ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ছয় যুগের প্রত্যাশা পূরণ

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় দু’পারেই আনন্দ আর উচ্ছ্বাস

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ২০ মে ২০১৫

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় দু’পারেই আনন্দ আর উচ্ছ্বাস

ডি.এম তালেবুন নবী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ দীর্ঘ দিনের চাওয়া পাওয়া এবার পূরণ হতে যাচ্ছে বলে আনন্দিত উভয় দেশের মানুষ। রাজশাহী থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ হয়ে সোনামসজিদ বন্দর পেরিয়ে মালদা ও মুর্শিদাবাদ সরাসরি বাস চলাচলের ঘোষণা দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত শনিবার প্রধানমন্ত্রী চাঁপাইনবাবগঞ্জ সফরে এসে বিশাল জনসভায় তিনি এই ঘোষণা দিলে চারদিকে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণার মধ্যে এ অঞ্চলের অর্থাৎ চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর ও পাবনার মানুষের দীর্ঘ ছয় যুগের প্রত্যাশা পূরণ হবার উজ্জ্বল সম্ভাবনায় এই আনন্দ আর অভিনন্দন। প্রধানমন্ত্রী চাঁপাইনবাবগঞ্জ সফরে এলে দাবি দাওয়ার বিশাল প্যাকেজ দিলেও তার মধ্যে এ ধরনের আন্তঃদেশীয় কোন প্রস্তাব ছিল না। তার পরেও বাঙালী জাতির নেত্রী বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা বিষয়টি অনুধাবনে এনে ঘোষণা করেন আন্তঃদেশীয় বাস চলাচলের। এ ধরনের ঘোষণা আসার পরেই উচ্ছ্বসিত আনন্দ ধারা অব্যাহত রয়েছে অঞ্চলজুড়ে। প্রাণবন্ত ঘোষণাটি সীমান্ত পেরিয়ে দ্রুত পৌঁছে যায় মালদহ ও মুর্শিদাবাদে। একই আনন্দধারা বয়ে যাবার খবর এসেছে সেখান থেকে। আনন্দের জোয়ারে সয়লাব উভয় দেশের সংশ্লিষ্ট অঞ্চল। ইতোমধ্যেই টগবগে আনন্দ নিয়ে কিছু যুবক সীমান্তের ব্যারিকেড পেরিয়ে ছুটে এসেছে এখানে আনন্দ ভাগাভাগি করতে। এ ধরনের উচ্ছ্বাস আর আনন্দকে অনেকটাই তুলনা করা চলে একাত্তরের মহান বিজয় দিবসের সঙ্গে। সেদিনের মুক্তির আনন্দের সঙ্গে ঘোষণাটি মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছে। আর এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে আবার প্রমাণিত হলো বাঙালী পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকুক না কেন তাদের সুখ দুঃখ, আনন্দ একইভাবে প্রবাহিত। তারা বাঙালী পদ্মা মহানন্দার দু’পারে অবস্থান করলেও নদী নালা কিংবা সীমান্তের বেড়াজাল আর তারকাটার মতো বাধা অতিক্রম করে এখানকার প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাকে একেবারে একান্তভাবে ভাগাভাগি করে পালন করছে তারাও। এই আনন্দধারা কোন কোন ক্ষেত্রে দৃশ্যমান হলেও উভয় দেশের মানুষ একই ধারায় অভিনন্দন জানিয়ে শুকরিয়া আদায়, শুকরিয়া নামাজ ও পূজা অর্চনা করেছে ও করছে। যারা নানা কারণে উচ্ছ্বাসে শামিল হয়নি বা হচ্ছে না তারাও মনে মনে আনন্দ অনুভব করলেও এই মুহূর্তে প্রকাশ করছে না। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর একটি মাত্র ঘোষণা দুই দেশের বাঙালীকে বেঁধে ফেলল একই ধারায়। এরা সবাই মানুষ। পরিচয়টা ধর্মের বা বর্ণের নয়। এখানেও অসাম্প্রদায়িকতার মহামিলন করিয়ে ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই অঞ্চলের মানুষের বহু আত্মীয়স্বজন মালদহ মুর্শিদাবাদে রয়েছে। এদের মধ্যে বহু প্রভাবশালী ব্যক্তি, শিক্ষক, ব্যবসায়ী এমনকি একাধিক এমপি রয়েছেন। ওপারে একই অবস্থা। রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ হয়ে সরাসরি বাস চলাচল না করায় এতদিন মালদহ মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন স্থানে পৌছতে ভোগান্তি পোহাতে হয়। তাই এ অঞ্চল থেকে সরাসরি বাস চলাচল করলে উভয় দেশের মানুষ উপকৃত হবে। বিশেষ করে বৃহত্তর রাজশাহী ও পাবনা, বগুড়া অঞ্চলের মানুষ নানান ব্যবসা ও চিকিৎসার জন্য সোনামসজিদ বন্দর পেরিয়ে মালদহ পৌঁছে থাকে। মালদহ থেকে বিশাল ভারতের সর্বত্র যাবার সরাসরি ট্রেনের টিকেট পাওয়া যায়। এসব মানুষ মালদহ পৌঁছতে নানান ধরনের ভোগান্তির শিকার হয়ে থাকে। সরাসরি বাস চললে থাকবে না হয়রানি ও ভোগান্তি।
×