ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

লন্ডন মেয়র বেকায়দায়

ব্রিটিশ এমপি প্রার্থী রূপা হককে নাজেহাল

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ৫ মে ২০১৫

ব্রিটিশ এমপি প্রার্থী রূপা হককে নাজেহাল

সালাম মশরুর সিলেট অফিস ॥ মেয়র বরিস জনসনের উপস্থিতিতে কনজারভেটিভ প্রার্থী এঞ্জি ব্রের সমর্থকরা লেবার দলের এমপি প্রার্থী ড. রূপা হককে হেনস্থা করার ঘটনা নিয়ে তোলপাড় হচ্ছে। এই ঘটনা নিয়ে লন্ডন মেয়র বরিস জনসন কঠিন সমালোচনার মুখে পড়েছেন। বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বিষয়টি রূপা হকের নির্বাচনী মাঠে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। রবিবার লন্ডনের আলোচিত আসন ‘ইলিং সেন্ট্রাল এ্যান্ড এ্যাকটন’ এ লেবার দলের এমপি প্রার্থী বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত রূপা আশা হক তার নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছিলেন। সেখানে কনজারভেটিভ প্রার্থী এঞ্জি ব্রের পক্ষে প্রচার চালাতে উপস্থিত হন লন্ডন মেয়র বরিস জনসন। রূপা হক ও বরিস জনসন মুখোমুখি হলে রূপা হক বরিসকে কিছু একটা বলতে চাইলে কনজারভেটিভ প্রার্থী এঞ্জি ব্রের এক সমর্থক পেছন থেকে তার মুখের সামনে লিফলেট তুলে ধরে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। এক পর্যায়ে এঞ্জি ব্রের সমর্থক পেছন থেকে রূপা হকের দুহাত টেনে ধরেন। ঘটনাটি তাৎক্ষণিক জানাজানি হলে সব আলোচনার ঝড় উঠে। ব্রিটেনের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সহবস্থান ও সম্মান জানানোর রীতিকে ধুলোয় মিশিয়ে দেয়ার মতো এমন ঘটনায় বেকায়দায় পড়েছেন মেয়র জনসন। ক্ষোভে ফুঁসছেন ব্রিটেনে বসবাসরত বাংলাদেশীরা। রূপা হক তার ভেরিফাইড ফেসবুকে তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন বরিস জনসনের মতো রাজনৈতিক ব্যক্তির সামনে এমন ঘটনা একটা বাজে ইতিহাসের জন্ম দিল। আমি আমার নির্বাচনী এলাকার জরুরী কিছু সমস্যা সমাধানের বিষয়ে মেয়রের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তার সমর্থকদের এমন আচরণের প্রতিবাদ না করায় আশাহত হয়েছি। মানুষ লন্ডনের মেয়রের কাছ থেকে ভাল কিছু আশা করে। উল্লেখ্য, গত নির্বাচনে কনজারভেটিভ দলের কাছে হারানো আসনটি ফিরে পেতে মরিয়া লেবার পার্টি। যে কারণে লেবার পার্টির পাশাপাশি দেশটিতে বসবাসকারী বাংলাদেশীরাও আশা করছেন রূপাকে নিয়ে। গত নির্বাচনে পরাজিত হওয়া লন্ডনের যে ১২ আসন লেবার দল এবার ফিরে পেতে চায় এর মধ্যে সবার শীর্ষে রূপা হকের ওই আসনটি। আবার লন্ডনের তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ১০ আসনের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে এই আসন। দলের অন্যতম একটি ‘টার্গেট সিটে’ প্রার্থী হওয়ার কারণে বাড়তি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে রূপাকে। লন্ডনের ইলিং-এ জন্ম রূপার। এখানেই তিনি বড় হয়েছেন। ওই এলাকার স্কুলে পড়েছেন। এখন পরিবার নিয়ে সেখানেই থাকছেন এবং ইলিং সেন্ট্রাল এ্যান্ড এ্যাকটন তার নিজের নির্বাচনী এলাকা। ক্যামব্রিজে পড়ুয়া রূপা হক কিংস্টন ইউনিভার্সিটির শিক্ষক। তিনি ইলিং বারার ডেপুটি মেয়র ও ছিলেন। ইলিং সেন্ট্রাল এ্যান্ড এ্যাকটন আসনে গতবার তিন হাজার ৭১৬ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন রক্ষণশীল দলের এঞ্জি ব্রের। ওইবার ১৪ হাজার ২২৮ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছিল লেবার দল। এঞ্জি ব্রের এবারও আসনটিতে রক্ষণশীল দলের প্রার্থী হয়েছেন। ব্রিটেনের সংবাদ মাধ্যম ও বিভিন্ন জরিপের ফলাফলে এই আসনে এখন পর্যন্ত এগিয়ে আছেন রূপা। রূপা হক নাজেহাল হওয়ার ঘটনায় ব্রের সেই টোরিকর্মীকে সরে যেতে বলেছেন এবং লেবার নেতা হকের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তবে রূপা হকের দাবি, এ ঘটনায় মেয়র বরিস জনসনকেও ক্ষমা চাইতে হবে।
×