিষদ পালমিরার বিশেষ করে নারী ও শিশুদের ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জানায়, আইএস যোদ্ধারা সেখানে ধর্ষণ, যৌন হয়রানি, জোরপূর্বক বিয়ে ও শিশুদের যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করাসহ অপহরণ, প্রতারণা, নারী ও শিশু নির্যাতনের রাজত্ব কায়েম করেছে। উল্লেখ্য, পালমিরা সিরিয়ার ‘মরুরতœ’ হিসেবে পরিচিত।
×