ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নিত্য লড়াইয়ে শেখ হাসিনা

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১৬ মে ২০১৫

নিত্য লড়াইয়ে শেখ হাসিনা

১৯৭৫ সালের ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে, আমরা অনেক সময় বলি, মুক্তিযুদ্ধে যাওয়াটা যত সহজ ছিল, মুক্তিযোদ্ধা থাকাটা তত সহজ ছিল না। এর বলার অর্থ এই নয় যে, মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয়াটা খাটো করে দেখা হচ্ছে। এর কারণ ভিন্ন। ১৯৭১ সালে, আপামর জনসাধারণ [কিছু বাদে] ছিল মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের। প্রত্যেকে তার সাধ্যমতো মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করেছে। যারা অবরুদ্ধ দেশে ছিলেন তাদের ভূমিকা অনেক সময় খাটো করে দেখা হয়। অনেকে ভুলে যান, সীমান্ত যারা পাড়ি দিয়েছিলেন তাদের জন্য প্রতি মুহূর্তে মৃত্যু ওঁৎ পেতে ছিল না। সবাই দেশ ত্যাগ করলে মুক্তিযোদ্ধারা দেশের অভ্যন্তরে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারতেন না। এ ছাড়া, দেশে অনেক বাহিনী গড়ে তোলা হয়েছিল। দেশে থেকেই তারা যুদ্ধ করেছেন। তাদের ভূমিকা কম গুরুত্বপূর্ণ ছিল না যদিও তা প্রায় ক্ষেত্রে উপেক্ষিত হয়েছে। এদের আমি বলি মুক্তিযুদ্ধের চতুর্দশ সেক্টর। দ্বাদশ সেক্টর স্বাধীন বাংলা বেতার, এয়োদশ পৃথিবীর সিভিল সমাজ। মুক্তিযুদ্ধে যারা যোগ দিয়েছিলেন তাদের মধ্যে শুদ্ধ আবেগ ও আদর্শের জায়গাটা ছিল অনেক বড়। তরুণ-ছাত্র-কৃষক, শ্রমিক বা সাধারণ মানুষ শুদ্ধ আবেগে কোন কিছু পরোয়া না করে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিলেন। তারা কোন পুরস্কার চাননি, পানওনি। পাকিস্তানী বাহিনীর বাঙালী সৈনিকরা অনেকে যুদ্ধে গেছেন। নেতৃত্ব দিয়েছেন। কিন্তু, মনে রাখা বাঞ্ছনীয় আক্রান্ত বা বন্দী হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তারা মন স্থির করতে পারেননি। কিন্তু সেটি অন্য বিষয়, মুক্তিযুদ্ধে তাদের ভূমিকাও গৌরবোজ্জ্বল। তা’হলে পার্থক্যটা কোথায়? একটি উদাহরণ দেয়া যাক, চট্টগ্রামে ক্যাপ্টেন রফিক ও মেজর জিয়া যুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন। রফিক অনেক আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়েছেন, ২৫ মার্চ স্বতঃস্ফূর্তভাবে যুদ্ধে নেমে গেছেন। জিয়া অন্যদিকে সোয়াত জাহাজ থেকে পাকিস্তানীদের জন্য অস্ত্র আনতে গিয়েছিলেন। পথে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে, রফিকের প্রণোদনায় যুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন। এবং হ্যাঁ, কালুরঘাট থেকে ঘোষণা পাঠ করেছেন, যুদ্ধও করেছেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত। রফিক নন। ১৯৭৫ সালের পর থেকে যারা জিয়ার হয়ে ক্ষমতা সংহত করেছেন তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কেউ যুদ্ধে যাননি। বাধ্য হয়ে গিয়েছিলেন। পার্থক্যটা সেখানেই। ১৯৭৫ এবং তার পরবর্তীকালে