ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের ঝুঁকি ॥ উপেক্ষিত হাইকোর্টের নির্দেশ

কুয়াকাটা সৈকতে টিনশেড স্থাপনা তোলার হিড়িক

প্রকাশিত: ০৩:৪৫, ১৩ মে ২০১৫

কুয়াকাটা সৈকতে টিনশেড স্থাপনা তোলার হিড়িক

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ১২ মে ॥ হাইকোর্টের নির্দেশ উপেক্ষা করে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এলাকায় ফের ফ্রি-স্টাইলে শত শত টিনশেড স্থাপনা তোলা হয়েছে। গড়ে তোলা হয়েছে ঘিঞ্জি বস্তি। সেখানে বসবাস শুরু করেছে শত শত পরিবার। প্রতিদিন তোলা হচ্ছে নতুন নতুন স্থাপনা। ফের কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের শূন্যপয়েন্ট থেকে বেলাভূমে ও তার আশপাশে এসব স্থাপনা তোলার কাজ চলছে। ফলে অস্বাভাবিক জোয়ারের ঝাঁপটায় এসব স্থাপনা যে কোন সময় ভেসে যাওয়ার প্রবল শঙ্কা রয়েছে। সেইসঙ্গে সম্পদ ও প্রাণহানির আশঙ্কাও রয়েছে। আর বড় ধরনের ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে সব ল-ভ- হয়ে যাবে। যার দায় সরকারকে বহন করতে হবে। সরেজমিনে দেখা গেছে, কুয়াকাটা সৈকতের শূন্য পয়েন্টের দুই দিকে এসব ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা। সবচেয়ে বেশি স্থাপনা রয়েছে পশ্চিম দিকটায়। যে যেভাবে পারছে সমুদ্রতটের বেলাভূমি দখল করে সেখানে টিনশেড স্থাপনা তোলার কাজ অব্যাহত রেখেছে। ইতোমধ্যে অন্তত শতাধিক স্থাপনা তোলা হয়েছে। বসবাস শুরু করেছে বস্তিঘর তুলে। এখানে সরকারী উদ্যোগে ৫০টি জেলে পরিবারকে বহুপূর্বে পুনর্বাসন করা হয়েছিল। সিডরের সময় এসব পরিবার ল-ভ- হয়ে যায়। পরবর্তীতে ওইসব পরিবারকে বেড়িবাঁধের ভেতরে ঘর তুলে নিরাপদ পুনর্বাসন করা হয়। উপজেলা প্রশাসন সূত্রমতে, সৈকত এলাকার প্রায় ৬০টি পরিবারকে ডঙ্কুপাড়া গ্রামে এবং ফাঁসিপাড়াসহ কয়েকটি গ্রামে আরও প্রায় একশ’ পরিবারকে ঘরসহ পুনর্বাসন করা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের উদাসীনতায় ওইসব পরিবার ফের আশ্রয় নেয় সৈকত এলাকায়। অন্তত তিনশ’ পরিবার এখন বস্তি গেড়ে বসেছে। সাগরের ওয়াটার লেভেলের কাছাকাছি এসব পরিবারের বসবাস। ফলে জলোচ্ছ্বাসসহ কোন ধরনের ঝড়ো হাওয়া আঘাত হানলে প্রাণহানির প্রবল আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক অমিতাভ সরকার জানান, ইতোপূর্বে এদের নিরাপদ স্থানে পুনর্বাসন করা হয়েছে। কেউ যদি সমুদ্র সৈকত এলাকায় বসবাস করে তাহলে আমরা বিষয়টি গুরত্বের সঙ্গে দেখব। ২০১১ সালের ২ জুন পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এলাকা থেকে সব ধরনের স্থাপনা অপসারণের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। কুয়াকাটা সৈকতকে রক্ষা করতে ওই সময় দুটি রুলও জারি করা হয়। হিউম্যান রাইটস এ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের একটি রিট (পিটিশন নং-৫১৬২/২০১১) আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও গোবিন্দ ঠাকুরের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে ওই সময় দু’শতাধিক স্থাপনা ভেঙ্গে দেয় পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসন। কিন্তু এ আদেশ পালনে এবং মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় বেড়িবাঁধের বাইরে স্থাপনা তোলা কিংবা বস্তি নির্মাণ করে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস বন্ধ হয়নি।
×