ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

তিতাসে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপে গোলাগুলি, ছাত্রলীগ নেতা নিহত

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ১৬ মে ২০১৫

তিতাসে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপে গোলাগুলি,  ছাত্রলীগ নেতা নিহত

নিজস্ব সংবাদদাতা, দাউদকান্দি, ১৫ মে ॥ কুমিল্লার তিতাসে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের গোলাগুলিতে ছাত্রলীগ নেতা নিহত ও অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। উপজেলার ঢাকা-হোমনা-কুমিল্লা সড়কের কড়িকান্দি বাসস্টেশনে বৃহস্পতিবার রাতভর এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ দিকে, এ ঘটনার জের ধরে শুক্রবার সকাল থেকে ঢাকা-হোমনা-কুমিল্লা ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে দলীয় নেতাকর্মীরা। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কুমিল্লা (উত্তর) জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার হোসেন বাবু ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিনুল ইসলাম সোহেল শিকদার গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। উক্ত বিরোধের জের ধরে বুধবার দুপুরে উভয়গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকাবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় উপজেলার ঢাকা-হোমনা-কুমিল্লা সড়কের কড়িকান্দি বাস স্টেশনে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও বহিরাগত ক্যাডার হিসাবে ভাড়ায় আসা হোমনার বাবরকান্দি গ্রামের ফিরোজ মিয়ার ছেলে রুবেল (২৮) কে আটক করা হয়। পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলেও রাত প্রায় দেড়টায় একই স্থানে উভয়পক্ষের মধ্যে পুনরায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। গভীর রাতে মুহুর্মুহু গোলাগুলিতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ছাত্রলীগের মাসুম সরকার, লিটন, রমজান ও কামরুল গুলিবিদ্ধ হয়। হামলায় ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের ধাক্কায় ছাত্রলীগের শেখ সাদী, রুবেল হোসেন, রকিব হোসেন, মামুন হোসেন, শাহিন মিয়া, আক্তার হোসেন, তৌফিক, খোরশেদ আলম, সুমন আহমেদ, মুকুল হোসেন, শাহ আলম, সজিব আহমেদ, জহিরুল ইসলাম, হারুন মিয়া, জুয়েল আহত হলে তাদের তিতাস স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে লিটন, সুমন, রমজান, জহিরুল ইসলাম ছাড়া বাকিদের গুরুতর অবস্থায় ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় সারোয়ার হোসেন বাবু বাদী হয়ে বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এদিকে, শুক্রবার সকালে ঢামেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গুলিবিদ্ধ কুমিল্লা (উত্তর) জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও তিতাসের জগতপুর গ্রামের ইকবাল হোসেন সেলিমের ছেলে মাসুম সরকার (৩৫) মারা গেলে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং সকাল থেকে ঢাকা-হোমনা-কুমিল্লা সড়ক এবং দুপুর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গৌরীপুরে অংশে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রাস্তা অবরোধ করে যানবাহন ভাংচুর করে। এ বিষয়ে সারোয়ার হোসেন বাবু জানান, ভাইস চেয়ারম্যান ও তার লোকজন গভীর রাতে আমার লোকজনদের লক্ষ্য করে গুলি করে এবং এক পর্যায়ে হামলায় ব্যবহৃত গাড়ি আমার লোকজনের ওপর তুলে দেয়া হয়। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে তিতাস থানার ওসি তারেক মোঃ আব্দুল হান্নান বলেন, দীর্ঘদিন যাবত দু’গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে জোর তৎপরতা চলছে। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।
×