ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশ-ভারত সিরিজ

ধোনিদের ‘সুপার কোচ’ সৌরভ গাঙ্গুলী!

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ১৫ মে ২০১৫

ধোনিদের ‘সুপার কোচ’   সৌরভ গাঙ্গুলী!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জুনের ১০ তারিখ বাংলাদেশ-ভারত সিরিজ শুরু হবে। একমাত্র টেস্ট দিয়ে এ সিরিজ শুরু হয়ে ১৮, ২১ ও ২৪ মে যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওয়ানডেও অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য ৭ জুন বাংলাদেশে পা রাখবেন মহেন্দ্র সিং ধোনি, বিরাট কোহলিরা। কিন্তু এ সফরে ভারত দলের কোচ থাকবেন কে? ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো থেকে জানা যাচ্ছে, কোন কোচই এ সিরিজে নিয়োগ দেবে না দ্য বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই)। তবে ‘সুপার কোচে’র দায়িত্বে একজন থাকবেন। তিনি কে? ভারতের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী। বাংলাদেশ সফরে ভারত দলের হয়ে গাঙ্গুলী থাকবেন এবং তার পদ থাকছে হাই পারফর্মেন্স ম্যানেজার হিসেবে। বিশ্বকাপ শেষ হতেই ডানকান ফ্লেচারের নামটি যে ভারত ক্রিকেট দল থেকে মুছে গেল, সেই নাম আর উঠেই না। ফ্লেচারও ভারত ছেড়ে চলে গেলেন। বিসিসিআইয়ের সঙ্গে ফ্লেচারের সম্পর্কও যেন সেখানেই শেষ হয়ে গেল। এখন বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের আগেই নতুন কোচের সন্ধান করছে বিসিসিআই। কিন্তু কোচ বিজ্ঞাপনই এখনও দেয়নি বিসিসিআই। আর তাই ভাবা হচ্ছে, সৌরভ গাঙ্গুলীকেই বিশেষ পদের দায়িত্ব দিয়ে বাংলাদেশে পাঠানো হবে। আনন্দবাজার এমনই একটি রিপোর্ট করেছে। যেখানে লেখা আছে, আগামী ২৪ মে’র রাত থেকে অন্য খাতে বইতে পারে ভারতীয় ক্রিকেট। সে দিন ইডেনে আইপিএল ফাইনালের রাত। তবে সেই রাতের বাইশ গজ থেকে কোন ট্রেন্ড তৈরি হচ্ছে না। যা তৈরি হতে পারে বাইশ গজের বাইরে। ম্যাচ শুরুর আগে। সে দিন আসলে নতুন জমানার ভারতীয় বোর্ড ঘোষণা করবে নতুন জমানার ক্রিকেট কমিটির। যেখানে গাভাস্কারদের প্রজন্ম নেই, আছে সৌরভ প্রজন্ম। সেই তিনটে নামই ঘুরে ফিরে থাকছে কমিটির জন্য। শচীন টেন্ডুলকর। সৌরভ গাঙ্গুলী। রাহুল দ্রাবিড়। সাধারণত তারকায় ভরা কমিটি বলতে বোঝায় ভার থাকবে, ধার থাকবে না। নিতান্তই আলঙ্কারিক ব্যাপার স্যাপার। কাজ না থাকা। নিছক চাকচিক্য বাড়ানোর জন্য থেকে যাওয়া। ব্যতিক্রম হতে যাচ্ছে এ বারের ক্রিকেট কমিটি। নবীন সদস্যরা যে শর্ত দিয়েছেন, তারা শুধু থাকতে চান না। পারফর্ম করতে চান। আর পারফর্মেন্সের জন্য তাদের চাই ক্ষমতা। শূন্যস্থান পূরণ করার জন্য গদিতে বসতে তারা রাজি নন। শোনা যাচ্ছে জগমোহন ডালমিয়ার ভারতীয় বোর্ড সেই শর্ত মেনে নিচ্ছে। তিন সদস্যের কমিটির ওপরই ভারতীয় ক্রিকেট পরিচালনার দায়িত্ব তারা ছেড়ে