ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

অনিশ্চিত পথ পাড়ি দিতে যাচ্ছে স্কটল্যান্ড! গ্লাসগোর জর্জ স্কয়ার। গত বছরের গ

প্রকাশিত: ০৭:৩০, ১০ মে ২০১৫

অনিশ্চিত পথ পাড়ি দিতে যাচ্ছে স্কটল্যান্ড!  গ্লাসগোর জর্জ স্কয়ার। গত বছরের গ

গ্লাসগোর জর্জ স্কয়ার। গত বছরের গণভোটের প্রচারের সময় এটি ছিল নগরীর প্রাণোচ্ছল সমাবেশস্থলের অন্যতম। যখন স্থানটি সল্টায়ার (নীল পটভূমিতে সাদা ক্রুজ প্রতীকের স্কটল্যান্ডের পতাকা) দিয়ে পরিপূর্ণ ছিল। কিন্তু শুক্রবার বিস্ময়করভাবে স্থানটির পরিবেশ ছিল সংযত, চুপচাপ। ব্রিটিশ সীমান্তের উত্তরে লেবার পার্টির প্রায় নির্মূল হয়ে যাওয়ার পরে সেখানে বিজয় উদযাপনের কোন পরিবেশের সৃষ্টি হয়নি। লোকজন শুধু তাদের স্বাভাবিক কাজকর্মে আসা-যাওয়া করছিলেন কিংবা বেঞ্চে বসে একটি দুর্লভ রৌদ্রোজ্জ্বল দিন উপভোগ করছিলেন। তবুও পারিপার্শ্বিকতা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটা দূরের। আগের দিনের মতো সেদিনও স্কটল্যান্ডকে একইরকম মনে হলেও সেটি এখন পৃৃথক এক দেশের রূপ নিয়েছে। সেখানে এক মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন ঘটে গেছে। স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোটের পর যে পরিবর্তন ছিল একটি প্রক্রিয়ার অংশ, সাধারণ নির্বাচনে স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির (এসএনপি) বিপুল বিজয় এই প্রক্রিয়াকে নতুন করে চাঙ্গা করেছে। স্বাধীনতার চিন্তা-ভাবনা আর আতঙ্ক জাগায় না। খবর গার্ডিয়ানের। গ্লাসগোর একজন শিক্ষক ভিক্টর ক্যানন বললেন, স্কয়ারের চার পাশে তাকালে পরিবেশকে স্পষ্টত প্রশমিত মনে হলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে ছিল আনন্দে অভিব্যক্তি। কোন উচ্ছ্বাসময় আনন্দোৎসব নেই কেন? তার জবাব : এসএনপির ৫৬টি আসন লাভে তিনি খুশি হলেও কনজারভেটিভদের সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হওয়ার ফলে সৃষ্ট বিষাদের বিপরীতে একটা সামঞ্জস্য বিধানের আবশ্যকতা রয়েছে। ক্যানন বলেন, ‘আমি মনে করি আমরা স্বাধীনতার দিকে একধাপ এগিয়ে গেছি।’ মাদারওয়েল নিবাসী ও লেবারের সাবেক সমর্থক ক্যানন এবার এসএনপিকে ভোট দিয়েছেন। ‘আমরা হয়ত ফেডারেল ব্যবস্থার কিছুটা কাছাকাছি হয়েছি।’ এটি কি স্বাধীনতা, না ফেডারেল ব্যবস্থার পক্ষে এক রায় ছিল? তাঁর দ্বিধাহীন জবাব : ‘স্বাধীনতা। কিন্তু আমি ফেডারেল ব্যবস্থার পক্ষে।’ বিগত ২০ বছরে স্কটল্যান্ড দীর্ঘ পথে অনেক বাঁক অতিক্রম করেছে যখন লেবারের তৎকালীন ছায়া স্কটিশ মন্ত্রী, এখন লর্ড রবার্টসন, একান্তে এবং অন্তত এই সন্ধিক্ষণে ভুল করে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে, ‘বিকেন্দ্রীকরণ জাতীয়তাবাদকে একেবারে ধ্বংস করে দেবে।’ লেবার পার্টি ২০১০-এ স্কটল্যান্ডের ৫৯ আসনের মধ্যে ৪১টি আসনে জয়ী হয়েছিল। এবার তারা মাত্র একটি আসন পেয়েছে। লেবারের রাজনীতিবিদরা এবারের পরাজয় সম্পর্কে তারা স্তম্ভিত ও ‘বিভ্রান্ত’ এবং একটি শীতার্ত তিক্ত সকাল এসব শব্দ সমষ্টি উচ্চারণ করেছেন। গ্লাসগোর বাথ স্ট্রিটে পার্টির সদর দফতরে উপস্থিত লোকজনের মনমেজাজ ছিল নিরানন্দ। স্কটিশ লেবারের নেতা জিম মারপি এ কথা স্বীকার করতে বাধ্য হন যে, ফলাফল ছিল চরম বিপর্যয়কর। রেনফ্রিউশায়ার ইস্ট আসনে পরাজিত মারফি বলেন, ইতিহাস ও পরিস্থিতিতে আমরা অভিভূত হয়ে পড়েছি। তিনি প্রথম প্রথম একজন নেতা ওয়েস্টমিনস্টার কিংবা স্কটিশ পার্লামেন্টে যার কোন উপস্থিতি নেই। তিনি নির্বাচনী ফলাফল সম্পর্কে ইতিবাচক কিছু খুঁজে পাওয়ার কোন চেষ্টাই করেননিÑ যা তাঁর নিজস্ব পরাজয়ের মাত্রা ও তাঁর বিধ্বস্ত দল সম্পর্কে একটি যুক্তিসঙ্গত বিকল্প বটে। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি স্কটল্যান্ডে লেবার পার্টির জন্য এটি বিশ্রী ধরনের কাজে পরাজয়।’ অনেক স্কটল্যান্ড প্রবাসী পরাজয়ের কারণ হিসেবে এবং লেবারের বদলে এসএনপিকে ভোট দেয়ার জন্য ব্লেয়ার ও ইরাক যুদ্ধকে অপছন্দ করার কথা, উল্লেখ করেছেন। অনেকে কৃচ্ছ্র বিরোধী মনোভাব এবং এড মিলিব্যান্ডের প্রতি আস্থাহীনতাকে দায়ী করেন।
×