স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ তালুক গোলনা গ্রামের আব্দুর রশিদের স্ত্রী ইসমত আরা বেগম। তার স্বামী রিক্সা চালায় কুমিল্লায় । রবিবার বিকালে সে জলঢাকা সদরে বাপেরবাড়ি বেড়াতে এসে রাত যাপন করছিল। সোমবার সকালে খবর পেয়ে ছুটে এসে দেখতে পায় তার স্বামীর বাড়ির চারটি ঘরের একটিও নেই। ঘূর্ণিঝড়ে সম্পূর্ণ ভেঙ্গে গেছে। টর্নেডোর আঘাতে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার গোলনা ইউনিয়নের তালুক গোলনা গ্রামটিতে আহাজারি চলছে। নিঃস্ব হয়ে পড়েছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো। রবিবার রাতের এই টর্নেডোতে এই গ্রামের প্রায় চার শতাধিক পরিবারের সহ¯্রাধিক ঘরবাড়ি ও দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তালুক গোলনা রশিদুল ইসলাম চৌধুরী দাখিল মাদ্রাসা এবং তালুক গোলনা দক্ষিণটারি এবতেদায়ী মাদরাসা, শতশত গাছপালা,বাঁশবাগান ভেঙ্গে পড়েছে। মাটির সাথে মিশে গেছে উঠতি ফসল ভুট্টা ও বোরো ধান। ঘর ও গাছচাপা পড়ে আহত হয়েছে শতাধিক ব্যক্তি। জলঢাকা থানার ওসি মনিরুজ্জামান মনির জানান, খবর পেয়ে থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বাইরের লোকজনের সহায়তায় আহতদের উদ্ধার করে। আহতদের মধ্যে গোলনা ইউনিয়নের তালুক গোলনা গ্রামের ইউপি সদস্য সেলিম উদ্দিন, হুসেন আলীর স্ত্রী লাভলী বেগম, একরামুল হকের স্ত্রী ফরিদা বেগম, জাহেদুল ইসলামের স্ত্রী সোনালী বেগমসহ ২৫জনকে জলঢাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
সোমবার টর্নেডো ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মাঝে শুকনা খাবার বিতরণ করেন। এছাড়া স্থানীয় একটি কলেজের শিক্ষক ও ছাত্ররা চাঁদা তুলে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে খিচুড়ি বিলি করেছে। এ সময় সংসদ সদস্য বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের চূড়ান্ত তালিকার পর সরকারীভাবে সকল প্রকার সাহায্য প্রদান করা হবে। ওই গ্রামের অধির চন্দ্র অধিকারীসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, মাত্র এক মিনিটের টর্নেডোতে গ্রাম ল-ভ- হয়ে যেতে পারে তা স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। তারা জানায়, রবিবার রাত প্রায় ১০টার দিকে উত্তর-পূর্ব কোন থেকে আগুনের কু-লী আকারে প্রবল বেগে টর্নেডো এসে মাত্র এক মিনিটে তালুক গোলনা গ্রামটি ল-ভ- করে দিয়ে চলে যায়। ঘরবাড়ির পাশাপাশি গাছপালা ভেঙ্গে পড়ে ও উড়িয়ে নিয়ে গেছে টিউবঅয়েল । এমনকি পাকা ঘরের দেয়াল ভেঙ্গে দিয়েছে।
ঠাকুরগাঁওয়ে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান
নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও থেকে জানান, ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার বকুয়া ইউনিয়নে অবস্থিত চরভিটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে শ্রেণীকক্ষ ও বেঞ্চের সঙ্কট থাকায় বেহাল দশা দেখা দিয়েছে। ফলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নিচে মাটিতে বসেই চলছে কমলমতি পাঠদান। সম্প্রতি বৈশাখী ঝড়ে ল-ভ- হয়ে যায় বিদ্যালয়টি। অর্থের অভাবে শ্রেণীকক্ষ সংস্কার করতে না পারায় ৬ মাস ধরে খোলা আকাশের নিচে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম। বিদ্যালয়ের দুর্দশার বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরে জানানো হলে জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা অফিসারসহ বিভিন্ন দফতর থেকে কর্মকর্তাগণ বিদ্যালয়টিতে পরিদর্শনে আসেন। কিন্তু অদ্যাবধি সরকারীভাবে শ্রেণীকক্ষ নির্মাণে কোন উদ্যোগে নেয়া হয়নি।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: