ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিএম কলেজে শিক্ষার্থী বহনের গাড়ি নেই ॥ নেয়া হচ্ছে অর্থ

প্রকাশিত: ০৪:৩১, ৬ মে ২০১৫

বিএম কলেজে শিক্ষার্থী বহনের গাড়ি নেই ॥ নেয়া হচ্ছে অর্থ

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ সরকারী ব্রজমোহন (বি.এম) কলেজের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য কলেজের তিনটি বাসের মধ্যে দুটি বাসই গত ৮ বছর ধরে অচল থাকলেও সচল রয়েছে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে গাড়ি সংক্রান্ত খাতের অর্থ আদায়। এ নিয়ে কলেজের অধিকাংশ শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কলেজের অর্থনীতি বিভাগ থেকে চলতি বছর সম্মান পাস করেছেন বানারীপাড়ার দিনমজুর হাসমত আলীর কন্যা ইসরাত জাহান। বাবার অর্থ সঙ্কটের কারণে তার কলেজের কাছাকাছি কোন মেসে থাকা কিংবা প্রতিদিন গাড়ি ভাড়া দিয়ে ক্লাসে আসা সম্ভব হয়নি। কিন্তু গত চার বছরে কলেজের নির্ধারিত সব অর্থ পরিশোধ করতে হয়েছে তাকে। এর মধ্যে চার পরীক্ষার সময় কেবল গাড়ি ক্রয় ও মেরামত বাবদ তাকে দিতে হয়েছে নয় শ’ টাকা। কিন্তু কলেজের গাড়ি তিনি কখনও চোখেও দেখেননি। কলেজের বানারীপাড়া রুটের গাড়িটি গত এক যুগ ধরে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ রয়েছে। সম্মান শেষ বর্ষের ফরম পূরণের জন্য এক হাজার টাকার বন্দোবস্ত করতে এক মাস অন্যের দোকানে কাজ করতে হয়েছিল বিএম কলেজের ইংরেজী বিভাগের ছাত্র অভিজিত কর্মকারকে। সম্মানে ভাল ফলাফলও করেছেন তিনি। অভিজিত জানালেন, চার বছরে কোনদিনই তাদের গৌরনদী রুটে বিএম কলেজের গাড়িটিকে চলাচল করতে দেখেননি। ৮ বছর ধরে ওই রুটের কলেজের গাড়িটি বন্ধ রয়েছে। কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ভর্তির সময় প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে গাড়ি সংক্রান্ত খাতে ১০০ টাকা করে আদায় করায় গত আট বছরে ভর্তি হওয়া ৩৬ হাজার শিক্ষার্থীর (প্রতিবছর ভর্তির নির্ধারিত কোটা সাড়ে চার হাজার) কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে ৩৬ লাখ টাকা। অন্যদিকে পাস করে যাওয়া গত দুই ব্যাচের সাত হাজার শিক্ষার্থীর কাছ থেকে একই খাতে (প্রতিবছর ২০০ টাকা করে চার বছরে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৮০০ টাকা) আরও ৫৬ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে। এছাড়া একই খাতে সম্মান প্রথম বর্ষে অধ্যয়নরত (পরীক্ষার্থী) চার হাজার শিক্ষার্থীর কাছ থেকে আট লাখ টাকা (ফরম পূরণের সময়), দ্বিতীয় বর্ষের চার হাজার শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১৬ লাখ টাকা (প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষার সময় প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ২০০ করে ৪০০ টাকা), তৃতীয় বর্ষের চার হাজার শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ২৪ লাখ টাকা (প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার সময় প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ২০০ করে ৬০০ টাকা) আদায় করা হয়েছে। কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক ফজলুল হক বলেন, গাড়ি ক্রয় ও মেরামত বাবদ উত্তোলনকৃত সব অর্থই কলেজের হিসাবে জমা করা হয়। পরিবহন কমিটি গাড়ি মেরামতে এ অর্থ ব্যয় করে। দুটি গাড়ি বন্ধ থাকার কথা স্বীকার করে তিনি আরও বলেন, নতুন একটি গাড়ি ক্রয় করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে আরও গাড়ি ক্রয় করা হবে।
×