ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

মাশরাফি-বিজয়ের দৃষ্টিতে ভারত কঠিন প্রতিপক্ষ

প্রকাশিত: ০৩:৫০, ২২ মে ২০১৫

মাশরাফি-বিজয়ের দৃষ্টিতে ভারত কঠিন প্রতিপক্ষ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অনেক জল্পনা-কল্পনা শেষে বাংলাদেশের বিপক্ষে এক টেস্ট ও তিন ওয়ানডে খেলতে পুরো শক্তির দলই পাঠাচ্ছে ভারতের ক্রিকেট বোর্ড। এ দল দেখে খুশি হয়েছেন বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। তবে ভারত সিরিজ চ্যালেঞ্জের হবে বলেই মনে করছেন মাশরাফি। সেই মাশরাফির সঙ্গে একমত পোষণ করেন ওপেনার এনামুল হক বিজয়ও। মাশরাফি বলেছেন, ‘সবাই আশা করছিল তাদের সেরা দলটা আসুক। আমরা জানতাম, ভারতের যে দলই আসুক একটা চ্যালেঞ্জ থাকবে। যেহেতু পুরো দলটা আসছে সেহেতু চ্যালেঞ্জটা অনেক।’ বিজয়ও একইরকম মনে করছেন, ‘আমরা জেনেছি ভারত সেরা দল নিয়ে বাংলাদেশ সফরে আসবে। তবে এটা নিয়ে আমরা মোটেও চিন্তিত নই। নিজেদের কাজ নিয়েই আমরা এখন ফোকাস করছি। তবে সিরিজটা খুব চ্যালেঞ্জের আমাদের জন্য।’ বুধবার ভারতের দল যখন ঘোষণা করা হলো, ততক্ষণে বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের ফিটনেস ক্যাম্পের প্রথমদিন শেষ হয়েছে। তাই ভারত দলটি নিয়ে ক্রিকেটারদের মধ্যে তেমন আলোচনা হয়নি। বৃহস্পতিবার যখন ক্যাম্পের দ্বিতীয় ও শেষদিনে সকালে একসঙ্গে হলেন ক্রিকেটাররা। তখন থেকেই দেখা গেছে, ভারত দল নিয়েই আলোচনা চলেছে। শেষ পর্যন্ত ভারতের বিপক্ষে ১০ জুন শুরু হতে যাওয়া প্রথম টেস্ট ও ১৮, ২১ এবং ২৪ জুন যে যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচের সিরিজ হবে, এ সিরিজে চ্যালেঞ্জই দেখছেন ক্রিকেটাররা। পাকিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত একটি সিরিজ শেষে এবার কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্যেই যে পড়তে হবে, তাও বুঝতে পারছেন। কখনও শোনা গেছে বিরাট কোহলি, মহেন্দ্র সিং ধোনির মতো সিনিয়র ক্রিকেটাররা আসবেন না। আবার শোনা গেছে বিরেন্দর শেবাগ, যুবরাজ সিং, জহির খান, হরভজন সিংরা আসবেন। কিন্তু দেখা গেল কোহলি, ধোনিদের রেখেই দল ঘোষণা করা হয়েছে। শুধু হরভজন এর মধ্যে টেস্টে সুযোগ পেয়েছেন। সেই সঙ্গে ভারত দল নিয়েও আলোচনার শেষও হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে বিশ্বকাপে খেলা দলটির ওপরই আস্থা রেখেছেন ভারতের নির্বাচকরা। শুধু চোটাক্রান্ত থাকায় মোহাম্মদ শামির জায়গায় ভারতের ওয়ানডে দলে এসেছেন ধাওয়াল কুলকার্নি। যে দলটির বিপক্ষে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে আম্পায়ারের একের পর এক ভুল সিদ্ধান্তে হেরেছে বাংলাদেশ, সেই ভারত দলের বিপক্ষেই আবারও খেলতে হবে বাংলাদেশকে। মাশরাফি মনে করছেন, ‘ওয়ানডেতে প্রায় বিশ্বকাপের দলটাই দেখছি। চোটের কারণে শুধু শামি নেই, তাছাড়া তো সবাই আছে। আর টেস্ট দলে হরভজন এসেছে। ওরা তো আসলে দল হিসেবে এমনিতেই ভাল। ব্যাটিংয়ে ওরা নিঃসন্দেহে বিশ্বের এক নম্বর। আমাদের বোলারদের অনেক চ্যালেঞ্জ থাকবে।