ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সহস্র নাগরিক কমিটি সংবর্ধনায় নতুন মহানগর গড়ার প্রত্যয় দুই মেয়রের

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ১৩ মে ২০১৫

সহস্র নাগরিক কমিটি সংবর্ধনায় নতুন মহানগর গড়ার প্রত্যয় দুই মেয়রের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অপশক্তিকে রুখে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে নতুন মহানগর গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করলেন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র আনিসুল হক এবং সাঈদ খোকন। একই সঙ্গে বিদ্যমান নাগরিক সমস্যা সমাধানে নির্বাচনের আগে দেয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের অঙ্গীকারও পুনর্ব্যক্ত করেছেন দুই মেয়র। তারা বলেছেন, নগরভবন হবে নাগরিকদের সেবা কেন্দ্র। কোন প্রকার দুর্নীতিকে প্রশ্রয় তারা দেবেন না। দখল-দূষণের কবল থেকে মুক্ত করে বুড়িগঙ্গাকে ফিরিয়ে আনবেন তার পুরনো রূপে। দেশ স্বাধীন করার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু, সেই স্বাধীন দেশের রাজধানীও হবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার। মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন নবনির্বাচিত দুই নগরপিতা। সিটি নির্বাচনে আনিসুল হক ও সাঈদ খোকনকে সমর্থন জানানো বিশিষ্ট নাগরিক ও পেশাজীবীদের প্ল্যাটফরম সহস্র নাগরিক কমিটি এর আয়োজন করে। আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক ও সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের শুরুতে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা ফুল দিয়ে দুই মেয়রকে শুভেচ্ছা জানান। দুই মেয়র ছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দিপু মনি, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. নাজমা শাহীন, সাংবাদিক নেতা মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল এবং নাট্য ও চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সহস্র নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। মেয়রদের সংবর্ধনা জানিয়ে অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মনে রাখতে হবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী কোন কাজ করলে মেয়ররা নাগরিক কমিটির সমর্থন হারাবেন। ঢাকা যাতে ফের হেফাজতে ইসলামের মতো মৌলবাদী ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী গোষ্ঠীর আশ্রয়স্থল না হয়, সেজন্য তাদের সজাগ থাকতে হবে। মসজিদের শহর হিসেবে পরিচিত ঢাকার কোন মসজিদ যাতে জঙ্গীবাদীদের আস্তানা না হয়, সেজন্য প্রত্যেক ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে ভূমিকা রাখতে হবে। ১১ দফা প্রতিশ্রুতি নিয়ে উত্তর ও দক্ষিণ সিটির দুই মেয়র প্রার্থী আনিসুল হক ও সাঈদ খোকনকে নির্বাচিত করতে কাজ করেছে সহস্র নাগরিক কমিটি। সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য ভোটাররা নবনির্বাচিত দুই মেয়রকে যোগ্য মনে করেছেন। এবার মেয়ররা তাদের দায়িত্ব পালন করবেন। সংবর্ধনার জবাবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, সবার আন্তরিক সহযোগিতা পেলে দ্রুতই ঢাকাকে বাসযোগ্য নগরীতে পরিণত করা সম্ভব। তিনি বলেন, বুুড়িগঙ্গার নাব্য ফিরিয়ে আনতে ও নদীতীরবর্তী সংস্কার কাজে ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাংক একটি প্রস্তাব দিয়েছে। বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিনিধিদল বুড়িগঙ্গা পরিদর্শনও করেছেন। এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। তাড়াতাড়ি এর ফল নগরবাসী দেখতে পাবেন। উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক বলেন, আগে ডিসিসিকে বলা হতো ঢাকা করাপশন (দুর্নীতি) কমিশন। আগামী ৫ বছরে দুর্নীতির এ কলঙ্ক দূর করব। নগরভবনের কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী দুর্নীতির আশ্রয় নিতে পারবেন না। সম্প্রতি ছাত্র ইউনিয়নের প্রতিবাদ মিছিলে নারীদের ওপর পুলিশের হামলার নিন্দা জানিয়ে এ মেয়র বলেন, দুই-একজন সদস্যের অপরিণামদর্শিতার জন্য গোটা একটি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সুনাম ক্ষুণœ হতে দেয়া যায় না। পরিস্থিতি যত জটিল আকারই ধারণ করুক না কেন নারীর ওপর হামলা মেনে যায় না। ভবিষ্যতে এ ধরনের পরিস্থিতিতে আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের আরও সংযত আচরণের পরামর্শ দেন তিনি।
×