ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দলের কারাবন্দী অসুস্থ নেতাদের মুক্তি দাবি খালেদা জিয়ার

প্রকাশিত: ০৬:০১, ১৪ মে ২০১৫

দলের কারাবন্দী অসুস্থ নেতাদের মুক্তি দাবি খালেদা জিয়ার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপির কারাবন্দী অসুস্থ সিনিয়র নেতাদের মুক্তির দাবি করেছেন দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। বুধবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান সোহেল স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ দাবি করেন। তিনি অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত বিরোধীদলকে দমনের হীন উদ্দেশে বিভিন্ন ফৌজদারী মামলা এবং সরকারের আজ্ঞাবহ দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা সাজানো মোকদ্দমায় দীর্ঘদিন ধরে এসব নেতাদের অনেককেই বিনা বিচারে বন্দী করে রাখা হয়েছে। খালেদা জিয়া বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটি সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মোবিন চৌধুরী, আবদুস সালাম পিন্টু, আমার উপদেষ্টা অধ্যাপক এম এ মান্নান, শামসুজ্জামান দুদু, মোসাদ্দেক আলী, যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ, দলের নেতা লুৎফুজ্জামান বাবর, আসলাম চৌধুরী, ও আরিফুল হক চৌধুরীসহ বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধীদলের বহু নেতাকর্মী দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে রয়েছেন। এরা অনেকেই জাতীয় পর্যায়ের বিশিষ্ট রাজনীতিক, সাবেক মন্ত্রী এবং নিজ নিজ অঙ্গনে খ্যাতিমান ব্যক্তি। আটকাবস্থায় বেআইনী ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে দফায় দফায় পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে এই রাজনৈতিক বন্দীদের অনেকের ওপর দৈহিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। তাদের অনেকে বয়সে প্রবীণ এবং নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত। কারাগারে সুচিকিৎসার অভাবে তারা অনেকেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। খালেদা জিয়া বলেন, হামলা-মামলা ও অত্যাচার-উৎপীড়নে পর্যুদস্তু করে বিএনপির মতো একটি দলের স্বাভাবিক কার্যক্রমকে স্থবির করে দিয়ে ক্ষমতাসীনরা উল্লাস প্রকাশ করছে। গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ধারাকে এভাবে স্তব্ধ করে দিয়ে কেউ কখনও সুফল পায়নি। আমি ইতিহাস থেকে সেই শিক্ষা গ্রহণের জন্য ক্ষমতাসীনদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আহ্বান জানাচ্ছি রাজনৈতিক সহঅবস্থান ও সুস্থ স্বাভাবিক প্রতিযোগিতার পরিবেশ অবিলম্বে ফিরিয়ে আনার। খালেদা জিয়া বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে বিএনপি নেতা নাসিরউদ্দিন পিন্টুকে রাজশাহী কারাগারে স্থানান্তরের পর সম্প্রতি তিনি কর্তৃপক্ষের নিষ্ঠুর অবহেলায় মৃত্যুবরণ করেন। গুরুতর অসুস্থ মির্জা আলমগীরকে সম্প্রতি তেমন কোন চিকিৎসা না দিয়েই কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন অজ্ঞান হয়ে বাথরুমে পড়ে যাবার পরেও তার তেমন কোন চিকিৎসা হচ্ছে না। এ সব ঘটনা তাদের পরিবারের সদস্য এবং আমাদের জন্য গভীর উদ্বেগের। বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, দেশে বর্তমানে আইনের প্রয়োগ, তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়াকে ক্ষমতাসীনদের ইচ্ছের বাহনে পরিণত করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালনের কোন সুযোগ রাখা হয়নি। আইন তার স্বাভাবিক গতিতে চললে, দেশে আইনের শাসন ও সুবিচারের সুযোগ থাকলে এ সব ঘটনা ঘটতে পারতো না। সরকারের প্রতিহিংসার শিকার কেউ হলে তার প্রতিকার ও প্রতিবিধানের ব্যবস্থা থাকতো। কিন্তু সে সব ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়ে আইনগতভাবে মোকাবিলার পথ খুবই সংকুচিত করে ফেলা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আমি দাবি করছি, বিএনপিসহ বিরোধী দলমতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক মামলাসমূহ অবিলম্বে প্রত্যাহার করে তাদেরকে মুক্তি দেয়া হোক। বিশেষ করে আমি অসুস্থ সিনিয়র নেতাদের মুক্তি ত্বরান্বিত করার দাবি করছি। খালেদা জিয়া বলেন, বন্দী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের জামিন লাভের স্বাভাবিক অধিকারও এখন সরকারের তীব্র বিরোধিতার মুখে ক্ষণ্ণ হচ্ছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য যাদের দেশের বাইরে যাওয়ার আশু প্রয়োজন তাদেরকেও জামিন দেয়ার বিরোধিতা করা হচ্ছে। আমি এ ধরনের অমানবিক আচরণ পরিহার করার আহ্বান জানাচ্ছি।
×