ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

খুনের দায়ে গাজীপুর ও বাগেরহাটে ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২০ মে ২০১৫

খুনের দায়ে গাজীপুর ও বাগেরহাটে ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ গাজীপুর ও বাগেরহাটে হত্যা মামলায় ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড ও একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এই রায় দেন। মৃত্যুদ-াদেশ প্রাপ্তদের মধ্যে গাজীপুরে ৪ জন এবং বাগেরহাটে ৪ জন। গাজীপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে এবং বাগেরহাটে এক চিংড়িঘের ব্যবসায়ীকে হত্যার দায়ে উক্ত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এই রায় দেয়া হয়েছে। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতার। গাজীপুর ॥ স্ত্রী হত্যার অভিযোগে জেলার চাপুলিয়ায় স্বামীসহ ৪ জনকে ফাঁসির দ-াদেশ দিয়েছে আদালত। গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালত ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল ২য় আদালতের বিচারক মোঃ ফজলে এলাহী ভূইয়া মঙ্গলবার দুপুরে ওই রায় দেন। দ-প্রাপ্তরা হলো- মোরশেদার স্বামী ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের চাপুলিয়া বন্নাইপাড়া এলাকার মোঃ ছলিম মুন্সির ছেলে আবু আইয়ুব লালন (৪২) এবং তার সহযোগী চাপুলিয়ার রিয়াজ উদ্দিন ভূইয়ার ছেলে মুল্লুক হোসেন ভূইয়া (৩০) ও একই এলাকার বদিউল আলমের ছেলে মোঃ রানা (৩৪) এবং মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি থানার বলাই খাঁ এলাকার জুলহাস খানের ছেলে হানিফ মিয়া (৩২)। নিহতের চাচা ও মামলার বাদী মোঃ শওকত আলী জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের চাপুলিয়া এলাকার তার বড় ভাই মৃত মোহাম্মদ আলীর মেয়ে মোরশেদার সঙ্গে ১৯৯৮ সালে একই এলাকার আবু আইয়ুব লালনের সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের পর হতে লালন যৌতুকের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে দু’কন্যা সন্তানের জননী তার স্ত্রী মোরশেদাকে নির্যাতন করত। ইতোমধ্যে একই এলাকার জনৈক প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে লালন অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলে। এতে মোরশেদা তার স্বামীকে বাধা দেয়। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে দাম্পত্য কলহের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে ২০০৮ সালের ৫ নবেম্বর রাতে লালনের হুকুমে তার তিন সহযোগী ঘরে ঢুকে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা মোরশেদাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপায়। এ সময় আহত মোরশেদার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে এবং ছুরিসহ ঘাতকদলের হানিফকে হাতেনাতে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় মোরশেদাকে প্রথমে গাজীপুর সদর হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন মোরশেদা মারা যায়। গাজীপুরের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মোঃ মকবুল হোসেন কাজল বলেন, মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের প্রত্যেককে ফাঁসির দ-াদেশ দিয়েছেন আদালত। রায়ে সরকার পক্ষ সন্তুষ্ট। এদিকে রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে মামলার দাবি শওকত আলী রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন। বাগেরহাট ॥ মোরেলগঞ্জে চিংড়িঘের ব্যবসায়ী সরোয়ার হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদ- ও ১ জনের যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার বিকেলে বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ -২ আদালতের বিচারক আল আসাদ মোঃ আসিফুজ্জামান এই রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষণাকালে আসামিরা উপস্থিত ছিল না। তবে যাবজ্জীবন প্রাপ্ত হারুন শেখ উপস্থিত ছিল। দ-প্রাপ্তরা হলো মোরেলগঞ্জের বহরবুনিয়া গ্রামের আফসার খাঁর ছেলে লাবলু খাঁ (৪১), উত্তর ফুলহাতা গ্রামের আসমত আলী হাওলাদারের ছেলে হাবিবুর রহমান ওরফে হাবি ডাকাত, ছাপড়াখালী গ্রামের তালেব হাওলাদারের ছেলে আল আমীন হাওলাদার, সূর্যমুখী গ্রামের মুজিবর হাওলাদারের ছেলে বেল্লাল হোসেন। মৃত্যুদ-াদেশ প্রাপ্তদের ২০ হাজার টাকা জরিমান ও যাবজ্জীবন দ-াদেশ প্রাপ্তকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদ-াদেশ দিয়েছে আদালত। মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, চিংড়ি ঘের ও জমিজমা নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ২০০৬ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি উত্তর ফুলহাতা গ্রামের ছবির উদ্দিনের ছেলে সরোয়ার হোসেনকে আসামিগন বাড়ি থেকে ডেকে বয়ার শিংগা খালের পাড়ে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এই ঘটনার ২ দিন পর ২২ ফেব্রুয়ারি ভিকটিমের স্ত্রী সেলিনা বেগম মোরেলগঞ্জ থানায় ১৭ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই জালাল পরের বছর ৩০ অক্টোবর ১২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করে। ১০ জনের সাক্ষী ও মামলার কার্যক্রম শেষে আদালত এই রায় প্রদান করেন। আদালতে আসামি পক্ষে শাহ ই আলম বাচ্চু ও সরকার পক্ষে এ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী মামলাটি পরিচালনা করেন।
×