ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দেশে থ্যালাসেমিয়া রোগী সাড়ে তিন লাখ

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ৮ মে ২০১৫

দেশে থ্যালাসেমিয়া রোগী সাড়ে তিন লাখ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ থ্যালাসেমিয়া রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। এ রোগের চিকিৎসা খুবই ব্যয়বহুল। এতে আক্রান্তদের অধিকাংশই চিকিৎসা ও চিকিৎসা খরচ মেটাতে না পেরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, থ্যালাসেমিয়ার জিন বহন করছে, দেশে এমন মানুষের সংখ্যা প্রায় ১ কোটি। এ রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা সাড়ে তিন লাখ। বংশগত এই রোগ নিয়ে প্রতিবছর দেশে সাত হাজার শিশু জন্ম নিচ্ছে। থ্যালাসেমিয়ার বাহকদের মধ্যে বিয়ে হলে এ রোগের বিস্তার ঘটে। থ্যালাসেমিয়া রোগীর বাহ্যিক তেমন লক্ষণ নেই। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তশূন্যতা দেখা দেবে, পেটের প্লীহা বড় হয়ে যাবে, তাকে ফ্যাকাশে দেখাবে। এই রোগের চিকিৎসা হচ্ছে যতদিন বাঁচবেন, ততদিন নিয়মিত নতুন রক্ত গ্রহণ করতে হবে কিংবা বোনমেরো প্রতিস্থাপন করতে হবে। ব্যয়বহুল চিকিৎসা হওয়ায় রক্তে এ রোগের জীবাণু আছে কিনা তা পরীক্ষা করা দরকার বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এমন অবস্থার মধ্য দিয়ে আজ শুক্রবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস। এ উপলক্ষে সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগে নানা কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়েছে। এ রোগ প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, থ্যালাসেমিয়া বংশগত রক্তশূন্যতা রোগ। জীবনের প্রথম বা দ্বিতীয় বর্ষের মধ্যেই লক্ষণ দেখা যায়। কখনও কখনও জন্মের পরপরই লক্ষণ প্রকাশিত হয়। এছাড়াও চেহারা ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া, দুর্বলতা, ক্লান্তি অনুভব, শ্বাসকষ্ট, দৈহিক বৃদ্ধি রহিত হওয়া, বুদ্ধিমত্তার বিকাশ পরিপূর্ণভাবে না ঘটা, যকৃৎ বড় হয়ে যাওয়ার দরুন উদর ফুলে যাওয়া, কিছু হাড় সংক্রান্ত পরিবর্তন ইত্যাদি দেখা যায়। রোগ নির্ণয়ের জন্য প্রয়োজন পরীক্ষা করা। যেমন হিমোগ্লোবিন ইলেকট্রোফোরেসিস, ডিএনএ পরীক্ষা ইত্যাদি। যে পরিবারে হিমোগ্লোবিন ডিসঅর্ডার আছে সেই পরিবারের পিতা-মাতা, ভাইবোন, ছেলেমেয়ে ও অন্য আত্মীয়স্বজন সবার রক্তের হিমোগ্লোবিন ইলেকট্রোফোরেসিস ও ডিএনএ করে কেউ বাহক কি-না তা জানার জন্য স্ক্রিনিং প্রোগ্রার চালু করা দরকার। যারা হিমোগ্লোবিন ডিসঅর্ডার বাহক তারা যদি অন্য কোন হিমোগ্লোবিন ডিসঅর্ডার বহনকারী কারও সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তাহলে তাদের সন্তানদের রোগাক্রান্ত হওয়ার যথেষ্ট আশঙ্কা থাকে। তাই তাদের উচিত সুস্থ কোন পুরুষ বা নারীকে বিবাহ করা। তাই বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা করে তারা হিমোগ্লোবিন ডিসঅর্ডার থেকে মুক্ত কি-না তা দেখে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে। যারা হিমোগ্লোবিন ডিসঅর্ডার বাহক, তাদের নিকটাত্মীয়কেও জীবনসঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করা উচিত নয়। যদি অনন্যোপায় হয়ে সে রকম একজনকে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নেয়া হয়, সেক্ষেত্রে সন্তান গ্রহণে যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশনের মহাসচিব মোঃ আবদুর রহিম বলেন, দেশে রক্তশূন্যতাজনিত রোগ থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে। এ রোগের চিকিৎসা খুবই ব্যয়বহুল।
×