ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নেতাজী সংক্রান্ত গোপন নথিতে নেহরুর বিতর্কিত ভূমিকা

প্রকাশিত: ০৪:০২, ১৭ মে ২০১৫

নেতাজী সংক্রান্ত গোপন নথিতে নেহরুর বিতর্কিত ভূমিকা

ভারতের স্বাধীনতাকামী নেতা নেতাজী সুভাস চন্দ্র বসুর সহযোদ্ধাদের কয়েকজন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মির (আইএনএ) কয়েক শ’ রুপীর তহবিল লুট করেছিলেন বলে আভাস পাওয়া গেছে। খবর ইন্ডিয়ান টুডে অনলাইনের। এ লুটেরাদের অন্তত একজনকে সরকারী একটি পদ দিয়ে পুরস্কৃত করেছিলেন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। সম্প্রতি সুভাস বোস সংক্রান্ত প্রকাশিত ৩৭টি গোপন নথির একটিতে এসব বিষয় প্রকাশ পেয়েছে বলে জানিয়েছে ‘ইন্ডিয়া টুডে’ সাময়িকী। এর আগে প্রকাশিত আরেকটি গোপন নথির সূত্রে জানা যায়, ভারতের স্বাধীনতার পরে ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বসু পরিবারের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি চালিয়েছিল দেশটির তৎকালীন কংগ্রেস সরকার। এতে নেহেরুর ব্যাপক সমালোচনা হলেও এবারের ‘আইএনএ তহবিল’ নথিতে নেহেরুর ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “এখানে বিস্ময়কর হচ্ছে তাৎকালীন সরকার (ভারতের) বিষয়টি জানত এবং তারা কোন পদক্ষেপ নেয়নি।” সাময়িকীটির হাতে আসা গোপন নথিগুলো থেকে জানা গেছে, ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত টোকিওতে নিযুক্ত ভারতীয় কূটনীতিক মিশনের ৩ প্রধান কর্মকর্তার উপর্যুপরি সতর্কতা উপেক্ষা করে গেছে নেহেরু সরকার। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আরডি সাত্যে ১৯৫১-এ প্রধানমন্ত্রী নেহেরুর কাছে এক চিঠিতে বলেছিলেন, বসু উল্লেখযোগ্য পরিমাণ তহবিল ভিয়েতনামের সায়গনে (বর্তমান হো চি মিন সিটি) রেখে গেছেন। এ সম্পদের মধ্যে ৮০ কেজির স্বর্ণালঙ্কার ও মূল্যবান পাথর ছিল। সাত্যে জানিয়েছেন, এসব সম্পদ সন্দেহভাজন তছরুপকারী ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স লীগের টোকিও প্রতিনিধি এম রামামূর্তি ও আইএনএ-র অস্থায়ী সরকারের মন্ত্রী এসএ আয়ার ইতোমধ্যে সরিয়ে নিয়েছেন। ১৯৪৫ সালের ২৯ জানুয়ারি মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনের ভারতীয় বাসিন্দারা সপ্তাহব্যাপী একটি বড় ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। নেতাজীর ৪৮তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত ঐ অনুষ্ঠানে নেতাজীর ওজনের সমপরিমাণ স্বর্ণ দেয়া হয়েছিল। এক সপ্তাহে ৮০ কেজি সোনার পাশাপাশি দুই কোটি রুপীরও বেশি চাঁদা উঠেছিল। বিশ শতকের যে কোন ভারতীয় নেতার চেয়ে বেশি যুদ্ধ তহবিল সংগ্রহ করেছিলেন বসু, জানিয়েছেন তার জীবনীকার তোয়ে। কিন্তু যুদ্ধে ব্রিটিশ বাহিনীর কাছে জাপানী বাহিনী ও বসুর আইএনএ সরকার হেরে যায়। ১৯৪৫ সালের ২৪ এপ্রিল বসু পিছু হটে ব্যাংকক চলে যান। ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট মিত্রবাহিনীর কাছে জাপান আত্মসমর্পণ করে।
×