ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গ্যালারি চিত্রকে নাসরিন বেগমের ‘প্লেজেন্ট জার্নি’

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ১৬ মে ২০১৫

গ্যালারি চিত্রকে নাসরিন বেগমের  ‘প্লেজেন্ট জার্নি’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চার দশকেরও বেশি সময় ধরে চিত্রপটের সঙ্গে সখ্য গড়েছেন চিত্রশিল্পী অধ্যাপক নাসরীন বেগম। আর এই শিল্পীর ক্যানভাসে বিশেষভাবে ঠাঁই করে নিয়েছে রূপময় প্রকৃতি। নিসর্গের সঙ্গে কখনও বা সহজাতভাবে জুড়ে যায় নারীর অবয়ব। এমন বিষয়কে উপজীব্য শিল্পীর সম্প্রতি আঁকা কিছু চিত্রকর্ম নিয়ে ধানমণ্ডির গ্যালারি চিত্রকে শুরু হলো প্রদর্শনী। শিরোনাম প্লিজেন্ট জার্নি বা আনন্দ ভ্রমণ। শুক্রবার পহেলা জ্যৈষ্ঠের বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যায় প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন করেন ঢাকায় নিযুক্ত কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি ইয়ান-ইয়ং। প্রদর্শনী সম্পর্কে আলোচনা করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও শিল্প-সমালোচক অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। আপন অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন নাসরীন বেগম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন চিত্রকের নির্বাহী পরিচালক চিত্রশিল্পী মোঃ মনিরুজ্জামান। প্রকৃতির খুব সাধারণ বিষয়গুলোই নাসরীনের রং-তুলির ছোঁয়ায় উপস্থাপিত হয়েছে বর্ণিলভাবে। বিশাল একটি ক্যানভাসে চিত্রিত হয়েছে রায়েরবাজার বধ্যভূমি। লাল জমিনের চিত্রপটে উপর থেকে ঝরে পড়ছে শুভ্র বর্ণের শিউলি ফুল। সেই ঝরা ফুলগুলো গিয়ে জমেছে বধ্যভূমির পাদদেশে। অনিন্দ্য সুন্দর এ চিত্রকর্মে প্রকাশিত হয়েছে শহীদদের প্রতি শিল্পীর হৃদয়স্নাত শ্রদ্ধাঞ্জলি। শরৎ শিরোনামের ছবিটিও দারুণভাবে নজর কাড়ে। নয়ন জুড়ানো সবুজ-শ্যামলে আবৃত বিস্তীর্ণ এক ফসলের মাঠ। সেই কৃষিভূমির এককোণে বসে আহার করছে কৃষকের দল। দরজা শীর্ষক চিত্রকর্মে পরিলক্ষিত হয় শিল্পী শিল্প-বিন্যাসের নিপুণ দক্ষতা। ছায়া শিরোনামের ছবিতে সোনালী-হলুদ প্রেক্ষাপটের বিপরীতে পরাবাস্তবতায় হাজির হয়েছে কৃষ্ণাঙ্গ এক নারী। এছাড়াও নারীর বিভিন্ন চিত্রকর্মের কখনও মূর্ত আবার কখনও বিমূর্ত ধারায় উদ্ভাসিত হয়েছে ব্যাঙের ছাতা, সড়কের ধারে গজিয়ে ওঠা তৃণলতা, জলাশয়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বুনোফুল, প্রবল স্রোতস্বিনী ঝরনাধারা, গাছের ডাল ঝাঁকিয়ে থাকা ফুল ও লতাপাতা, শামুক-ঝিনুকে আবৃত জলরাশি থেকে উঠে আসা পাশে মৎস্য কুমারী, পার্বত্য অঞ্চলের ভেতর দিয়ে বহমান দুর্গম নদীপথ কিংবা ঝুমকো দোলানো রক্তজবাসহ প্রকৃতিসংলগ্ন রকমারি বিষয়। চারপাশের দেখা জগতের সঙ্গে কল্পনার মিশেলে চিত্রকর্ম সৃজন করেছেন নাসরীন বেগম। সেই সূত্রে অনেক ছবিতেই প্রবলভাবে দৃশ্যমান পরাবাস্তবতা। প্রদর্শনীর সব ছবি আঁকা হয়েছে এ্যাক্রেলিক মাধ্যমে। ৫৩টি চিত্রকর্ম দিয়ে সাজানো এ প্রদর্শনী শেষ হবে ২৯ মে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। রবীন্দ্র সঙ্গীতসন্ধ্যা ‘প্রাণে সুর ওঠে ভরে’ ॥ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একগুচ্ছ গান নিয়ে অনুষ্ঠিত হলো রবীন্দ্র সঙ্গীতসন্ধ্যা ‘প্রাণে সুর ওঠে ভরে’। শুক্রবার বৃষ্টিভেজা সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে বসে এ সঙ্গীতাসর। বাংলাদেশ সঙ্গীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ আয়োজিত সঙ্গীতসন্ধ্যার পরিবেশনায় অংশ নেয় রবিরশ্মির শিল্পীরা। পুরো আয়োজনে ছিল রবিঠাকুরের পূজা, প্রেম, প্রকৃতি, বিচিত্র পর্যায়ের গান ছাড়াও বাউল সুর, কীর্তন সুর এবং বিদেশী সুরে প্রভাবিত গানের মেলবন্ধন। এছাড়াও দর্শকদের বাড়তি পাওনা হিসেবে ছিল আবৃত্তি পরিবেশনা। অনুষ্ঠানটির পরিচালনায় ছিলেন মহাদেব ঘোষ। সম্মেলক সঙ্গীত পরিবেশনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। দাদরা ও ত্রিতালে অনেক কণ্ঠ এক সুরে গেয়ে যায় পরপর তিনটি গান- ‘প্রখর তপন তাপে’, ‘এসো শ্যামল সুন্দর’ ও ‘আকাশ ভরা সূর্যতারা’। আনন্দধারা বহিছে ভুবনে গানটি পরিবেশন করেন পারমিনা তোড়া উইলিয়াম। কাহাররা তালে কনকলতা হালদার গেয়ে শোনান ‘জাগরণে যায় বিভাবরী’। ছন্দোময় কণ্ঠে সৃষ্টি সরকার আবৃত্তি করেন ‘যদি তোমার দেখা না পাই প্রভু’ শীর্ষক কবিতা। ‘নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে’ গানটি পরিবেশন করেন রাবেয়া আক্তার। সাবিকুন নাহার লাবণীর কণ্ঠে গীত হয় ‘তোমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ’। মহাদেব সাহা আবৃত্তি করেন ‘তোমার গোপন কথাটি সখী, রেখো না মনে’ শিরোনামের কবিতা। সুললিত কণ্ঠে দীপ্তি চৌধুরী গেয়ে শোনান ‘চোখের আলোয় দেখেছিলাম’। যে ছিল আমার স্বপনচারিণী গানটি পরিবেশন করেন তন্বী বিশ্বাস। ভেঙ্গে মোর ঘরের চাবি নিয়ে যাবি কে আমারেÑ গানটি পরিবেশন করেন মাকসুতদা জামিল তুলি। এছাড়াও একক কণ্ঠে গান শোনান নূর তাজমিন নীর, সঞ্জীব সরকার, রুমা সাহা, রাজিব ফেরদৌস, উত্তম শর্মা, দেবযানী সেন ও ফারহানা খালিদ সারথী। তাদের পরিবেশিত কয়েকটি গানের শিরোনাম ছিল ‘মাঝে মাঝে তব দেখা পাই’, ‘তুমি কি কেবলই ছবি’, ‘মায়াবন বিহারিনী’ ও ‘তুমি কোন কাননের ফুল’। সম্মেলক কণ্ঠে ‘রাঙিয়ে দিয়ে যাও, যাও গো এবার যাবার আগে’ গানটি পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়। নেপালে দুর্গতদের সহায়তায় কনসার্ট ॥ ভয়াবহ ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত নেপালবাসীর সহায়তায় অনুষ্ঠিত হবে প্রাণ আপ কনসার্ট। আগামী ২১ মে কলাবাগান মাঠে এ কনসার্টের আয়োজন করা হবে বলে জানান প্রাণ বেভারেজ লিমিটেডের চিফ অপারেটিং অফিসার আনিসুর রহমান। তিনি জানান, এই কনসার্টে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন এলআরবি, সোলস, ফিডব্যাক, আর্ক, ব্ল্যাক, শূন্য, পেন্টাগন, পাওয়ার ভয়েসের সজল এবং রেশমীসহ এ সময়ের জনপ্রিয় অনান্য ব্যান্ডদল। এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আনিসুর রহমান জানান, ২১ মে বেলা ৩টায় কনসার্ট শুরু হবে। ১৪ মে থেকে ঢাকার সকল স্বপ্ন আউটলেটে কনসার্টের টিকেট বিক্রি হচ্ছে। টিকেটের মূল্য ধরা হয়েছে ১৫০ টাকা। দর্শকরা সরাসরি কনসার্টের দিনেও কলাবাগান মাঠ থেকে টিকেট সংগ্রহ করতে পারবেন। টিকেট বিক্রি থেকে প্রাপ্ত অর্থ নেপালের দুর্গতদের সাহায্যে প্রদান করা হবে। শিল্পকালায় শিশুদের মনোজ্ঞ পরিবেশনা ॥ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত সঙ্গীত কর্মশালার শেষে শিশুদের মনোজ্ঞ পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হলো গতকাল শুক্রবার। গতকাল সকাল ১০টায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে এবং প্রশিক্ষণ বিভাগের ব্যবস্থাপনায় তিনমাসব্যাপী শিশু সঙ্গীত বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালার সনদপত্র বিতরণ ও সঙ্গীতানুুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেগম সিমিন হোসেন রিমি। এতে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন একাডেমির প্রশিক্ষণ বিভাগের পরিচালক শাওকাত ফারুক। অনুষ্ঠানে ১২০ জন প্রশিক্ষণার্থীর সনদপত্র প্রদান শেষে প্রশিক্ষণার্থী শিশুদের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয় সঙ্গীতানুষ্ঠান। শিল্পকলায় পক্ষকালব্যাপী ছাপচিত্র প্রদর্শনী শুরু আজ ॥ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও শূন্য আর্ট স্পেস যৌথভাবে আয়োজন করেছে পক্ষকালব্যাপী ছাপচিত্র প্রদর্শনী। একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় আজ শনিবার ‘শেষ থেকে শুরু’ শীর্ষক এ প্রদর্শনী শুরু হবে। আজ দুপুর ১২টায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন বরেণ্য শিল্পী রফিকুন নবী। শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্পেন প্রবাসী বরেণ্য শিল্পী মনিরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করবেন শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করবেন শূন্য আর্ট স্পেস এর প্রধান নির্বাহী জাফর ইকবাল। মানিকগঞ্জে উদীচীর আর্ট ক্যাম্প ॥ বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর আয়োজনে আগামী শুক্রবার থেকে মানিকগঞ্জে শুরু হলো দুই দিনব্যাপী চারুকলা বিষয়ক আর্ট ক্যাম্প। শুক্রবার সকালে মানিকগঞ্জের ভালকুঠিয়ায় দু’দিনব্যাপী এ ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট পটশিল্পী রঘুনাথ চক্রবর্তী। উদীচীর কেন্দ্রীয় চলচ্চিত্র ও চারুকলা বিভাগ আয়োজিত এ ক্যাম্পে অতিথি হিসেবে অংশ নেন শিল্পী আব্দুল মান্নান, আনোয়ার হোসেন, শংকর সাওজাল, আলপ্ত গীন তুষার, কিরীটি রঞ্জন বিশ্বাস, হারুনুর রশিদসহ জাতীয় পর্যায়ের স্বনামধন্য শিল্পীরা। এই ক্যাম্পে সারাদেশ থেকে আগত উদীচীর চারুশিল্পীরা অংশ নিচ্ছেন। শিল্পচর্চাকে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার উদ্দেশেই গ্রামীণ পরিবেশে এ ধরনের ক্যাম্প আয়োজন করছে উদীচী। আজ শনিবার সন্ধ্যায় সমাপ্ত হবে উদীচীর চারুকলা বিষয়ক আর্ট ক্যাম্প। মানিকগঞ্জের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত ক্যাম্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে উন্মুক্ত প্রদর্শনী করা হবে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের জন্মশতবর্ষের অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে উদীচী নির্মিত প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘ম্যাডোনা-৪৩’।
×