ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে শেষ দিনের আয়োজন

রাজধানীতে আওয়ামী লীগের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা

প্রকাশিত: ০৫:২১, ২৩ মে ২০১৫

রাজধানীতে আওয়ামী লীগের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য বিজয় শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হলো রাজধানীতে। আওয়ামী লীগের বর্ণাঢ্য এ বিজয় শোভাযাত্রায় মানুষের ঢল নামে। ঢাকা মহানগরের থানা, ওয়ার্ড, পাড়া-মহল্লা থেকে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা এতে অংশ নেন। শুক্রবার বিকেলে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ এ কর্মসূচীর আয়োজন করে। গত ১৭ মে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচীর শেষ দিনে শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে বিজয় শোভাযাত্রা বের করা হয়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সামনে থেকে ধানম-ি ৩২ নম্বর বঙ্গবন্ধু ভবন পর্যন্ত দীর্ঘ সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়ক জুড়েই মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দলটির বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় নেমেছিল জনতার ঢল। এই পুরো পথই পরিণত হয়েছিল জনতরঙ্গে। সুশৃঙ্খল-দৃষ্টিনন্দন সুবিশাল এই শোভাযাত্রায় জাতীয় নেতাদের কণ্ঠে ছিল একই দাবিÑ ‘পেট্রোল বোমাবাজ, জামায়াত-শিবির ও জঙ্গীগোষ্ঠীর’ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন করা দেশের মাটিতে স্থান নেই। শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগরীর ১৫টি নির্বাচনী এলাকা, ৪১টি থানা এবং শতাধিক ওয়ার্ড থেকে অজস্র মিছিলের স্রোত এসে মিশেছিল ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সামনে। পুরো রাজধানীই পরিণত হয়েছিল মিছিলের নগরীতে। সীমান্ত বিজয়, ব্রিটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নাতনি টিউলিপ সিদ্দিক এবং তিন সিটি করপোরশেন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বিজয়ী হওয়ায় আনন্দে উচ্ছ্বসিত-উদ্ভাসিত লাখো মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে শোভাযাত্রায় উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। আয়োজক ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ হলেও সাধারণ মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিল সুবিশাল এই শোভাযাত্রা। তীব্র জনস্রোতে শোভাযাত্রাটি এমনই রূপ নেয় যে, মিছিলের অগ্রভাগ সাড়ে তিন কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে যখন ৩২ নম্বর ধানম-িতে গিয়ে শেষ হয়, তখন পশ্চাৎভাগ মৎস্যভবন মোড় ছাড়াতেই পারেনি। বর্ণাঢ্য এ বিজয় শোভাযাত্রায় রং-বেরঙের বেলুন, ঘোড়ার গাড়ি, ব্যানার, ফেস্টুন, ট্রাক, দলীয় ও জাতীয় পতাকা, বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিশাল বিশাল ছবিসহ বিভিন্ন সাজে সজ্জিত হয়ে ব্যান্ডের তালে তালে হাজার হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ছাড়াও নারী-পুরুষ নির্বিশেষে নগরীর আপামর জনতা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। শোভাযাত্রাপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানেই গণতন্ত্র, শেখ হাসিনা মানেই বাংলাদেশের অর্জন। তিনি বলেন, ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি হয়েছে, যা জাতির পিতার (বঙ্গবন্ধু) হাতে রচিত, কন্যা শেখ হাসিনার হাতে সম্পাদিত। এটা বিরল অর্জন। বাঙালী জাতির জন্য গৌরবের। তিনি বলেন, মুজিব-ইন্দিরা চুক্তিকে বিএনপি গোলামী চুক্তি বলে আখ্যায়িত করেছিল। অথচ ভারতের লোকসভায় চুক্তিটি পাস হওয়ায় খালেদা জিয়া ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশের মানুষকে অভিনন্দন জানায়নি। যদিও এতে কিছু যায় আসে না। পার্বত্য শান্তি চুক্তি নিয়েও খালেদা জিয়া বিরুদ্ধাচরণ করে বলেছিলেন, এই চুক্তি বাস্তবায়ন হলে চট্টগ্রাম ভারত হয়ে যাবে। ফেনীর আসন থেকে খালেদা জিয়া নির্বাচন করে তার মিথ্যাচার প্রমাণ করেছেন। মতিয়া চৌধুরী বলেন, ৫ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় খালেদা জিয়া ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন। ২০০৭ সালের জরুরী অবস্থা জারির জন্য খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক জিয়াকে দায়ী করে বলেন, তারেক রহমান হাওয়া ভবন খুলে হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি করেছেন। যার খেসারত দিতে হয়েছে গোটা জাতিকে। ঢাকা মহনগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, শেখ হাসিনা মানেই বাংলাদেশ, শেখ হাসিনা মানেই গণতন্ত্র। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই দেশ থেকে সন্ত্রাস, জঙ্গী নির্মূল করতে হবে। শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে জাতিকে ঐকবদ্ধ হতে হবে। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, ডা. দীপু মনি এমপি, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহা উদ্দিন নাছিম এমপি, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফরাফুনন্নেছা মোশারফ, যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল প্রমুখ।
×