ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পণ্যের মজুদ পর্যাপ্ত, রমজানে দাম বাড়বে না ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১৯ মে ২০১৫

পণ্যের মজুদ পর্যাপ্ত, রমজানে দাম বাড়বে না ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আসন্ন রমজানে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেছেন, ‘রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক থাকবে এবং পণ্যের দাম বাড়বে না।’ সোমবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ছোলা, মুড়ি, ডাল, পিঁয়াজ-মরিচসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ আছে। ফলে রমজানে এসবের দাম বাড়ার কোন সুযোগ নেই। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, রমজানের সময় মন্ত্রীরা বাজার পরিদর্শনে গেলে পণ্যের দাম বেড়ে যায়। তাই এ সময় মন্ত্রীদের বাজার পরিদর্শন না করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি বলেন, রমজান উপলক্ষে সয়াবিন তেল, ডাল ও চিনিসহ সকল পণ্যের মজুদ যথেষ্ট রয়েছে। কোন পণ্যের সঙ্কট কিংবা সরবরাহের ক্ষেত্রে কোন সমস্যা হবে না এবং দামও বাড়বে না। রমজানে ভোক্তাদের কাছে টিসিবির মাধ্যমে সারাদেশে পণ্য সরবরাহ করা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, টিসিবির মাধ্যমে সারাদেশে পণ্য সরবরাহ সম্ভব নয়। টিসিবি হচ্ছে আপৎকালীন মজুদের জন্য, যাতে বাজারে কেউ কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করতে না পারে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শুধু রমজানেই নয়, বাজেট ঘোষণার পরও দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক থাকবে এবং কোন পণ্যের দাম বাড়বে না। বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠক প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ভারত বাংলাদেশে ২৩টি পণ্য রফতানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকে গত রবিবার এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘মদ ও অস্ত্র ছাড়া বাংলাদেশের সকল পণ্য রফতানির ওপর শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছে ভারত। মুক্তবাজার অর্থনীতির যুগে আগামীতে আস্তে আস্তে কোন স্পর্শকাতর পণ্যের ওপরই হয়তো শুল্ক থাকবে না।’ ভারতের বর্তমান সরকারের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘ভারতের বর্তমান সরকার প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চায়। অতীতের যেকোন সরকারের চেয়ে বর্তমান সরকার অনেক বেশি সহযোগিতামূলক। সবকিছু এত সহজে হয়ে যাবে ভাবি নাই।’ তোফায়েল আহমেদ বলেন, ভারতের বর্তমান সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে। বিগত যে কোন সরকারের চেয়ে বর্তমান সরকার বেশি ব্যবসাবান্ধব। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি নবায়নের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন বাংলাদেশ সফরের সময় এ বাণিজ্য চুক্তি নবায়ন করা হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। চলমান বাণিজ্য ক্ষেত্রে বাধাসমূহ চিহ্নিত করে তা দ্রুত সমাধান করতে দু’দেশ সম্মত। বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে ভারত বাংলাদেশকে মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র ছাড়া সকল পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দিয়েছে। ভারতের বর্তমান সরকার আন্তরিকতার সঙ্গে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করছে। তোফায়েল আহমেদ বলেন, বর্তমান ভারত সরকার বাণিজ্য ক্ষেত্রে অনেক উদার। দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারত-বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ভারত বাণিজ্যিক কাজে বাংলাদেশের পোর্ট ব্যবহার করতে পারে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বেশি লাভবান হবে। মন্ত্রী বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সম্পাদিত সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য ভারতের রাজ্যসভা ও লোকসভায় সর্বসম্মতিক্রমে বিল পাস করেছে। বাংলাদেশের যারা একসময় এটাকে গোলামী চুক্তি হিসেবে প্রচারণা চালিয়েছিল তারাই আজ ভারত সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে। এতে প্রমাণিত হয় সে সময়ের মুজিব-ইন্দ্রিরা চুক্তি সঠিক ছিল। বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে অনেক বর্ডার হাট চালু করার পরিকল্পনা আছে, বর্তমানে তিনটি বর্ডার হাট চালু রয়েছে। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে সেরকারী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, টিআইবি ভাল কিছু চোখে দেখে না। শুধু ‘নেগেটিভ’ দেখে। তিনি বলেন, ‘সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে জামায়াতের ৫ জন প্রার্থী কখনও কাউন্সিলর হতে পারত না। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বয়কট করা বিএনপির পূর্বসিদ্ধান্ত ছিল। কবে ও কখন নির্বাচন বয়কট করা হবে এ নিয়ে মাঠ পর্যায়ের কর্মী ও নেতাদের মধ্যে আগেই কথা হয়েছে।’ মন্ত্রী বলেন, টিআইবি ছাড়াও আরও কিছু সংস্থা আছে, যারা নেগেটিভ ছাড়া ভাল কিছুই দেখে না। পানি, বিদ্যুত, সড়ক ও বাণিজ্যে অগ্রগতি দেখতে পায় না উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ২১ বছরের স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন, বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্রীর নির্বাচনে বিজয় টিআইবি দেখতে পায় না।
×