তুমি আমাদের পৃথিবী
প্রকৃতি মাতা তোমাতে প্রচ্ছন্ন রেখেছে
প্রতি মুহূর্তের সংগ্রাম।
ইতিহাসের নির্মম অধ্যায়ে
দানবের হিংস্র, মূঢ় বর্বর নখ এফোঁড়-ওফোঁড়
করে আমাদের, আমাদের মাকে।
দানবের নগ্ন ভয়ঙ্কর অভিশপ্ত নিঃশ্বাসের নীল বিষে
জর্জরিত হয়ে ওঠে আমার মায়ের শরীর
তখন পূর্ব দিগন্তের শান্ত উষার মতো তুমি এলে
হে আমাদের পৃথিবী!
তোমার আগমন ক্ষণটি ছিল যেন
মর্তলোকে সুরলোকের এক অভয়-বার্তা
তোমার আগমনে সঙ্গে সঙ্গে
দানবের কদাকার কাঁটাওয়ালা লেজের
আঘাতে জমাটবাধা রক্তাক্ত মায়ের শরীরে
নামে অমৃত বারিধারা। বজ্র ও বায়ু
তখন আকাশ, বাতাস কাঁপিয়ে দিকে দিকে
করে গাছের শাখা আলুথালু
জানিয়ে দেয় আনন্দিত ক্ষণ এসেছে
আমাদের মাতৃমন্দিরে
মুষলবর্ষণ ধারা জানায়, রক্তাক্ত ভূমিতে
নব ফসলের অঙ্কুরোদ্গমে সে দেবে ওম
ঝড় তেমনি তার দৃঢ়বাহু, রুদ্র চোখ আর দুরন্ত
গতির বক্ষপট প্রসারিত করে বলে,
আমি এসেছি! ফসলের ভূমি থেকে এবার দানবের
লেজের দাপট হবে নিঃশেষিত।
আমি বায়ু, আমি শক্তি, আমি প্রবহমান গতি
আমার যুদ্ধ নিরন্তর।
হে আমাদের পৃথিবী!
সেই থেকে দানবের বিরুদ্ধে তুমি ক্লান্তিহীন,
নিরন্তর তোমার যুদ্ধ। তোমার বাম হাতে
রুদ্র বজ্র, দুরন্ত আঘাত হানছে প্রতি মুহূর্তে
দানবের পরে বিদ্যুত বহ্নিশিখা তার গতি
ডান হাতে তোমার শান্তির সুশীতল বর্ষাধারা
ওম দিয়ে, জল দিয়ে- পত্র পল্লবিত করছে
নব নব ফসলের ক্ষেত- যার দিকে তাকিয়ে
আমাদের প্রাণে কেবলই উৎসারিত হয়
চির সুন্দর বাণী ‘আমরা আনন্দিত’
দানব-কবলিত ভূমিতে আজ তোমার
আগমনী দিন, হে আমাদের পৃথিবী!
তোমার জন্যে আজ আমাদের সকল নিবেদন
সকল ভালোবাসা- তুমি গ্রহণ করো।