সৈনিকরা যারা বিএনপি করেছেন তাদের সংখ্যা বেশি। যারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে গিয়েছিলেন তাদের প্রাণ হারাতে হয়েছে যেমন, খালেদ মোশাররফ, হায়দার ও হুদা। প্রশ্ন উঠতে পারে সৈনিক নন এমন অনেক রাজনীতিবিদ বা পেশাজীবী কি বিএনপি করেননি? করেছেন, মুক্তিযুদ্ধ করলেও। ধরে নিতে হবে, যুদ্ধে তারা গেছেন বটে কিন্তু আবেগ বা আদর্শতাড়িত হয়ে নয়, বাধ্যবাধকতা ছিল বলে। ব্যতিক্রম যে ছিল না তা’ নয়, থাকবেই। কিন্তু, যারা বিএনপি করেছেন তাদের জীবন বৃত্তান্ত নিয়ে পর্যালোচনা করুন। যেমন, কূটনীতিবিদদের মধ্যে এপ্রিলেই যোগ দিয়েছিলেন সম্প্রতি প্রয়াত শিহাবুদ্দীন, আমজাদুল হক আর মাহমুদ আলী। তারপরও অনেকে পক্ষ ত্যাগ করেছেন, এমনকী নবেম্বরেও। হোসেন আলীকেও অনেক সাধ্য সাধনা করে সুযোগ সুবিধা অক্ষুণœ রেখে স্বপক্ষে আনতে হয়েছে। শিহাবুদ্দীন বা মাহমুদ আলীকে নয়। সুতরাং, এপ্রিল বা নবেম্বরে পার্থক্য থাকবে না, অবশ্যই থাকবে। স্বতঃস্ফূর্ত যোগ দেয়া আর চুক্তি করে আনার মধ্যেও পার্থক্য থাকবে। ১৯৭৫ ছিল মূলত আদর্শের দ্বন্দ্ব। বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান, বাঙালী মানস বনাম পাকিস্তানী মানস। বিএনপি যদি পাকিস্তানী মানসে বিশ্বাস না করত তা’হলে বঙ্গবন্ধুর করা মাইলফলক কার্যক্রমকে উপড়ে ফেলত না। জামায়াত বা পাকিস্তানে বিশ্বাসী ধর্মভিত্তিক দলগুলোকে জিয়া অবমুক্ত করেছিলেন সহযোগী হিসেবে। তাদের মূল বিষয়টাই ছিল, দেশ থাকবে কিন্তু তা হবে একটি মিনি পাকিস্তান। বলতে দ্বিধা নেই তারা বাংলাদেশে নিজেদের জন্য একটি শক্ত অবস্থান করে নিয়েছিল রাজনীতি ও সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্রে। গত তিন দশকে বাংলাদেশে তারা একটি আলাদা শ্রেণীও তৈরি করেছে যাদের আর্থিক বুনিয়াদও শক্ত। মিডিয়াতেও তারা অপ্রতিদ্বন্দ্বী। ১৯৭৫ সালের পর এককভাবে আওয়ামী লীগের অবস্থা ছিল নড়বড়ে। অনেকেই আদর্শচ্যুত হয়েছিলেন। ভাবতে অবাক লাগে তখন জোহরা তাজউদ্দীন, সাজেদা চৌধুরী প্রমুখ সেই অবস্থানটা ধরে রাখতে চেষ্টা করেছেন ১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনা ফিরে আসার পূর্ব পর্যন্ত। অবাক লাগার কারণটা হলো রাজনৈতিক দলে পুরুষ আধিপত্য ছিল তখন প্রবল। শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়া একই সময়ে সক্রিয় রাজনীতিতে এসেছেন। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক পটভূমি ছিল, ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন, এমনকী খালেদা জিয়ার পুনর্বাসনেও ভূমিকা রেখেছিলেন। খালেদা জিয়ার তার কিছুই ছিল না। তবে, শাসক বা এস্টাবলিশমেন্ট ছিল তার পক্ষে। শেখ হাসিনার পরিচয় ছিল শুধু বঙ্গবন্ধুকন্যা। মিডিয়া ১৯৮২ সাল থেকেই খালেদার পক্ষ অবলম্বন করেছে। অর্থনৈতিক শক্তি ছিল তার পক্ষে। এস্টাবলিশমেন্ট তো বটেই। শেখ হাসিনাকে এর বিপক্ষে জায়গা করে নিতে হয়েছিল দল ও দেশের রাজনীতিতে। তিনি তখন আদর্শের জায়গাটিতেই জোর দিয়েছেন। এবং এই