ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

হুমকিতে কৃষি, বসতবাড়ি

মির্জাপুরে ফসলি জমির মাটি ইটভাঁটিতে

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ১১ মে ২০১৫

মির্জাপুরে ফসলি জমির মাটি ইটভাঁটিতে

নিজস্ব সংবাদদাতা, মির্জাপুর, ১০ মে ॥ ফসলী জমি ধ্বংস করে মাটি সরবরাহ করা হচ্ছে ইটভাঁটিতে। এতে একদিকে কৃষিজমি অকৃষি জমিতে পরিণত হচ্ছে অপরদিকে সাধারণ মানুষের বসতবাড়ি হুমকির মুখে পড়ছে। এছাড়া নদীতে বাঁধ দিয়ে ভূমি দস্যুরা ড্রাম ট্রাকে মাটি পরিবহন করে নদীর অবকাঠামো ধ্বংস করছে। ফসলী জমি ধ্বংস করে ইটভাঁটিতে মাটি নেয়ায় খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের চানপুর, বহুরিয়া ইউনিয়নের কোট বহুরিয়া ও ভাতগ্রাম ইউনিয়নের বরাটিতে দেখা গেছে উর্বর ফসলী জমির মাটি ইটভাঁটিতে ইট বানানোর জন্য ভেকু মেশিন (মাটি কাটার যন্ত্র) দিয়ে মাটি কেটে নিচ্ছে। এ মাটি পরিবহনের জন্য ইটভাঁটির মালিকরা কোট বহুরিয়া এলাকার লৌহজং নদীতে বাঁধ নির্মাণ করেছে। কোট বহুরিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, ইটভাঁটি মালিক শহিদ মিয়া ও আব্দুল হাই ফসলী জমি ২০/৩০ ফুট গভীর করে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে নিচ্ছেন। এ মাটি পরিবহন করার জন্য তিনি লৌহজং নদীতে বাঁধ নির্মাণ করেছেন। ফসলী জমি ধ্বংস করে ইটভাঁটিতে মাটি নেয়া ও নদীতে বাঁধ দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে শহিদ মিয়া বলেন, জমির মালিকের কাছ থেকে মাটি কিনেছি। এছাড়া উপজেলার ইউএনওর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে ৪Ñ৫ বছর যাবত মাটি নিচ্ছি। জানা গেছে, প্রথমে শহিদ মিয়া কোন এক জমির মালিকের কাছ থেকে এক টুকরো জমি কিনেন। সেই জমির মাটি সীমানা পর্যন্ত ২০Ñ৩০ ফুট গভীর করে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে ইটভাঁটিতে নেন। পাশের জমি বা বাড়ির মালিক প্রতিবাদ করলে তাকে হুমকি-ধমকি দেন। ২০Ñ৩০ ফুট গভীর করে মাটি কেটে নেয়ার পর পাশের জমির মালিকের জমি আস্তে আস্তে ভাঙতে থাকে। পরে নিরুপায় হয়ে ওই জমির মালিকও তার কাছে জমির মাটি বিক্রি করতে বাধ্য হন। এভাবেই চলে শহিদ মিয়ার বছরের পর বছর মাটির ব্যবসা। ফসলী জমির মাটি ট্রাক দিয়ে বহন করতে প্রতিবছর নদীতে বাঁধ দেয়ায় একদিকে নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে অপরদিকে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হচ্ছে। উপজেলার বরাটী ও চানপুর এলাকায়ও দেখা গেছে, একই কায়দায় ফসলী জমির মাটি কাটার দৃশ্য। উর্বর ফসলী জমির মাটি এভাবে কেটে নেয়া অব্যাহত থাকলে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিতে পারে। মির্জাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ সেলিম রেজা বলেন, আমাদের নাম ভাঙিয়ে যারা নদীতে বাঁধ দিয়ে ফসলী জমির মাটি নিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে নদীতে বাঁধ দেয়ার অপরাধে একজনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
×