ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রফতানির নতুন দিগন্ত

প্রকাশিত: ০৩:২৩, ২২ মে ২০১৫

রফতানির নতুন দিগন্ত

রফতানি পণ্যের তালিকায় আম যুক্ত হওয়ায় অর্থনীতিতে খুলল যেমন নতুন সম্ভাবনার দ্বার, তেমনি প্রসারিত হলো কৃষি ক্ষেত্রের দিগন্ত। এতে রফতানি আয় বাড়বে নিঃসন্দেহে। জাতীয় অর্থনীতিতেও এর প্রভাব পড়বে ইতিবাচকভাবে। প্রথম দফায় যে আম লন্ডনে গেল তা সাতক্ষীরা জেলার। পর্যায়ক্রমে রাজশাহী, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, মেহেরপুরসহ যেসব এলাকার আম উৎকৃষ্টমানের, সেসব এলাকার আমও রফতানি হবে। ওয়ালমার্ট নামে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান এর উদ্যোক্তা। এ দেশে পোশাক শিল্পের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার কথা সুবিদিত। পোশাক শিল্পে বছর দেড়েক আগে আকস্মিক সঙ্কটের সময় এই প্রতিষ্ঠানটির সহযোগিতামূলক ভূমিকার কথা স্মরণযোগ্য। কিছু কিছু পণ্য রফতানির ব্যাপারে অতীত অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। চিংড়িসহ কিছু পণ্যের ব্যাপারে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে হারাতে বসেছিল বিশ্ববাজার। এতে দেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুণœ হয় কিছুটা। আম নতুন রফতানি পণ্য। এখানে নতুন বিনিয়োগকারীরা এগিয়ে আসবে এটাই স্বাভাবিক। এই সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরাও ঢুকে যেতে পারে, সেদিকে খেয়াল রাখা দরকার। মনে রাখা প্রয়োজন, এর সঙ্গে দেশের ভাবমূর্তিও জড়িত। আমচাষীরা নিজেদের ফলনকৃত আমের মান বজায় রাখবেন এটাই প্রত্যাশিত। বিদেশীরা সব সময় মান নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে কঠোর নিয়ম অনুসরণ করে থাকে। যে জন্য ভাল পণ্যের চাহিদা বহির্বিশ্বে বেশি। এখানে উল্লেখ্য, আমরা খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। তবে দেশের সব শ্রেণীর মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয়েছে এমন কথা বলার সময় এখনও আসেনি। এখনও পুষ্টি ঘাটতি রয়েছে। সমাজের নিম্নবিত্ত পরিবারের শিশুদের বিরাট অংশ এখনও পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। তাদের পুষ্টি ঘাটতি পূরণে বিশেষত আমিষ জাতীয় খাদ্যপণ্য যেমন- দুধ, ডিম, মাছ, মাংস ইত্যাদির যোগান নিশ্চিত রাখা যেমন জরুরী, তেমনি নানাবিধ ফলমূলও। দেশ থেকে কিছু খাদ্যপণ্য বিদেশে রফতানি হচ্ছে। মাছ, মাংস, সবজিও রয়েছে এ তালিকায়। এ সব পণ্যের মাধ্যমে রফতানি আয় বাড়ছে সেটা ভাল কথা। তবে দেশীয় চাহিদা পূরণ করে যেন সেটা হয় সেদিকেও নজর রাখা দরকার। তেমনি আমের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। আম শুধু খাদ্যবস্তুই নয়, এখন অর্থকরী ফলও। দেশের মাটি, বিস্তৃত সমভূমি, জলবায়ু ও আবহাওয়া আম উৎপাদনের জন্য অধিক উপযোগী। দেশের বৃহত্তর এলাকা আম চাষের আওতায় আনা যেতে পারে। প্রয়োজন আরও সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা। আপদকালীন বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হলে ভর্তুকি বা ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা রাখাও দরকার। এ ফল চাষে উৎসাহী করতে স্বল্পসুদে ঋণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। বিজ্ঞানভিত্তিক উপায়ে আমের উৎপাদন এবং তা সংরক্ষণে হাতেকলমে শিক্ষার ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন। আমের রফতানিকরণ প্রক্রিয়াও নির্বিঘ্ন রাখা জরুরী।
×