আদর্শের জোরটাই বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে প্রবল পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। তার পক্ষে ছিলেন সাধারণ মানুষ যারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন। আর সমাজে অগ্রসরমান বুদ্ধিজীবী ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা। এদের সহায়তায় প্রতি ইঞ্চি ভূমি তাকে লড়াই করে জিতে নিতে হয়েছে। আজ তিন দশক পর যদি ফিরে তাকাই তা’হলে দেখব, শেখ হাসিনা যা করেছেন, পরবর্তীকালে তার চেয়ে বেশি কিছু করা কারও পক্ষে সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। যখন শেখ হাসিনা ইঞ্চি ইঞ্চি জমি পুনর্দখল করছিলেন তখন মিডিয়া তাকে এবং খালেদাকে এক পাল্লায় মাপা শুরু করে। আমরা বলছিলাম, এই ধরনের মন্তব্য মতলববাজি। একজন বাঙালীদের জন্য লড়াই করছেন, আরেকজন পাকিস্তানের জন্য। আমি যদি বাঙালী হই, বাংলাদেশে বিশ্বাস করি তা’হলে পাকিস্তানী মানসের প্রতিভূকে কিভাবে এক পাল্লায় মাপি? আজ তিন দশক পর বলতে হচ্ছে পাল্লা যদি কেউ মাপতে চান, একদিকের পাল্লা এত ভারি হবে যে মাপামাপিটাই ব্যর্থ হবে। রাষ্ট্র, বাংলাদেশের আগেও অনেক গঠিত হয়েছে, ভবিষ্যতে হয়ত হবেও। রাষ্ট্র স্থাপন করা যত কঠিন তারচেয়েও কঠিন রাষ্ট্রবিরুদ্ধ শক্তি, তাদের আন্তর্জাতিক প্রতিভূকে পরাজিত করে রাষ্ট্র টিকিয়ে রাখা। বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্র সৃষ্টি করেছিলেন, তারপর বলেছিলেন, এবার রাষ্ট্র রক্ষার দায়িত্ব। রাষ্ট্র রক্ষার অর্থ তার সীমান্ত অক্ষুণœ রাখা নয়। এর অর্থ যে মৌলিক আদর্শের ভিত্তিতে রাষ্ট্র গঠিত হয়েছিল তা অক্ষুণœ রাখা। বাংলাদেশ পাকিস্তানের অন্তর্গত হবে না, সেদিক থেকে রাষ্ট্র অক্ষুণœ, কিন্তু যখন রাষ্ট্রের মৌলিক আদর্শ ছিন্নভিন্ন হয় তখন রাষ্ট্র বিপন্ন হয়ে পড়ে। পাকিস্তান যেমন। বাংলাদেশও ১৯৭৫ সালের আদর্শের জায়গাটা হারিয়েছিল। তা পুনরুদ্ধারে নেতৃত্ব দিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও এর নেতা শেখ হাসিনা এবং তার মিত্র কিছু মৃদু বাম দল। সেই যে ১৯৮১ সালে ফিরে তিনি লড়াই শুরু করেছিলেন সে লড়াই এখনও চলছে, চলবে। তিনি না থাকলেও নতুন নেতৃত্ব যদি লড়াই চালিয়ে যায় তা’হলেই বাংলাদেশ আবার পরিপূর্ণভাবে বাঙালীর রাষ্ট্রে পরিণত হবে। ॥ দুই ॥ লড়াইয়ের শুরুতে শেখ হাসিনাকে নিজের দলে নেতৃত্ব দৃঢ় করতে হয়েছে। ১৯৭৫ সালের পর দল কী ছিল আর শেখ হাসিনা কী করেছিলেন আমাদের সমবয়সীদের জানা। সে বিত্তান্ত ঘাঁটতে চাই না। কিন্তু, এখন দলে তিনিই ক্ষমতার উৎস। সমষ্টিগত নয়, একক নেতৃত্ব। দলকে পুনর্¯’াপনে তিনি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই অগ্রসর হয়েছেন। গণতন্ত্রে প্রথম পদক্ষেপ নির্বাচন। আওয়ামী লীগ প্রায় প্রতিটি নির্বাচনেই যোগ দিয়েছে, নির্বাচন কমিশন ও সরকার ষড়যন্ত্র করবে জেনেও। কেননা রাষ্ট্রে তাকে থাকতে হলে সেখানে তার একটি জায়গা করে নিতে হবে এবং সংসদীয় পদ্ধতিতে ফিরে আসতে হবে। সেই