ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সুন্দরবনে জাহাজডুবি

প্রশাসন ও বন বিভাগের দুই তদন্ত কমিটি ॥ সার অপসারণ

প্রকাশিত: ০৬:০১, ৭ মে ২০১৫

প্রশাসন ও বন বিভাগের দুই তদন্ত কমিটি ॥ সার অপসারণ

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ মাত্র পাঁচ মাসের মাথায় ফের বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে জাহাজ ডুবির ঘটনায় প্রশাসন ও বন বিভাগ পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। বুধবার সকাল থেকে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের মরা ভোলার চরে ডুবে যাওয়া কার্গো হতে বন বিভাগের উদ্যোগে সার অপসারণের কাজ শুরু হয়েছে। তবে নদীতে প্রচ- স্রোত থাকায় এবং ডুবোচরের কারণে উদ্ধার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। জাহাজটি ৬৭০ মে. টন এমওপি সার বোঝাই করে মংলা থেকে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ি যাচ্ছিল। বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ও খুলনা বিভাগীয় বন সংরক্ষক ড. সুনীল কুমার কু-ু ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে এ দুটি কমিটি গঠন করেন। এ ঘটনায় সুন্দরবনের পরিবেশগত ক্ষতির আশঙ্কায় বাগেরহাটের শরণখোলা থানায় সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের পক্ষ থেকে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। কার্গোতে থাকা সার সুন্দরবনের নদীতে ডুবে যাওয়ায় পরিবেশগত ক্ষতির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ক্ষতির সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছে। খুলনার সিএফ ড. সুনীল কুমার কু-ুু জানান, মঙ্গলবার বিকেলে সারবাহী কার্গো ডুবির কারণ অনুসন্ধানে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আমীর হোসাইন চৌধুরীকে প্রধান করে চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে বিভাগীয় বন সংরক্ষকের কাছে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর বুধবার জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শহিদুল ইসলামকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তিনি জানান, কার্গো জাহাজে থাকা ও পানিতে ডুবে যাওয়া পটাস সার ড্রেজার মেশিন দিয়ে অপসারণের কাজ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের মরা ভোলা নদীর বিমলের চর এলাকায় ‘এমভি জাবালে নূর’ নামে কার্গো জাহাজটি আংশিক ডুবে যায়। জাহাজটিতে প্রায় পাঁচ শ’ মেট্রিক টন মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) সার ছিল বলে জানা গেছে। এর দু’দিন আগে জাহাজটি বিমলের চর এলাকার ডুবোচরে আটকা পড়ে। জাহাজের মালিক কর্তৃপক্ষ অপর দুটি কার্গোর সাহায্যে জাবালে নূর কার্গো জাহাজটি উদ্ধারের চেষ্টাকালে মঙ্গলবার বিকেলে তলা ফেটে পানি উঠে ধীরে ধীরে জাহাজটি কাত হয়ে ডুবে যেতে থাকে। কার্গোটি ডুবে যাওয়ার পর থেকে মালিকপক্ষের লোকজন গা ঢাকা দিয়েছেন। বুধবার তাদের ওই কার্গোর আশপাশে দেখা যায়নি। তবে ডুবে যাওয়া জাহাজ এমভি জাবালে নূরের চালক হাবিবুর রহমান শরণখোলা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল করিম জানান, জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে পহেলা মে সারবাহী কার্গো জাহাজটি মংলা বন্দর থেকে আসার পথে বিকেল পাঁচটার দিকে মরা ভোলার চরে আটকে যায়। ৪ তারিখ সকাল ১০টার দিকে জাহাজের মাঝামাঝি ডান পাশে তলায় ফাটল দেখা দেয়। বিষয়টি মালিক পক্ষকে জানিয়ে উদ্ধারের জন্য সাহায্য চাওয়া হয়। জিডিতে কার্গো জাহাজটিতে ৬৭০ মে. টন এমওপি সার থাকার কথা বলা হয়েছে।
×