ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আজহার

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ৭ মে ২০১৫

শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আজহার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গত দুই বছর ধরে অপরিহার্য ব্যাটসম্যান হিসেবেই টেস্ট দলে আছেন। তবে এবার বাংলাদেশ সফর নতুন মাত্রা যোগ করেছে তার ক্যারিয়ারে। ওয়ানডে খেলতে তেমন পারঙ্গম না কিংবা একদিনের মেজাজের সঙ্গে মানানসই না এমন অজুহাতে ১৪ ওয়ানডে খেলেই ক্যারিয়ার থেমে গিয়েছিল ৩০ বছর বয়সী এ ডানহাতি ব্যাটসম্যানের। কিন্তু সোয়া দুই বছর পর অধিনায়ক হিসেবেই ফিরলেন একদিনের ক্রিকেটে। রানের মধ্যেই ছিলেন। টেস্ট সিরিজেও ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন আজহার। প্রথম টেস্টে ৮৩ রান করে বিদায় নিয়েছিলেন। এবার সেঞ্চুরি আদায় করে নিলেন মিরপুর টেস্টে। দারুণ ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে ২৫৮ বলে ১৩ চারে অপরাজিত আছেন ১২৭ রান নিয়ে। ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে নেমে শেষ পর্যন্ত পুরোদিন ব্যাটিং করার মধ্যে বড় ভূমিকা রেখেছেন মিরপুরে তৃতীয় উইকেটে ২৫০ রানের রেকর্ড জুটি গড়ে। শুরুটা কিছুটা অস্বস্তি নিয়েই শুরু করেছিলেন। বিশেষ করে বাংলাদেশের নবাগত পেসার মোহাম্মদ শহীদের বলে বার বারই বিমূঢ় হয়ে পড়ছিলেন আজহার। ভাগ্য সহায় হয়েছে বলে দিনের শেষ পর্যন্ত টিকে ছিলেন। না হলে সাজঘরে ফিরে যেতে ব্যক্তিগত ১৮ রানের সময়ই। ইনিংসের ১২ ওভারে শহীদের বলে তার তুলে দেয়া ক্যাচটা ভালভাবেই তালুবন্দী করেছিলেন তৃতীয় সিøপে দাঁড়ানো সৌম্য সরকার। কিন্তু সে যাত্রা তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন নো-বল হওয়ার কারণে। এরপর আরও সতর্ক হয়েছেন তিনি। ধীরলয়ে ব্যাট চালিয়েছেন। এ কারণে তার বিপরীত দিকে দুই সঙ্গী মোহাম্মদ হাফিজ ও সামি আসলাম সাজঘরে ফিরে গেলেও উইকেট আঁকড়ে ছিলেন আজহার। তিনি অভিজ্ঞ ইউনুস খানের সঙ্গে জুটি বেঁধে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন। পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে ঠা-া মাথায় মোকাবেলা করে গেছেন বাংলাদেশী বোলারদের আক্রমণ। সে কারণেই তার অনেক পরে উইকেটে এসেও ইউনুস শতরান তুলে নেন। অনেকখানি এগিয়ে যান ইউনুস। তবে একবার জীবন ফিরে পাওয়া আজহার আর দ্বিতীয় কোন ভুল করেননি। যদিও হাফ-চান্স দিয়েছেন অনেক। আরও তৎপর হলে সে সব ধরে ফেলার সুযোগ ছিল বাংলাদেশী ফিল্ডারদের। সেক্ষেত্রে হয় তো অনেক আগেই সাজঘরে ফিরে যেতেন তিনি। সেটা হয়নি, নির্বিঘেœই তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের অষ্টম শতরান। ইউনুস খানের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ২৫০ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে তুলে দলকে মজবুত এক অবস্থানে নিয়ে যান আজহার। ওপেনিংয়ের সঙ্গী হাফিজ এবং ওয়ানডাউনে নামা সামি দ্রুতই ফিরে যাওয়াতে বেশ চাপে পড়ে গিয়েছিল পাকরা। প্রাথমিক সেই চাপটা সামলানোর ক্ষেত্রে আজহারের ধৈর্যশীল ইনিংস অনেক বড় ভূমিকাই রেখেছে। ২৫০ রানের জুটি গড়েছেন যা ঢাকার উইকেটে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে কোন দলের পক্ষে তৃতীয় উইকেটে সেরা জুটির রেকর্ড। এর আগে ভারতের পক্ষে রাহুল দ্রাবিড় ও টেন্ডুলকর ২০১০ সালের জানুয়ারিতে অবিচ্ছিন্ন ২২২ রানের জুটি গড়েছিলেন তৃতীয় উইকেটে। আর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এটি ছিল পাকিস্তানের তৃতীয় উইকেটে সেরা জুটি। এর আগে ৯৫ রানের জুটিই ছিল তাদের সেরা। ২০১১ সালের নবেম্বরে তৌফিক ওমর ও ইউনুস করেছিলেন সেটি। তার চেয়ে রান তোলার ক্ষেত্রে ইউনুস দ্রুত হলেও আজহার টিকে ছিলেন শেষ পর্যন্ত। ইউনুস ফিরে যাওয়ার পরও দিন শেষ করেছেন অপরাজিত থেকেই। এবার নিজেকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি দলকে বড় সংগ্রহ দেয়ার চ্যালেঞ্জ নিয়ে নামবেন দ্বিতীয় দিনে।
×