লড়াইটা শেখ হাসিনা ১৯৯১ সালেই জিতেছিলেন সংবিধানের এয়োদশ সংশোধনী করে। রাষ্ট্রপতি শাসন চালু হওয়ার পনেরো বছর পর দেশ সংসদীয় রাজনীতিতে ফিরে এসেছে। তার ২৫ বছর আমরা দেখছি সব ধরনের রাজনীতিবিদ এবং সাধারণ মানুষ দু’টি বিষয় মেনে নিয়েছেনÑ ১. সংসদীয় রাজনীতি ২. নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল। অনেক ব্যক্তি বা দল তা মানতে নারাজ হলেও এটি মেনে নিতে হচ্ছে। যে কারণে, নির্বাচনে না গেলেও নির্বাচনের কথাই বলছে বিএনপি এখন। ১৯৭৫ সালের একটি বড় বৈশিষ্ট্য খুনীদের খুন করার অবাধ লাইসেন্স বা দায়হীনতা। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ঘটনা পাকিস্তান ছাড়া আর কোথাও ঘটেনি। ১৯৭১ সালে যারা খুন করেছিল পাকিস্তান তাদের আশ্রয় দিয়েছিল [যেমন গোলাম আযম, নিজামী বা মুজাহিদ] উচ্চপদে বসিয়েছিল [ফরমান আলী বা অন্য কমান্ডারদের]। ১৯৭৫ সালে যারা বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দুই-ই দেয়া হয়েছে। ১৯৭১ সালের খুনীরা তো ছিলই। শুধু তাই নয়, পাকিস্তান থেকে তারা এক ধাপ এগিয়েও গিয়েছিল অর্থাৎ খুনীদের ইনডেমনিটি দেয়া হয়েছিল সংবিধান সংশোধন করে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় দায়হীনতা থাকতে পারে না। শেখ হাসিনা তাই ইনডেমনিটি বাতিলে সংবিধান সংশোধন করেছেন। এটি ছিল বড় একটি পদক্ষেপ। ইনমেডনিটি বাতিলের আগে কেউ ধারণা করতে পারেননি এটি বাতিল হতে পারে এবং অনেকে তা ভুলেও গিয়েছিলেন, মেনেও নিয়েছিলেন। শুধু ইনডেমনিটি বাতিল নয়, তিনি বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সহযোগীদের খুনীদের বিচারও শুরু করেছিলেন। প্রতিশোধ বাসনা থাকলে দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল সৃষ্টি করে বিচার করতে পারতেন। তা তিনি করেননি, বিচারের দীর্ঘপথই বেছে নিয়েছিলেন, অপরাধীদের শাস্তিও বিধান করেছিলেন। দায়বোধ ফিরিয়ে আনার মানে এ নয় যে, সমাজে সবার ক্ষেত্রে দায়বোধ ফিরেছিল। কিন্তু, দীর্ঘদিন পর এ পদক্ষেপটি নেয়াতে দায়বোধের বিষয়টি আবার আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছিল। এই রাষ্ট্রে কেউ আর এই বিচারের বিরোধিতা করার সাহস পাননি। জিয়াউর রহমান পার্বত্য চট্টগ্রামে গৃহযুদ্ধাবস্থার সৃষ্টি করেছিলেন। সামরিক আধিপত্য বজায় রাখার এটি ছিল কৌশল। জাতিকে তিনি দ্বিধাবিভক্ত করেছিলেন আগেই, পার্বত্য চট্টগ্রামে যুদ্ধাবস্থা সৃষ্টি করে তারপর তা ত্রিধাবিভক্ত করেছিলেন। জিয়া থেকে খালেদা জিয়া পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষেত্রে সামরিক যুক্তি মেনে নিয়েছিলেন। সেই শান্তিবাহিনীর সঙ্গে শেখ হাসিনা সরকারের শান্তিচুক্তি করা ছিল জাতিগত বিদ্বেষ দূর করার প্রচেষ্টা। সেটি এখনও কতটা বিদ্যমান তা বিতর্কের বিষয় কিন্তু আন্তর্জাতিক মানেও যে এটি বড় বিষয় ছিল তা বলাই বাহুল্য। এর চেয়েও কম অবদান রেখে ওবামা থেকে অনেকেই নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন। (চলবে)
×