বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ভারতের প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পাশাপাশি কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গেও টেলিফোনে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছিটমহল বিনিময়ে সংবিধান সংশোধন বিল ভারতের পার্লামেন্টে পাস হওয়ায় এবং বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে বিলটি পাসে সমর্থন প্রদানে সোনিয়া গান্ধীকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ভারতের রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গেও টেলিফোনে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন তিনি। শনিবার গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই সোনিয়া গান্ধীকে ফোন করে তাঁকে ধন্যবাদ জ্ঞাপনের কথা জানান।
বাংলাদেশের কাছে বহু প্রতীক্ষিত সীমান্ত বিল ভারতের পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষ রাজ্যসভা ও নিম্ন কক্ষ লোকসভায় গত সপ্তাহে সর্বসম্মতভাবে পাস হয়। বৃহস্পতিবার লোকসভায় বিল পাসের পরপরই শেখ হাসিনাকে টেলিফোন করে খবরটি জানিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পরদিন বিলটি সংসদে পাসের জন্য উত্থাপনকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গেও টেলিফোনে কথা হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গেও তাঁর কথা হওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরে গাজীপুরের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সীমান্ত বিল পাস হওয়ায় তিনি কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধীকেও টেলিফোন করে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ভারতের রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে টেলিফোনে শুভেচ্ছা বিনিময়ের কথাও জানান শেখ হাসিনা।
দীর্ঘ প্রায় ৪২ বছর পর বাস্তবায়িত হতে চলেছে বাংলাদেশ-ভারত স্থলসীমান্ত চুক্তি। চুক্তি বাস্তবায়নের এই দীর্ঘ পরিক্রমায় ভারতের অনেক রাজনীতিক ভূমিকা রেখেছেন। এর মধ্যে অনন্য ভূমিকা রেখেছেন ভারতের কংগ্রেস দলের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, কংগ্রেসের রাজনৈতিক দৃঢ় অবস্থানের কারণে শেষ পর্যন্ত আসামকে রেখেই পূর্ণাঙ্গ স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন করতে হয়েছে মোদি সরকারকে। কারণ আসাম বিজেপির আপত্তির কারণেই অসমকে বাদ রেখে সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য সংবিধান সংশোধন বিল রাজ্যসভায় তুলতে চেয়েছিল সরকার। কিন্তু অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ ও কংগ্রেসের আপত্তির মুখে ভারত সরকার এ সিদ্ধান্ত বাতিল করে। আর কংগ্রেসের এই দৃঢ় অবস্থানের পেছনে কাজ করেছেন সোনিয়া গান্ধী। কংগ্রেস শক্ত অবস্থান না নিলে চুক্তি বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতার জাল ছিন্ন করা কঠিন ছিল। এ কারণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেলিফোন করে সোনিয়া গান্ধীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বলেই তাঁরা মনে করেন।