ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিবাদে সমাবেশ

বরিশালে শিক্ষক নিয়োগে পাল্টাপাল্টি ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ১৪ মে ২০১৫

বরিশালে শিক্ষক নিয়োগে পাল্টাপাল্টি ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ জেলার উজিরপুর উপজেলার সোনার বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগে পাল্টাপাল্টি ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের পাল্টাপাল্টি ঘুষ বাণিজ্যের তথ্য ফাঁস হওয়ায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। অভিভাবকরা স্কুলের স্বার্থে একজন ভাল শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে বুধবার সকালে স্কুল প্রাঙ্গণে সমাবেশ করেছেন। জানা গেছে, নিয়োগ পরীক্ষার পূর্বে (৪ মে) বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির প্রভাবশালী সদস্য প্রভাষক পান্না লালের সোনার বাংলা বাজার সংলগ্ন বাসভবনে শূন্য পদের প্রার্থী জনৈক দেবাশীষ দাসকে নিয়ে গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেনÑ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল হক সরদার, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আশ্রাফ আলী রাঢ়ী, কামাল মোল্লা ও ইউসুফ আলী রাঢ়ী। বৈঠকে দেবাশীষকে ৭ লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সে অনুযায়ী গত ৭ মে রূপালী ব্যাংক উজিরপুরের শিকারপুর শাখার অনুকূলে স্কুলের ২২৩৩নং এ্যাকাউন্টে ৪২৬০৬নং ভাউচারের মাধ্যমে ৩ লাখ টাকা জমা করেন দেবাশীষ দাস। বাকি ২ লাখ টাকা তিনি নগদ প্রদান করেন। কিন্তু নিয়োগ পরীক্ষায় মোহনকাঠী স্কুল এ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক সাইদুল ইসলাম খোকন প্রথম হন। তা সত্ত্বেও চর্তুথ স্থান অধিকার করা দেবাশীষ দাসকে নিয়োগ দেয়ায় জন্য কমিটির সদস্যরা তৎপর হয়ে ওঠেন। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শাজাহান হাওলাদার বলেন, দেবাশীষকে নিয়োগ দেয়ার জন্য আমার অজান্তে প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির কতিপয় সদস্য ব্যাংক এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৩ লাখ এবং নগদ ২ লাখ টাকা গ্রহণ করেছেন। অপরদিকে সাইদুল ইসলাম খোকনের কাছ থেকে প্রধান শিক্ষক একাই অতি গোপনে ৭ লাখ টাকা গ্রহণ করে তাকে নিয়োগ দেয়ার জন্য প্রথম স্থান অধিকার করতে সাহায্য করেছেন। তাই পুনরায় নিয়োগ পরীক্ষার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে আবেদন করেছেন। নিজেকে নির্দোষ দাবি করে প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম বলেন, ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা দেবাশীষ দাসের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা গ্রহণ করেছেন। পরীক্ষায় সে (দেবাশীষ) চতুর্থস্থান অধিকার করা সত্ত্বেও কমিটির সদস্যরা জোরপূর্বক দেবাশীষকে নিয়োগ দানে আমাকে চাপ সৃষ্টি করছে। শিক্ষক সাইদুল ইসলাম খোকনের কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ অস্বীকার করলেও স্কুলের ব্যাংক এ্যাকাউন্টে দেবাশীষের ৩ লাখ টাকা জমার কথা স্বীকার করে প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, নিয়োগ পেতে হলে টাকাতো লাগবেই। এটা কোন ঘুষ নয়; এটা স্কুল চালানোর জন্য কিছু অনুদান। অপরদিকে, প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের পাল্টাপাল্টি ঘুষ গ্রহণের খবরে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যশোরে ৮ লাখ টাকায় শিক্ষক হলেন শিবির ক্যাডার স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস থেকে জানান, সদর উপজেলার শাখারীগাতী এম এল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজী শিক্ষক নিয়োগে ৮ লাখ নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। নিয়োগপ্রাপ্ত ওই শিক্ষক হলেন জহরুল ইসলাম। তার পিতা আশরাফ আলী। আশরাফ আলীর একজন মাদ্রাসা শিক্ষক। তিনি জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। বাড়ি যশোর সদর উপজেলার ঘুনি গ্রামে। তার পুত্র ছাত্রজীবন থেকে শিবির করেন। তিনি যশোর সদরের পদ্মবিলা মাদ্রাসা থেকে দাখিল, আলিম পরে কুষ্টিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স পাস। এই জহরুল ইসলাম ঢাকায় নাশকতা মামলার আসামি। দীর্ঘদিন তিনি পালিয়ে ছিলেন। তাকে ৮ লাখ টাকার বিনিময়ে সভাপতি বাবর আলী ও প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ কমিটির অন্য সদস্যদের মতামত উপেক্ষা করে অত্যন্ত গোপনে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করেছেন বলে অভিযোগ। সূত্র জানায়, ২৮ এপ্রিল নিয়োগ বোর্ড থাকায় দর-দামে না পোষালে বোর্ড বাতিল করা হয়। পরে শিবির ক্যাডার জহরুলকে ও অন্য প্রার্থীকে নিয়ে ১১ মে বিকেল ৩টায় যশোর জিলা স্কুলে নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করেন অভিযুক্তরা। নিয়োগ বোর্ডে অংশগ্রহণ করেন ছয় জন প্রার্থী। আগে থেকে চুক্তি থাকায় সাজানো বোর্ডে জহরুলকেই প্রথম দেখানো হয়। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ বলেন, এটা সম্পূর্ণ কমিটির ব্যাপার। তিনি কিছুই জানেন না। যদিও এলাকাবাসী জানান, স্কুল সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি টাকা নিয়ে শিবিরের ক্যাডারকে নিয়োগ দিয়েছেন। শিবির ক্যাডারের টাকা যোগান দিয়েছে তার দল।
×