ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ইব্রাহিমের শেষ মুহূর্তের গোলে পয়েন্ট-মর্যাদা দুটোই বিসর্জন আবাহনীর;###;মোহামেডান ১- ঢাকা আবাহনী

জয়- শেষ হাসি মোহামেডানের

প্রকাশিত: ০৬:৪৬, ২১ মে ২০১৫

জয়- শেষ হাসি মোহামেডানের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ঢাকা আবাহনীকে ১-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে দেশের ঐতিহ্যবাহী ফুটবল ক্লাব মোহামেডান স্পোর্টিং। বুধবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘মান্যবর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ’ ফুটবলে দিনের প্রথম ম্যাচের একেবারে শেষদিকে (৯০ মিনিটে) রুদ্ধশ্বাস ও মহাকাক্সিক্ষত জয় কুড়িয়ে নেয় সাদা-কালো জার্সিধারীরা। জয়ের নায়ক মিডফিল্ডার মোহাম্মদ ইব্রাহীম। মোহামেডানের এটা ষষ্ঠ জয়। পয়েন্ট ২০। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচের আগে (শেখ রাসেল বনাম রহমতগঞ্জ) পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসে তারা। সমান ম্যাচে ‘দ্য স্কাই ব্লু ব্রিগেড’দের এটা তৃতীয় হার। ১৭ পয়েন্ট চতুর্থ স্থানেই আছে তারা। ম্যাচটি উভয় দলের কাছেই নিছক লড়াই নয়, ছিল মর্যাদার দ্বৈরথ। এ দু’দলের লড়াইকে ফুটবলপ্রেমীদের কেউ আখ্যা দিয়েছেন ‘ঢাকা ডার্বি’, কেউবা আবার ‘বাংলা ক্লাসিকো’। বুধবার মর্যাদার লড়াই উপভোগ করতে গ্যালারিতে বহুদিন পর আবারও উল্লেখযোগ্য দর্শক সমাগম ঘটে। ম্যাচ জয়ের পর মোহামেডান দলের ফুটবলারদের বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস দেখে মনে হতে পারে তারা বুঝি লীগ চ্যাম্পিয়নই হয়ে গেছে! আসলে আবাহনীকে হারানোর আনন্দ লীগ শিরোপা জয়ের মতোই সমান তাদের কাছে। অথচ ম্যাচটা ড্র-ও হতে পারত রেফারি জসিমউদ্দিনের কারণে! ম্যাচের তখন ৭২ মিনিট। নিজেদের বক্সে আবাহনীর এক ডিফেন্ডারের হাতে বল লাগলেও রেফারি সেটা দেখতে বেমালুম ভুল করেন। দিয়ে দেন কর্নার! হতভম্ব হয়ে পড়ে সাদা-কালো শিবির। তাদের সমর্থকরা গ্যালারিতে মারমুখী হয়ে উঠলে অবস্থা বেগতিক দেখে মাঠে পুলিশ নামানো হয়। তবে শেষ পর্যন্ত মোহামেডান জিতে গেলে আর কোন দাঙ্গা-ফ্যাসাদে যায়নি তাদের সমর্থকরা। স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়ে পুলিশরাও! জ্যৈষ্ঠের তীব্র গরমে খেলতে গিয়ে উভয় দলের ফুটবলাররাই সমস্যায় পড়েন। তারপরও গতিশীল ও আক্রমণাত্মক ফুটবলই খেলার চেষ্টা করে দুই দল। মোহামেডানই তুলনামূলক বেশি আক্রমণ করে খেলে। স্নায়ুচাপে ভোগার কারণে দুই দলেরই আক্রমণগুলো আলোর মুখ দেখেনি। আবাহনীর অস্ট্রিয়ান কোচ জর্জ কোটানের চেয়ে কোচিং অভিজ্ঞতায় যোজন ব্যবধানে পিছিয়ে মোহামেডানের কোচ জসিমউদ্দিন জোসি। কিন্তু বুধবারের ম্যাচে জোসির কাছে হার মানলেন কোটান। রেফারি খেলা শেষের বাঁশি বাজালে নিজ দলের খেলোয়াড়দের চেয়েও যেন বেশি উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন জোসি। দৌড়ে চলে যান কোটানের সঙ্গে। হাত মেলানোর আগে মাথা নিচু করে সম্মান জানান কোটানকে! জোসির ভদ্রতায় মুগ্ধ হয়ে তাকে বুকে জড়িয়ে ধরেন কোটান। এ দিন মোহামেডান গ্যালারিতে দেখা যায় ‘মহাপাগল’ লেখা সংবলিত বিশাল এক ব্যানার ও সঙ্গে তার মতো অনেক ‘মোহামেডান-পাগল’ অনুরাগী নিয়ে এসেছেন এক মোহামেডানের অন্ধভক্ত সমর্থক। তার নাম টি ইসলাম তারিক। তারিকের পাগলামি সবার নজর কেড়েছে এদিন। ম্যাচের ১২ মিনিটে মোহামেডানের সবুজ, ১৬ মিনিটে আবাহনীর ওসেই মরিসন, ৪২ মিনিটে মোহামেডানের ইসমাইল বাঙ্গুরা। ৪৭ মিনিটে আবাহনীর ওসেই মরিসন, ৫৪ মিনিটে মোহামেডানের জুয়েল রানা ও মোহাম্মদ ইব্রাহীম গোল মিস করেন। ৬৭ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে প্রতিপক্ষ বক্সে ঢুকে শট নেন মোহামেডানের জুয়েল রানা। কিন্ত বল পোস্ট ঘেঁষে বাইরে দিয়ে চলে যায়। ৯০ মিনিটে আবাহনীর ডিফেন্ডার হেনরি ফেলিক্স বল ক্লিয়ার করতে গেলে সেই বল পান মোহামেডানের ইব্রাহীম। বল নিয়ে বক্সে ঢুকে বা পায়ের তীব্র শটে জায়গা মতো বল পাঠিয়ে সমর্থকদের আনন্দের উপলক্ষ্য এনে দেন ইব্রাহীম। হতাশায় পোড়ে আবাহনী শিবির।
×