ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সালাহউদ্দিন ফোনে কথা বললেন খালেদার সঙ্গে

প্রকাশিত: ০৫:২২, ২৩ মে ২০১৫

সালাহউদ্দিন  ফোনে কথা বললেন  খালেদার সঙ্গে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদকে কবে নাগাদ ভারতের আদালতে হাজির করা হবে তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বিষয়টি হাসপাতালের চিকিৎসকদের ওপর নির্ভর করছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সালাহউদ্দিনের সুস্থতার বিষয়টিকে অধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন। সেক্ষেত্রে তাকে আদালতে হাজির করা সময়সাপেক্ষ বলে শিলং পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সালাহউদ্দিনের টেলিফোনে কথা হয়েছে। তবে কী কথা হয়েছে সে সম্পর্কে দল বা সালাহউদ্দিনের পরিবারের তরফ থেকে গণমাধ্যমকে কিছুই জানানো হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভারতের মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে গ্রেফতারকৃত বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদকে আদালতে হাজির করা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কবে নাগাদ তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে তাও সুনিশ্চিত নয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সালাহউদ্দিনের সুস্থতার দিকটিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। সালাহউদ্দিনকে পুরোপুরি সুস্থ করে না তোলা পর্যন্ত তার চিকিৎসা চলবে। সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে ভারতের আরও কোন উন্নত হাসপাতালে তার চিকিৎসা হতে পারে। যদিও বিষয়টি চিকিৎসকদের মতামতের ওপর নির্ভর করছে। ততদিন পুলিশ হেফাজতেই হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলবে। পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার পর সালাহউদ্দিনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এরপরই পুলিশ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও জবানবন্দী রেকর্ডের পর তাকে আদালতে সোপর্দ করবে। শিলং পুলিশের তরফ থেকেও বরাবর এমনটাই দাবি করা হচ্ছে। পুলিশ বলছে, সালাহউদ্দিনকে আদালতে হাজির করা না করার বিষয়টি এখন আর তাদের হাতে নেই। বিষয়টি নির্ভর করছে সালাহউদ্দিনের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকদের ওপর। চিকিৎসকরা ছাড়পত্র দিলেই অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের জন্য দায়েরকৃত মামলার আসামি হিসেবে সালাহউদ্দিনকে মেঘালয়ের আদালতে হাজির করা হবে। শিলংয়ের ইস্ট খাসি হিলস থানাতে সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের দায়ে মামলা দায়ের করেছে শিলং পুলিশ। পুলিশ সুপার এম খারক্রাং গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সালাহউদ্দিনকে আদালতে সোপর্দ করার বিষয়টি সময়সাপেক্ষ। এতে তাদের হাতে নেই। সালাহউদ্দিনের চিকিৎসকদের ওপর নির্ভর করছে পুরো প্রক্রিয়াটি। চিকিৎসকরা ছাড়পত্র দিলেই সালাহউদ্দিনকে আদালতে সোপর্দ করা সম্ভব, অন্যথায় কোন সম্ভাবনা নেই। ভারতের রাজধানীর দিল্লীতে দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই বলছে, যাদের মাধ্যমে সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে ঢাকার দফতর থেকে রেডএলার্ট জারি করা হয়েছে, তারাও জানিয়েছেন কবে নাগাদ সালাহউদ্দিন দেশে ফিরতে পারবেন তা বলা অসম্ভব। প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনায় ভারতে আটক নূর হোসেনকে আজও আইনী প্রক্রিয়ার কারণে আনা সম্ভব হয়নি। সালাহউদ্দিনের ক্ষেত্রেও তেমনটি ঘটতে পারে। ভারতের আইনে তিনি অপরাধী। বিষয়টি আদালতের ওপর নির্ভর করছে। এদিকে [জঞঋ নড়ড়শসধৎশ ংঃধৎঃ: }ংযধৎবথঃড়ড়ষং[জঞঋ নড়ড়শসধৎশ বহফ: }ংযধৎবথঃড়ড়ষংশিলং থেকে সালাহউদ্দিন ঢাকায় বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৃহস্পতিবার রাতে কথা বলেছেন। সালাহউদ্দিনের স্ত্রীর মোবাইলে কথা হয়। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে সালাহউদ্দিনের সঙ্গে খালেদা জিয়ার পাঁচ-ছয় মিনিট কথা হয়। বিএনপির সহদফতর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনির বরাত বলা হয়েছে, খালেদা জিয়া সালাহউদ্দিনের সার্বিক খোঁজখবর নেন। তার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে জানতে চান খালেদা জিয়া। তবে শিলংয়ে তার হদিস মেলার বিষয়ে তেমন কিছুই জানা যায়নি। গত ৫ মার্চ থেকে বিএনপির ডাকা দেশব্যাপী লাগাতার অবরোধ চলার মধ্যেই গত ১১ মার্চ সালাহউদ্দিনের স্ত্রী বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমেদ দাবি করেন, তাঁর স্বামীকে গত ১০ মার্চ রাতে ডিবি পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাকে গুম করে ফেলা হয়েছে বলে পরিবার ও দলের তরফ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছিল। গত ১২ মে হাসিনা আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, ভারতের মেঘালয়ের একটি হাসপাতালে তার স্বামী সুস্থ ও স্বাভাবিক রয়েছেন। এরপরই হদিস মেলে সালাহউদ্দিনের। তাকে গ্রেফতার করতে বাংলাদেশ পুলিশের ইন্টারপোলের ঢাকা শাখা থেকে রেডএলার্ট জারি করা হয়। এদিকে মেঘালয়ের শিলং পুলিশ বলছে, গত ১১ মে স্থানীয়দের মাধ্যমে শিলং পলোগ্রাউন্ড এলাকায় উদভ্রান্তের মতো একজনকে ঘুরে বেড়ানোর খবর পায়। পুলিশ ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। কথাবার্তায় তিনি ভারতীয় নাগরিক নন বলে নিশ্চিত হয়। এরপরই তার কাছে ভারতে প্রবেশের বৈধ কাগজপত্র চাওয়া হয়। তা দিতে ব্যর্থ হলে তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে অবৈধভাবে ভারত প্রবেশের অপরাধে ওইদিনই একটি মামলা দায়ের করে। ওই ব্যক্তির বাহ্যিক আচরণ দেখে তাকে মানসিক রোগী মনে হচ্ছিল। এজন্য তাকে প্রথমে মেঘালয় ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথ এ্যান্ড নিউরোলজিক্যাল সাইন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই পরিচয় প্রকাশ পায় সালাহউদ্দিনের। চিকিৎসকরা সালাহউদ্দিনকে সুস্থ বলে মতামত দেন। এরপর তাঁকে ভর্তি করা হয় শিলং সিভিল হাসপাতালে। সেখানেই তিনি আসামিদের জন্য নির্ধারিত ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
×