দিতে চায়। যদি এই পরিকল্পনা অনুযায়ী সত্যি কাজ হয়, তা হলে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির নিরঙ্কুশ আধিপত্য যে থাকবে না, সেটা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। এমন কী কমিটি নিয়োগের বিষয়েও ধোনির সঙ্গে কেউ কথা বলার প্রয়োজন মনে করছে না। কিন্তু তা বলে অধিনায়ক পদ থেকে ধোনি অপসারিত হচ্ছেন না। যে অপসারণের কালো মেঘ ঢেকে ফেলেছে তার টিম ডিরেক্টরকে। ডিরেক্টর পদটাই তুলে দেয়ার কথা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে রবি শাস্ত্রির অপসারিত হওয়া ছাড়া কোন পথ খোলা থাকবে না। নতুন পরামর্শদাতা কমিটি আরও ব্যতিক্রমী হতে যাচ্ছে এ জন্য যে, একই কাজ তিন জনকে দিয়ে করানো হবে না। দায়িত্ব ভাগ করা থাকবে। লক্ষ্য হলো, কোথাও যেন ওভারল্যাপিং না হয়। রাহুল দ্রাবিড়কে যেমন ভাবা হচ্ছে ভারতের অনুর্ধ-১৯ টিম আর জাতীয় ক্রিকেট একাডেমির দায়িত্ব ভার বহনের জন্য। দ্রাবিড়ের কাজ হবে অনেক সুদূরপ্রসারী। সিনিয়র টিমের সঙ্গে জুনিয়র টিমের যোগাযোগ রেখে যাওয়া। বলা যেতে পারে ট্যালেন্ট ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার। শচীন আর দ্রাবিড়ের প্রচুর পার্টনারশিপ দেখেছে ভারতীয় ক্রিকেট। আবার তা দেখার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। শচীনকেও অনুরোধ করা হবে যাতে তিনি মাঝে মধ্যে এনসিএতে সময় দেন। সিনিয়র টিম নিয়ে মতামত দেন। আর চেতেশ্বর পূজারা বা কোহলির মতো কেউ ফর্ম হারালে তাকে যাতে ডেকে বলে দিতে পারেন কোথায় অসুবিধেটা হচ্ছে। শচীন-সৌরভ-রাহুল। এ্যাডভাইজারি কমিটিতে চূড়ান্ত হওয়ার দিকে। সৌরভ গাঙ্গুলীর ভূমিকাটা অনেকটা ভাবা হয়েছে হাই পারফর্মেন্স ম্যানেজারের আদলে যা অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে আছে। ভারতীয় ক্রিকেটে কেউ স্বপ্নেও কখনও ভাবেনি। আপাতত সৌরভকে বলা হচ্ছে, টিম ইন্ডিয়ার বিদেশে পারফর্মেন্স উন্নতি করার ব্লু-প্রিন্ট তৈরি করও। বিশেষ করে উপমহাদেশের বাইরে। সৌরভের দায়িত্ব হবে টিমের জন্য সার্বিক নির্দেশিকা তৈরি করে দেয়া। শোনা গেল, সৌরভ বলেছেন যে অনেক কিছু বদলানোর দরকার আছে। যেমন টিম ইন্ডিয়ার কোচ ব্যাটিং স্পেশালিস্ট হলেও আবার ব্যাটিং কোচ রাখে। অথচ কোন স্পিনিং কোচ রাখে না। যেখানে বেশির ভাগ আমাদের জেতায় স্পিন। ভারতীয় ক্রিকেট এখন যারা চালাচ্ছেন, সেই ডালমিয়া-মনোহর-অনুরাগরা সৌরভের ক্রিকেটীয় দর্শনকে অসম্ভব সম্মান করেন। তাই কমিটির বাকি দুই সদস্যের তুলনায় আপাতত তিনি বেশি গুরুত্ব পাবেন। বাংলাদেশ সফর শুরুর আগে এখন কোচ বাছাইয়ের আর সময় নেই বললেই চলে। টেস্ট শুরু ১০ জুন। মে মাসের অর্ধেক হয়ে গেল, কোচের জন্য বিজ্ঞাপনই দেয়া হয়নি। এই পরিস্থিতিতে সৌরভকে দলের সঙ্গে পাঠানো হতে পারে। তিনি এক রকম ‘সুপার কোচের’ ভূমিকায় থাকবেন।
×