ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশে ২৩ পণ্য রফতানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পেল ভারত

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ১৯ মে ২০১৫

বাংলাদেশে ২৩ পণ্য রফতানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পেল ভারত

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ভারত বাংলাদেশে ২৩ পণ্য রফতানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে গত রবিবার এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। জানা যায়, ভারত দীর্ঘদিন ধরে তাদের রফতানিকৃত ২২৫ পণ্যের ওপর শুল্কমুক্ত সুবিধার দাবি জানিয়ে আসছিল। কিন্তু দেশীয় পণ্যকে সুরক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ এসব পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিচ্ছিল না। তবে এবারের বৈঠকে ভারতের স্পর্শকাতর ২২৫ পণ্য তালিকা থেকে ২৩ পণ্যকে ছাড় দেয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘মদ ও অস্ত্র ছাড়া বাংলাদেশের সব পণ্য রফতানির ওপর শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছে ভারত। মুক্তবাজার অর্থনীতির যুগে আগামীতে আস্তে আস্তে কোন স্পর্শকাতর পণ্যের ওপরই হয় তো বা শুল্ক থাকবে না।’ জানা যায়, দু’দেশের বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠকে সব কিছু বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য চুক্তি নবায়নের। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে এলে বাণিজ্য চুক্তিটি নবায়ন করা হবে। এর আওতায় বাংলাদেশের ট্রান্সপোর্ট সরাসরি নেপাল ও ভুটানে যেতে পারবে। আগে যেখানে এ পরিবহনে ২১ দিন লাগত এখন সেটা ছয়দিন লাগবে। এছাড়া সীমান্তহাট নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এখন দুই দেশের মধ্যে তিনটি সীমান্তহাট আছে। এর সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাণিজ্য চুক্তি নবায়নসহ দু’দেশের মাল্টি ট্যাক্স ও অন্য ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে বাণিজ্যিক সুবিধা অর্জন ও বাণিজ্য বাড়ানো এবং দক্ষিণ এশিয়া কমন মার্কেট চালুর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। বৈঠকে ভারতের কাছে মাননিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই) পণ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার যে মান নির্ণয় করে তা স্বীকৃতি দেয়ার দাবি জানায় বাংলাদেশ।এ ছাড়া আরও সীমান্তহাট স্থাপন, বাংলাদেশের পাটজাত পণ্য ভারতে রফতানির ক্ষেত্রে সমস্যা দূরীকরণসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। ভারত থেকে বিভিন্ন ফল ও দুগ্ধজাত পণ্যের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারও চায় বাংলাদেশ। বৈঠক শেষে ভারতের বাণিজ্য সচিব রাজিব খের বলেন, ভারতের বর্তমান সরকার প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও যোগাযোগ বাড়াতে আগ্রহী। এ কারণে বৈঠকে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যে সব বাধা রয়েছে তা চিহ্নিত করা হয়েছে। দ্রুত এসব সমস্যা সমাধান করা হবে। তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে যে বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে, তা ভবিষ্যতে আরও জোরদার হবে। বাংলাদেশের বাণিজ্য সচিব হেদায়েত উল্লাহ আল মামুন জানান, বৈঠকটি খুবই ফলপ্রসূ হয়েছে। দুই দিনব্যাপী ভারত বাংলাদেশ বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠক রবিবার বিকেলে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে শুরু হয়। সেমাবার এ বৈঠক শেষ হয়। বৈঠকে ভারতীয় সাত সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন রাজিব খের। আর বাংলাদেশের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে দেন হেদায়েত উল্লাহ আল মামুন। এর আগে ২০১২ সালের ২৮ ও ২৯ এপ্রিল নয়াদিল্লীতে দুই দেশের বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
×