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘পুরো শক্তির দল না এলে একটা বাড়তি চাপ থাকে সব সময়। বলা হয়, ওদের আসল দল আসেনি। এখন তো অন্তত এ প্রশ্নটা হবে না। আমাদেরও ভাল খেলার একটা প্রেরণা থাকবে। ওদের আসল দলের সঙ্গে ভাল করলে অনেক ভাল লাগবে। আমার চোখে ওদের এই দলটা শক্তিশালী। বিশ্বকাপে ওরা সেমিফাইনাল খেলেছে, এটাই ওদের সেরা দল। কাজটা অনেক কঠিন।’ বিসিবি একাডেমিতে ফিটনেস অনুশীলনের পর ভারতের বিপক্ষে কেন কঠিন চ্যালেঞ্জ হবে, সাংবাদিকদের তা জানান বিজয়, ‘সারা বিশ্বের মিডিয়ার চোখ থাকবে সিরিজটা নিয়ে। তাছাড়া বিশ্বকাপে ও রকম একটা দ্বৈরথের পর এই সিরিজটা অনেক উত্তেজনাপূর্ণ হবে। তাছাড়া, র‌্যাঙ্কিংয়েরও একটা বিষয় আছে আমাদের।’ ইনজুরির জন্য বিশ্বকাপের তিন ম্যাচ খেলেই ছিটকে পড়েছিলেন বিজয়। ভারতের বিপক্ষে তাই কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা হয়নি। এমনকি ইংল্যান্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেও বিজয় খেলতে পারেননি। এরপর যখন পাকিস্তান খেলতে এলো বাংলাদেশে, পরপর তিন ওয়ানডেতেই বাংলাদেশ জিতল; এমন সিরিজেও বিজয় খেলেননি। কাঁধের ইনজুরি যে সেড়ে ওঠেনি। অবশেষে ইনজুরি মুক্ত এখন বিজয়। এবং ভারতের বিপক্ষে খেলার আশাও করছেন। দুই মাস পর আবার জাতীয় দলে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন এই ওপেনার। এর মাঝে বিসিএলের দুটি ম্যাচ খেলেন। দুটিতেই দুর্দান্ত ব্যাটিংও করেন। দক্ষিণাঞ্চলের হয়ে উত্তরাঞ্চলের বিপক্ষে ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ৬ রানের জন্য শতক করতে পারেননি। তবে দ্বিতীয় ইনিংসেই ১১১ রানের ইনিংস খেলেন। আবার মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষে ম্যাচে ৮৩ রানের ইনিংসও উপহার দেন। আর তাই বিজয় ভারতের বিপক্ষে সিরিজে খেলার আশা করছেন। এ নিয়ে বলেন, ‘আমি অনেক অপেক্ষায় আছি ভাল একটা সিরিজ শুরু করার জন্য। আসলে ইনজুরির কারণে দুই মাসের একটা গ্যাপ পড়ে গেছে। বিসিএল খেলছি, জিমওয়ার্ক করছি, কঠোর অনুশীলন করছি। ভারত সিরিজে যদি সুযোগ পাই শতভাগ দিয়ে ভাল পারফর্মেন্স করার চেষ্টা করব।’ মাশরাফি ওয়ানডের অধিনায়ক। ইনজুরিতে না পড়লে তার থাকাটা নিশ্চিতই। তবে বিজয় যদি দলে ফেরেন এবং খেলার সুযোগ পেয়ে যান, তাহলে সত্যিই এ ব্যাটসম্যানের জন্য ভারত সিরিজ কঠিন চ্যালেঞ্জই হবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ দলের সামনেও কী কঠিন চ্যালেঞ্জই অপেক্ষা করছে না? মাশরাফি ও বিজয় তো সেই চ্যালেঞ্জের কথাই বলে দিলেন।
×