ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নতুন রেকর্ডের সামনে তামিম

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ৬ মে ২০১৫

নতুন রেকর্ডের  সামনে তামিম

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পয়মন্ত প্রতিপক্ষই বলা চলে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পুরো সিরিজেই ব্যাট হাতে তা-ব চালিয়েছেন। বাজে সময়টা পার করে ফিরেছেন দুর্দান্ত ফর্মে। বাঁহাতি ওপেনার তামিম ইকবাল দু’হাত ভরে পেয়েছেন এ সিরিজে। ওয়ানডে সিরিজে দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সবার ওপরে উঠে গেছেন তামিম। সর্বাধিক রান সংগ্রাহক, সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ওয়ানডে ইনিংস, সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি ও চার-ছক্কার মালিক বনে গেছেন। প্রথম টেস্টে ২০৬ রানের ইনিংস খেলে বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসেরও মালিক হয়ে গেছেন তিনি। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বাধিক ৭ সেঞ্চুরিও তার। এবার আরেকটি রেকর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে এ বাঁহাতি ওপেনার। আজ মিরপুরে শুরু হতে যাওয়া সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ৫৩ রান করতে পারলেই সবাইকে ছাড়িয়ে অনন্য এক উচ্চতায় উঠে যাবেন তিনি। টেস্টে সর্বাধিক ৩০২৬ রান আছে সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশারের। ২৬ বছর বয়সী তামিমের রান ২৯৭৪। তার নাম ছিল ‘মিস্টার ফিফটি’। একের পর এক অর্ধশতক হাঁকিয়ে ওই তকমাটা নিজের পিঠে লাগিয়ে নিয়েছিলেন হাবিবুল বাশার। ৫০ টেস্ট খেলে তিনি ২৪ ফিফটি ও ৩ সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ৩০.৮৭ গড়ে ৩০২৬ রান করেছেন। প্রথম বাংলাদেশী ব্যাটসম্যান হিসেবে তিন হাজার রান করার গৌরবটা অর্জন করেছিলেন হাবিবুল। বাংলাদেশের পক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে সর্বাধিক ফিফ তারই দখলে। এখন পর্যন্ত সেখানে আর কোন বাংলাদেশী ক্রিকেটার পৌঁছতে পারেননি। তবে হাবিবুলের শীর্ষে থাকার সময় শেষ হতে চলেছে। বেশ দ্রুতগতিতে এগিয়ে আসছেন তামিম। ফর্মের তুঙ্গে থাকা এ ওপেনার যেভাবে রান করছেন তাতে সবাই তাকিয়ে আছে তাকে নতুন এক চূড়ায় উঠতে দেখার। তামিম একের পর এক মাইলফলক ছুঁয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসকে করছেন সমৃদ্ধ। হাবিবুলকে ছাড়িয়ে যাওয়ার জন্য তার প্রয়োজন ৫৩ রান। তাহলেই উঠে যাবেন অনন্য উচ্চতায়। ৩৮ টেস্ট খেলেই সর্বাধিক ৭ সেঞ্চুরি ও ১৭ হাফসেঞ্চুরি করেছেন। ৪০.১৮ গড়ে রান ২৯৭৪! ২০০৮ সালে অবসর নেয়া হাবিবুলের সর্বাধিক রান করার রেকর্ডটা ৭ বছর পর ভেঙ্গে যেতে চলেছে। এতে বরং আনন্দিত বর্তমানে জাতীয় নির্বাচক হাবিবুল। তিনি বলেন, ‘আমি চাই তামিম আমাকে টপকে যাক এবং সেটা এ সিরিজেই। আমার তো মনে হয় সে শুধু তিন হাজার নয়, দশ হাজার রান করবে। এটা আরও আগেই কারও টপকে যাওয়া উচিত ছিল। সেটা এতদিন হয়নি। আশা করব ভবিষ্যতে তামিম যা করবে তাকেও টপকে যাওয়ার মতো ৪/৫ ক্রিকেটার তৈরি হবে বাংলাদেশে।’ হাফসেঞ্চুরির দিক থেকে হাবিবুল ছাড়া তামিমের ওপরে শুধু সাকিব আল হাসান। ১৮ হাফসেঞ্চুরি করা সাকিব সমান ৩৮ টেস্টে ৩৯.২৫ গড়ে করেছেন ২৬৩০ রান। চতুর্থ সর্বাধিক রান টেস্টে বাংলাদেশের পক্ষে। স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ব্যাটিং গড়েও তামিম আছেন দুই নম্বরে। মুমিনুল হক সবার ওপরে এক্ষেত্রে। ১৩ টেস্টে ৬১.৮৫ গড়ে মুমিনুল করেছেন ১২৯৯ রান। ব্যাটিং গড়ে তার পরেই তামিম। তবে আপাতত তামিম তিন হাজারি ক্লাবে যোগ দিলে বাংলাদেশের পক্ষে দ্রুততম হিসেবেই তিনি সে ক্লাবে ঢুকবেন। কারণ তার নিকটে থাকা সাকিব ইতোমধ্যেই ৩৮ টেস্ট খেলেছেন। অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম ৪৪ টেস্ট খেলে ২৫৪৩ রান করে আছেন এরপরেই। তিন নম্বরে থাকা মোহাম্মদ আশরাফুল আবার ক্রিকেটে ফিরবেন কিনা সেটা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে। সেক্ষেত্রে হয় তো অনেক আগেই তিনিও হয়ে যেতে পারতেন তিন হাজারি ক্লাবের সদস্য। ৬১ টেস্ট খেলা আশরাফুলের রান ২৭৩৭। টেস্টে চার-ছক্কা হাঁকানোতেও তামিম সবার ওপরে ওঠার অপেক্ষায়। সর্বাধিক ৪০১ বাউন্ডারি আছে হাবিবুলের দখলে আর সর্বাধিক ৩৪ ছক্কা আছে মোহাম্মদ রফিকের। এরপরই তামিম। তার বাউন্ডারি সংখ্যা ৩৭০ এবং ছক্কা ২৭।
×