ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বেতন না দেয়ায় রাসিকের দুই কর্মকর্তাকে পিটুনি

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ১২ মে ২০১৫

বেতন না দেয়ায় রাসিকের দুই কর্মকর্তাকে পিটুনি

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ মেয়র শূন্য রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) ভারপ্রাপ্ত হিসাবরক্ষণ ওয়ালিদ হাসান মাহমুদ রানাকে নগরভবনে তার দফতরে ঢুকে পিটিয়েছে কর্মচারী ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা। এ সময় প্রশাসন শাখার সিনিয়ার সহকারী শমসের আলীকেও মারপিট করা হয়। ঘটনার পর পরই রাসিকের বিএনপিপন্থী ভারপ্রাপ্ত হিসাবরক্ষণ রানা তার দফতর থেকে বের হয়ে নগরভবন ত্যাগ করেন। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাসিক হিসাবরক্ষণ বিভাগের এক কর্মচারী জানান, সম্প্রতি জুয়েল নামের আওয়ামী লীগপন্থী মাস্টাররোল কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে তাকে ছাঁটাই করা হয়। ছাঁটাই হওয়া কর্মচারী জুয়েল রাসিকের প্রশাসন শাখায় কর্মরত ছিলেন। কিন্তু জুয়েলের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হয়নি। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাসিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও কর শাখার সিনিয়র সহকারী আজমির আহমেদ মামুনের নেতৃত্বে কর্মচারী ইউনিয়নের কয়েকজন নেতাকর্মী জুয়েলকে সঙ্গে নিয়ে হিসাবরক্ষণ দফতরে যান। সেখানে জুয়েলের বকেয়া বেতন পরিশোধ করার জন্য হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা রানাকে বলেন। এ সময় ফান্ডে টাকা নেই বলে জানিয়ে দেয় রানা। এ নিয়ে রানার সঙ্গে মামুনের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে মামুনের সঙ্গে থাকা কর্মচারী ইউনিয়নের কর্মীরা রানাকে মারপিট করে। এ সময় শমসের এগিয়ে এলে তাকেও মারপিট করা হয়। রাসিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আজমির আহমেদ মামুন বলেন, কর্মচারীদের বেতন বিল পরিশোধ করার জন্য হিসাবরক্ষণকে অনুরোধ করা হয়েছিল। এ সময় তিনি আমাদের উপর চড়াও হয়ে তার চেম্বার থেকে বের হয়ে যেতে বলে ধাক্কা মারে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কর্মচারীরা তাকে মারপিট করেছেন। গত দেড় বছর যাবত আওয়ামী লীগপন্থী কর্মচারীদের বেতন বিল নিয়ে যেভাবে জ্বালিয়েছে তার বহিরপ্রকাশ বলেও উল্লেখ করেন মামুন। তিনি আরও বলেন, মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল মেয়র হওয়ার পর রানাকে ভারপ্রাপ্ত হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা করা হয়। তিনি দায়িত্ব পাওয়ার পর রাসিকের আওয়ামী লীগপন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বিল আটকে রাখেন। মামুন আরও বলেন, মেয়র আত্মগোপনে যাওয়ার পর থেকে হিসাবরক্ষক রানা রাসিকের অর্থ আর ব্যাংকে জমা দেননি। সব অর্থ তার দফতরের আলমারিতে রাখেন অর্থ পলাতক মেয়রের কাছে পাচার করে আসছেন। মেয়র বরখাস্ত হচ্ছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর গত ৫ মে মেয়রকে ১৫ লাখ টাকা দিয়ে এসেছে এবং বিভিন্ন ফাইলপত্র নিয়ে গিয়ে সই করিয়েছে বলেন মামুন। এ ব্যাপারে রাসিকের ভারপ্রাপ্ত হিসাবরক্ষক ওয়ালিদ হাসান মাহমুদ রানার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আজাহার আলী বলেন, ভারপ্রাপ্ত হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে থাকলে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×