ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নওগাঁয় ভেজাল বীজ সরবরাহে বোরো চাষীদের মাথায় হাত

প্রকাশিত: ০৬:৫১, ১৫ মে ২০১৫

নওগাঁয় ভেজাল বীজ সরবরাহে বোরো চাষীদের মাথায় হাত

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ, ১৪ মে ॥ চলতি মৌসুমে নওগাঁর বদলগাছীতে বিএডিসি কর্তৃক ভেজাল বীজ সরবরাহের কারণে উপজেলার শতশত বোরো চাষীদের এখন মাথায় হাত। ভেজাল বীজে বোরো ধান বিনষ্ট হওয়ায় আশানুরূপ ফলন না পেয়ে কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। জানা গেছে, জেলার বদলগাছী উপজেলায় প্রায় শতভাগ কৃষক বোরো ধানের ওপর নির্ভরশীল। বোরো ধান থেকেই সারা বছরের খাবার সংগ্রহে রাখে। খরচ বেশি হলেও কৃষকরা বোরো চাষের ওপর বেশি যতœশীল হয় জন্যই মৌসুমের শুরুতেই বোরো চাষে উন্নত বীজ সংগ্রহের চেষ্টা করেন তারা। মৌসুমের শুরুতেই উন্নতমানের বীজ হিসাবে বিএডিসির বীজ উচ্চ মূল্যে সংগ্রহ করে উপজেলার শতশত কৃষক প্রতারণার শিকার হয়েছে। বিএডিসির বীজ ছিল ভেজাল। ভেজাল বীজের চারা তৈরির সময় বোঝা যায়নি। কিন্তু জমিতে রোপণ করার পর ধান যখন গামর হয়ে ওঠে ঠিক তখনই ভেজাল বীজ প্রমাণিত হয়। কোন ধান আগাম ফুলে বের হয়েছে। কোন ধান এখনও গামর হয়নি। আবার কোন গাছের ধান পেকে পড়ে যাচ্ছে। ধানের তো বেহাল অবস্থা তার ওপর ৩ ভাগের এক ভাগ ধান চিটা। বিঘা প্রতি ফলন হচ্ছে ৭/৮ মণ। ভা-ারপুরের শাহাজাহান ২ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে আবাদ করেছে। সে ধান দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। হলুদবিহার গ্রামের এনামুল হক জানায়, সে ৭ হাজার টাকা বিঘা বর্গা হিসেবে দেড় বিঘা জমি আবাদ করেছে। ধানের অবস্থা দেখে নিজের ধান কর্তন না করে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অন্যের বাড়িতে কাজ করছে। তথ্য সংগ্রহকালে দেখা যায় উপজেলার শতশত কৃষকের একই অবস্থা। অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৪-৫ দিন পূর্বে বিএডিসির যুগ্ম পরিচালক আরিফ হোসেন ও সিনিয়র সহকারী পরিচালক আব্দুর রহমান মাঠ পরিদর্শনে এসে জনরোষের কবলে পড়েন। তারা সেখান থেকে দ্রুত সটকে পড়ে রক্ষা পান। এ বিষয়ে কোলা বাজারের বিএডিসি ডিলার আলতাব হোসেন জুয়েল ও আব্দুল ওহাব লিটন বলেন, বীজ সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ বলতে পারবেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাহেলা পারভীন জানান, কৃষকরা তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন এবং বিষয়টি তিনি বিএডিসি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে তারা এলাকা পরিদর্শন করেন। তিনি আরও বলেন অনেক কৃষক অফিসে এসেও কান্নাকাটি করেছেন। বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে নওগাঁ জেলা বিএডিসির সিনিয়র পরিচালক আব্দুর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। গলাচিপা ও রাঙ্গাবালীতে জেলেদের ভিজিএফ বিতরণ শুরু স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ পটুয়াখালীর গলাচিপা ও রাঙ্গাবালী উপজেলায় নিবন্ধিত ৯ হাজার ২৩ জাটকা শিকারী হতদরিদ্র জেলে পরিবারের মাঝে বিশেষ ভিজিএফের আওতায় খাদ্য সহায়তা বিতরণ শুরু হয়েছে। তাদেরকে পরিবার পিছু ৪০ কেজি হারে মোট চার মাস এ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। জেলেদের জাটকা ধরা থেকে বিরত রেখে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে সরকার এ উদ্যোগ নিয়েছে। তবে এ দু’ উপজেলায় নিবন্ধিত ৫ হাজার ৬শ’ ৮২টিসহ অনিবন্ধিত আরও কয়েক হাজার পরিবার খাদ্য সহায়তার বাইরে রয়ে যাওয়ায় প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহল থেকে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে। জানা গেছে, গলাচিপা উপজেলায় বর্তমানে নিবন্ধিত জাটকা শিকারী ৬ হাজার ৩শ’ ২৩টি হতদরিদ্র জেলে পরিবার রয়েছে। রাঙ্গাবালী উপজেলায় রয়েছে ৮ হাজার ৩শ’ ৮২টি পরিবার। ১ নবেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত জাটকা নিধন বন্ধে সরকারী নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বছরের এ সময়টাতে যাতে এ সব হতদরিদ্র পরিবার জাটকা শিকার না করে, এজন্য তাদের বিশেষ ভিজিএফ বা ভারনারেবল গ্রুপ ফিডিং প্রকল্পের আওতায় নেয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সমস্ত হতদরিদ্র জেলে পরিবারকে প্রকল্পভুক্ত করা হয়নি। চলতি বছরে ৬৫ ভাগ জেলে পরিবারকে প্রকল্পের আওতায় নেয়া হয়েছে। এতে গলাচিপা উপজেলায় ৪ হাজার ১শ’ ১৭ এবং রাঙ্গাবালী উপজেলায় ৪ হাজার ৯শ’ ৬টি পরিবার মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত ৪ মাস খাদ্য সহায়তা পাচ্ছে।
×