ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

তুরাগে খুঁটি আগের মতোই থাকবে

নদীর সীমানা খুঁটি নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ আপীলে স্থগিত

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ৭ মে ২০১৫

নদীর সীমানা খুঁটি নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ আপীলে স্থগিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় তুরাগ নদের সীমানা চিহ্নিত খুঁটি স্থাপন বিষয়ে হাইকোর্টের একটি আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত করেছে আপীল বিভাগ। অন্যদিকে সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা খালাফ এস আল আলী হত্যা মামলায় দেয়া হাইকোর্টের রায়ের পেপার বুক উপস্থাপন শুরু হয়েছে আপীল বিভাগে। পেপার বুকের অংশ বিশেষ উপস্থাপন শুরু করেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এদিকে তুরাগ নদের সীমানা চিহ্নিত খুঁটি স্থাপন বিষয়ে আপীল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করার ফলে তুরাগে সীমানা খুঁটি আগের মতোই থাকবে বলে জানিয়েছেন এ মামলার এক আইনজীবী। হাইকোর্টের দেয়া স্থিতাবস্থার আদেশের বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপীল নিষ্পত্তি করে বুধবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে গঠিত চার বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। নদীর দখল-দূষণ রোধে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস এ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের করা এক রিট আবেদন শুনে ২০০৯ সালের ২৫ জুন হাইকোর্ট বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদী রক্ষায় ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেয়। এতে নদী তীরবর্তী অবৈধ স্থায়ী ও অস্থায়ী স্থাপনা উচ্ছেদ করতে বলা হয়। ভূমি জরিপ অধিদফতর ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়কে সমন্বিতভাবে ক্যাডেস্ট্রাল সার্ভে বা সিএস রেকর্ড অনুসারে নদীগুলোর সীমানা নির্ধারণ করে খুঁটি স্থাপন করতে বলা হয়। তবে তুরাগের কয়েকটি স্থানে সঠিক জায়গায় সীমানা খুঁটি স্থাপন না হওয়ায় রিট আবেদনকারীপক্ষের একটি আবেদনে গত বছরের ২৪ জুলাই হাইকোর্ট ১৪ দিনের মধ্যে ভরা মৌসুমে তুরাগ নদে খুঁটি স্থাপনের নির্দেশ দেয়। এরপর আমিন এ্যান্ড মোমিন নামে একটি কোম্পানির দখলে থাকা প্রায় নয় একর জমি মুক্ত করে খুঁটি স্থাপন করা হলে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে ইয়ানুর বেগম ওই জমি উদ্ধার ও খুঁটি অপসারণের জন্য হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট স্থিতাবস্থার আদেশ দেয়। ওই আদেশের বিরুদ্ধে চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন নিয়ে যায় রিট আবেদনকারী। ৩ মার্চ চেম্বার বিচারপতি হাইকোর্টের স্থিতাবস্থার আদেশ তিন সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে বিষয়টি নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন। আপীল বিভাগ এর শুনানি করে বুধবার আবেদনটি নিষ্পত্তি করে দেয়। আদেশের পর আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জনকণ্ঠকে বলেন, ‘হাইকোর্টের দেয়া স্থিতাবস্থার আদেশ স্থগিত করে আপীল বিভাগ লিভ টু আপীল নিষ্পত্তি করে দিয়েছে। এখন তুরাগ নদের সীমানায় খুঁটি বসানো আছে এবং তা থাকবে।’ খালাফ হত্যা মামলা ॥ সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা খালাফ এস আল আলী হত্যা মামলায় দেয়া হাইকোর্টের রায়ের পেপার বুক উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপীল বেঞ্চে বুধবার পেপার বুকের অংশ বিশেষ উপস্থাপন শুরু করেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এ সময় আসামিদের পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন এ্যাডভোকেট খবির উদ্দিন ভূইয়া। ডেথ রেফারেন্স ও আপীলের শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ১৮ নবেম্বর হাইকোর্ট এ মামলায় এক আসামির মৃত্যুদ-াদেশ বহাল রাখার পাশাপাশি তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদ-াদেশ দিলেও বেকসুর খালাস দেন মৃত্যুদ-াদেশপ্রাপ্ত পলাতক আসামি সেলিম চৌধুরীকে। পরবর্তীতে নিম্ন আদালতের সাজা কমিয়ে হাইকোর্টের দেয়া এই যাবজ্জীবন ও এক আসামির খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপীল করে রাষ্ট্রপক্ষ। সেই লিভ টু আপীলের ভিত্তিতে মঙ্গলবার থেকে রায়ের পেপার বুক পড়া শুরু হয়। এর আগে ২৩ জুলাই ২০১৪ সালে রিভ টু আপীল মঞ্জুর করেন আপীল বিভাগ। উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ মার্চ মধ্যরাতের পর ঢাকার গুলশানের ১২০ নম্বর সড়কে নিজের বাসার অদূরে গুলিবিদ্ধ হন খালাফ আল আলী (৪৫)। পরদিন ভোরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। পরে গুলশান থানায় দ-বিধির ৩০২/৩৪ ধারায় একটি হত্যা মামলা করা হয়। এ মামলায় গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এই পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদ-াদেশ শোনান। নিম্ন আদালতের ফাঁসির এ রায় অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। এছাড়া আসামিরা নিম্ন আদালতের এ রায়ের বিরুদ্ধে জেল আপীল দায়ের করে। ১ আগস্ট আপীল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানি শুরু হয়ে ৩ নবেম্বর শেষ হয়। পরবর্তীতে ১৮ নবেম্বর হাইকোর্ট এক রায়ে আসামি সাইফুল ইসলামের মৃত্যুদ- বহাল রেখে নিম্ন আদালতে মৃত্যুদ-াদেশপ্রাপ্ত পলাতম আসামি সেলিমকে বেকসুর খালাস দেন। অপর দিন আসামি আল আমীন, আকবর আলী লালু ও রফিকুল ইসলামের মৃত্যুদ-ের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন নির্ধারণ করে দেন হাইকোর্ট।
×