ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রিয়ালকে হারিয়ে ফাইনালের স্বপ্ন জুভেন্টাসের

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ৭ মে ২০১৫

রিয়ালকে হারিয়ে ফাইনালের স্বপ্ন জুভেন্টাসের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদকে ২-১ গোলে হারিয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের ফাইনালে খেলার সম্ভাবনা জোরালো করেছে জুভেন্টাস। টুরিনের জুভেন্টাস স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রাতে সেমিফাইনালের প্রথম লেগের ম্যাচে স্বাগতিকদের হয়ে একটি করে গোল করেন আলভারো মোরাটা ও কার্লোস তেভেজ। রিয়ালের হয়ে একটি গোল পরিশোধ করেন সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। শেষ চারের প্রথম লেগের ম্যাচে জয় পাওয়ায় ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে এগিয়ে থাকল জুভেন্টাস। সেই সঙ্গে মৌসুমে ‘ট্রেবল’ জয়ের সম্ভাবনাও জোরালো হয়েছে ইতালিয়ান পরাশক্তিদের। হারলেও অবশ্য এখনও ফাইনালে খেলার ভাল সুযোগ আছে রিয়ালের। ১৩ মে সেমির দ্বিতীয় লেগে নিজেদের মাঠ সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে অন্ততপক্ষে ১-০ গোলে জিতলেই টানা দ্বিতীয়বার ফাইনাল মঞ্চে নাম লেখাবে কার্লো আনচেলত্তির দল। তবে গোল হজম করলে সমীকরণটা কঠিন হয়ে যাবে। ইতালি জাতীয় দল কিংবা দেশটির ক্লাবগুলোর মধ্যে রক্ষণাত্মক কৌশলেই বেশি খেলতে দেখা যায়। কিন্তু পরশু রাতে ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে খেলতে থাকেন তেভেজ, পিরলো, মোরাটারা। ফল পেতেও বিলম্ব হয়নি। ম্যাচের অষ্টম মিনিটে রিয়াল গোলরক্ষক ইকার ক্যাসিয়াসের ব্যর্থতায় জুভেন্টাসকে এগিয়ে নেন মোরাটা। গোলটি অবশ্য পেতে পারতেন তেভেজে। আর্জেন্টাইন তারকার দারুণ শট ক্যাসিয়াস ঝাঁপিয়ে পড়ে ফিরিয়ে দিলেও শেষ রক্ষা করতে পারেননি। গোলমুখে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা মোরাটা বিনা বাধাতেই বল জালে পাঠান। ২৭ মিনিটে রোনাল্ডোর গোলে সমতা ফেরায় অতিথি রিয়াল। ডানদিক থেকে জেমস রড্রিগুয়েজের উঁচু করে বাড়ানো বলে গোলপোস্টের খুব কাছ থেকে হেডে গোলটি করেন বর্তমান ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার। ইউরোপের সেরা ক্লাব টুর্নামেন্টে রোনাল্ডোর এটা ৭৬ নম্বর গোল। ফলে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ইতিহাসে ফের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড গড়েছেন পর্তুগাল অধিনায়ক। ম্যাচের ৪১ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার দারুণ সুযোগ পেলেও ভাগ্যের ফেরে হতাশ হতে হয় রিয়ালকে। বাঁদিক থেকে ইস্কোর করা ক্রসে শূন্যে উঠে হেড করেছিলেন রড্রিগুয়েজ। কিন্তু বল পোস্টে লেগে ফিরে আসে। বিরতির পর ৫৬ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে বল নিয়ে দ্রুতগতিতে রিয়ালের ডি বক্সে ঢুকে পড়েন তেভেজ। কিন্তু পেছন থেকে তাকে দানি কারভাজাল ফাউল করলে পেনাল্টি পায় স্বাগতিকরা। স্পট কিক থেকে গোল করে জুভেন্টাসকে এগিয়ে নেন তেভেজ। ৬৪ মিনিটে আবারও সহজ সুযোগ নষ্ট করেন রোনাল্ডো। বদলি নামা জ্যাভিয়ের হার্নান্দেজের কোনাকুনি শটে গোলমুখ থেকে বলে পা লাগাতেই ব্যর্থ হন তিনি। ম্যাচের ৮৭ মিনিটে রাফায়েল ভারানের চরম ভুলে আরেকটি গোল হজম করতে বসেছিল রিয়াল। স্বাগতিকদের বদলি খেলোয়াড় ফার্নান্ডা লরেন্টে ডি বক্সে ঢুকে পড়লে বল আয়ত্তে নিতে অনেকটা এগিয়ে আসেন ক্যাসিয়াস, কিন্তু বল পেয়ে যান স্বাগতিক স্ট্রাইকার। ক্যাসিয়াসকে বোকা বানিয়ে আরও সামনে এগিয়ে যান তিনি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যে শটই নিতে পারেননি লরেন্টে। শেষ পর্যন্ত দারুণ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে জুভেন্টাস। ম্যাচ শেষে রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি বলেন, আমরা এই ম্যাচে অনেক ভুল করেছি। এই হার ওই ভুলগুলোরই খেসারত। দ্বিতীয়ার্ধে এই ভুলের পরিমাণ ছিল বেশি। তবে ইতালিয়ান এই কোচ ঘুরে দাঁড়াতে আত্মবিশ্বাসী কথা শুনিয়েছেন। বলেন, আমি আত্মবিশ্বাসী। নিজেদের মাঠে সমর্থকদের উপস্থিতিতে আমরা ঘুরে দাঁড়াব। তবে অবশ্যই আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। ঘুরে দাঁড়াতে আশাবাদী রিয়াল তারকা রড্রিগুয়েজও। ব্রাজিল বিশ্বকাপের গোল্ডেন বুটজয়ী কলম্বিয়ান তারকা বলেন, বার্লিনের ফাইনালে খেলার জন্য আমরা মুখিয়ে আছি। বার্নাব্যুতে ফিরতি পর্বের ম্যাচটি অন্যরকম হবে। প্রথম লেগের ফলাফলকে খারাপ বলা যাবে না। কঠিন প্রতিপক্ষ হলেও ঘরের মাঠে তাদের বিধ্বস্ত করতে চাই। তিনি আরও বলেন, আমরা জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবছি না। দলের সবাই নিজেদের সেরাটা দিতে বদ্ধপরিকর। ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নরা তুলনামূলক রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলে অভ্যস্ত। আমার বিশ্বাস, রিয়াল দাপটের সঙ্গেই ফাইনালে উঠবে।
×