ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

‘শওকত ওসমান ছিলেন নিপীড়িত মানুষের কণ্ঠস্বর’

প্রকাশিত: ০৬:০০, ১৫ মে ২০১৫

‘শওকত ওসমান ছিলেন নিপীড়িত মানুষের কণ্ঠস্বর’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সমাজমনস্ক সব্যসাচী লেখক শওকত ওসমার্ন। তাঁর সাহিত্য রচনায় বিষয় হিসেবে নানাভাবে উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধ, ধর্মনিরপেক্ষতা, সাম্য ও অসাম্প্রদায়িকতা। স্বদেশের প্রতি দায়বদ্ধ বরেণ্য এই কথাশিল্পীর ১৭তম প্রয়াণবার্ষিকী ছিল বৃহস্পতিবার। ১৯৯৮ সালের ১৪ মে তিনি পাড়ি জমান না ফেরার দেশে। তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বৈশাখী বিকেলে সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণসভা। কিংবদন্তি এই কথাসাহিত্যিককে স্মরণের আয়োজন করে কথাশিল্পী শওকত ওসমান স্মৃতি পরিষদ। স্মরণানুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভাষাসংগ্রামী, কবি ও রবীন্দ্র গবেষক আহমদ রফিক। আলোচনায় অংশ নেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ হায়দার আকবর খান রনো, বিটিভির মহাপরিচালক আবদুল মান্নান ও আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ডাঃ রাকিবুল ইসলাম লিটু। পিতৃ স্মৃতিচারণ করেন শওকত ওসমানের ছেলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। শওকত ওসমানের কাব্য শেখের সম্বরা থেকে কয়েকটি কবিতা আবৃত্তি করেন মধুসূদন চক্রবর্তী। আর শওকত ওসমানের জীবন ও সাহিত্যকর্ম ও জীবনবৃত্তান্ত পাঠের পাশাপাশি স্মরণানুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন লায়লা নারগিস পলি। সভাপতির বক্তব্যে আহমদ রফিক বলেন, শওকত ওসমান ছিলেন নিপীড়িত মানবসমাজের কণ্ঠস্বর। বয়সে তিনি আমার চেয়ে ১২ বছরের বড় ছিলেন। তবে সম্পর্কটা ছিল খুব ঘনিষ্ঠ। কোন বই প্রকাশিত হলেই আমাকে উপহার দিতেন। আর শওকত ওসমান যতটা সাহিত্যমনস্ক ছিলেন ততটাই ছিলেন রাজনীতিমনস্ক। রাজনীতি ছিল তাঁর রক্তে প্রবহমান। তারুণ্য থেকেই ছিলেন রাজনীতিসচেতন। শওকত ওসমানের সাহিত্যগুণ উল্লেখ করে আহমদ রফিক বলেন, তাঁকে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তুলনা করা চলে। তিনি আরও বলেন, এই ভূখ-ে শওকত ওসমানই একমাত্র লেখক যিনি স্যাটায়ারধর্মী অনেক রচনা লিখেছেন। এসব কারণেই তার বিশেষ উপন্যাস ও গল্পগুলোর ইংরেজী অনুবাদ হওয়া উচিত। এর মাধ্যমে এই বহুমাত্রিক চিন্তার মানুষটি সম্পর্কে জানতে পারবে গোটা বিশ্ব। পিতৃ স্মৃতিচারণ করে ইয়াফেস ওসমান বলেন, বাবার অনেক স্মৃতি এখনও আমাকে তাড়িত করে। আর ভিন্ন প্রকৃতির মানুষ ছিলেন তাকে আরও বেশি মনে পড়ে। আমাদের সময়ের শৈশবে বাবাদের বলা হতো সংসারের দারোগা। কিন্তু শওকত ওসমান ছিলেন ভিন্ন রকমের। তাই তাকে কখনও সে রকম মনে হয়নি। শৈশবের স্মৃতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক সকালে প্রাতঃভ্রমণে বের হবার প্রস্তুতি নিচ্ছি। দরজার বাইরে বেরোতেই দেখি বাবা বসে গেছেন যোগ-আসনে। তিনি খুব সুন্দর সুরে সেতার বাজাতেন। মৃত্যুর আগে যখন তার জননী বইটির ইংরেজী অনুবাদ হয় তখন গ্রন্থটির ইংরেজ নামও জননী রেখে দেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বললেন, ইংরেজ ব্যাটাদের জন্য একটা শব্দ দিয়ে গেলাম। তাই বলা যায়, তার সৃষ্টির ভেতর সব সময়ই একটি রাজনৈতিক বক্তব্য ছিল। এর মধ্যে আবার অনেক সাহিত্যকর্মেই রয়েছে রাজনৈতিক স্যাটায়ার। কথা শেষে ইয়াফেস ওসমান সমকালীন বিষয়ের ওপর নিচের রচিত কয়েকটি ছড়া পাঠ করেন। হায়দার আকবর খান রনো বলেন, দুই বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাশিল্পী শওকত ওসমান। লেখক হিসেবে তিনি ছিলেন জাতির অভিভাবক। তার সাহিত্যকর্মের ব্যাপ্তি অনেক বিস্তৃত। উপন্যাস, গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, নাটক কিংবা শিশুসাহিত্যÑ সবকিছুতেই রেখেছেন অনন্যতার স্বাক্ষর। প্রধানত কথাশিল্পী হলেও মানুষ হিসেবে ছিলেন অত্যন্ত উঁচু মাপের। আর সেটাই প্রতিফলিত হয়েছে তার সাহিত্যে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক টেলিফিল্ম বোধের প্রদর্শনী ॥ মুক্তিযুদ্ধে বীরাঙ্গনা ও যুদ্ধশিশুর কাহিনী নিয়ে নির্মিত টেলিফিল্ম ‘বোধ’-এর প্রদশর্নী ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেগুনবাগিচায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন কর কমিশনার ড. এস এম জাহাঙ্গীর আলম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কবি মহসিন হোসাইন। এতে আরও বক্তব্য রাখেন ইসাদ মাল্টিমিডিয়ার পরিচালক মোস্তফা জাহাঙ্গীর আলম। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালের বিভিন্ন স্মরণীয় অনেক ঘটনা এখনও উঠে আসেনি। নতুন প্রজন্মের সামনে মুক্তিযুদ্ধের সেসব স্মরণীয় ঘটনা তুলে ধরতে হবে। মুগ্ধতা ছড়াল গীতিনৃত্যনাট্য ‘ওয়াটারনেস’ ॥ শুধু গীতিনৃত্যনাট্য বললে ভুল বলা হবে। নাচ আর গানের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মার্শাল আর্টস, আবৃত্তি, তাইচি, মাইম, চিঠি ও চিত্র। আর এই সমন্বিত অনন্য এক গীতিনৃত্যনাট্য প্রদর্শনীর শিরোনাম ‘ওয়াটারনেস’। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত চমৎকার আয়োজনটি দর্শকদের মাঝে ছড়ায় মুগ্ধতার পরশ। তুরঙ্গমী-রেপার্টরি ড্যান্স থিয়েটারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ড্যান্স থিয়েটার এটি। উদ্বোধনী মঞ্চায়নের পর বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হলো তৃতীয় প্রদর্শনী। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনের ছায়া অবলম্বনে এ গীতিনৃত্যনাট্যের মূল অনুপ্রেরণা কাদম্বরী দেবী। বাংলা ও ইংরেজী দুটি ভাষায় এতে দেখানো হয়েছে জল ও নারীর অন্তর্গত সম্পর্ক। আজ টিএসসিতে যৌন নিপীড়নবিরোধী কনসার্ট ॥ ‘যেখানেই যৌন নিপীড়ন সেখানেই রুখে দাঁড়াও, প্রতিবাদী তুমি বিচারের দাবিতে আজই সোচ্চার হও’ সেøাগানে আজ শুক্রবার বিকেল ৪টায় টিএসসির রাজু ভাস্কর্য প্রাঙ্গণে বিশেষ কনসার্ট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। যৌন নিপীড়নবিরোধী কনসার্ট আয়োজক কমিটির সমন্বয়ক খুশী কবির বৃহস্পতিবার দুপুরে পরিবাগের সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানান। ইরানের সঙ্গে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক কার্যক্রম ॥ ১৯৭৭ সাল থেকে ইরান ও বাংলাদেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক চুক্তি রয়েছে। এ চুক্তির আওতায় ২০০৪-০৮ মেয়াদে দু’দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রম (ঈঁষঃঁৎধষ ঊীপযধহমব চৎড়মৎধসসব-ঈঊচ) স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু এর মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় নতুন মেয়াদে তা করার একটি প্রস্তাব বাংলাদেশ থেকে ইরানে প্রেরণ করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় ২০১৫-১৮ মেয়াদে দুদেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রম স্বাক্ষরিত হয়েছে। বুধবার ইরানের রাজধানী তেহরানে ইরানের সংস্কৃতিমন্ত্রীর অফিস কক্ষে এটি স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশের পক্ষে ইরান সফররত সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ও ইরানের পক্ষে ইরানের সংস্কৃতিমন্ত্রী আলী জান্নাতি এ বিনিময় কার্যক্রম চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
×