ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দেশটির মূলধারার তিন দল থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এরা

ব্রিটেনে ভোটের মাঠে লড়াইয়ে নেমেছেন ১২ বাংলাদেশী

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ৪ মে ২০১৫

ব্রিটেনে ভোটের মাঠে লড়াইয়ে নেমেছেন ১২ বাংলাদেশী

সালাম মশরুর, সিলেট অফিস ॥ ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্সের সাধারণ নির্বাচন ৭ মে। দিন যত ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে নির্বাচনী উত্তাপ। সুদূর ব্রিটেন থেকে নির্বাচনী ঢেউ ছড়াচ্ছে সিলেটের প্রবাসী অঞ্চলে। এবার সর্বাধিক বাংলাদেশী প্রার্থী প্রতিযোগিতায় আসায় দেশে-বিদেশে বাংলাদেশীদের মধ্যে ভিন্ন আমেজ উৎসবের সৃষ্টি হয়েছে। ব্রিটেনের পাশাপাশি দেশেও চলছে প্রচার অভিযান। নিজেদের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে অংশ নিতে বাংলাদেশ থেকে অনেকেই ইতোমধ্যে পাড়ি জমিয়েছেন লন্ডনে। এবার নির্বাচনে দেশটির মূলধারার প্রধান ৩টি দল থেকে লড়ছেন ১২ ব্রিটিশ বাংলাদেশী প্রার্থী। এর মধ্যে ইংল্যান্ড থেকে ১০ এবং স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলস থেকে ১ জন করে এমপি প্রার্থী হয়েছেন। এমপি পদে ১২ বাংলাদেশী প্রার্থীর মধ্যে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি থেকে ১ জন, প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টি থেকে ৮ জন এবং লিবারেল ডেমোক্রেট পার্টি থেকে প্রার্থী হয়েছেন ৩ জন বাংলাদেশী। ব্রিটিশ বাংলাদেশীদের প্রত্যাশা, এবারের নির্বাচনে একাধিক প্রার্থী বিজয় লাভ করে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বাংলাদেশীদের প্রতিনিধিত্ব শক্তিশালী করবেন। আর এমন প্রত্যাশা থেকেই প্রবাসী বাংলাদেশীরা প্রার্থীর বিজয় দেখতে উদগ্রীব। বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ১২ জনের মধ্যে সিলেট বিভাগে জন্মগ্রহণকারী প্রার্থীর সংখ্যা ১০ জন। সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়ে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ব্রিটেনের পার্লামেন্টে পা রাখেন সিলেটের রুশনারা আলী। এর পূর্বেও বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, কিন্তু সফল হতে পারেননি। ২০১০ সালে লেবার পার্টির মনোনয়ন নিয়ে রুশনারা আলী নির্বাচিত হলে শুরু হয় ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বাংলাদেশীদের পদচারণা। রুশনারা আলী নির্বাচিত হয়েছিলেন বাংলাদেশীদের প্রাণকেন্দ্র পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রীন এ্যান্ড বো আসন থেকে। রুশনারা আলীর বিজয় দিয়ে ২০১০ সালে প্রথমে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বাংলাদেশীদের প্রবেশের সুযোগ হলেও এরও পূর্বে ব্রিটেনের হাউস অব লর্ডসের সদস্যসহ বিভিন্ন কাউন্সিলের কাউন্সিলর ও মেয়র পদে নির্বাচিত হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন বাংলাদেশীরা। এবার রেকর্ডসংখ্যক প্রার্থীর কারণে সাড়া পড়েছে ব্যাপক হারে। তাই সাত সমুদ্র তের নদীর ওপারের নির্বাচনের ঢেউ লেগেছে প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটে। বাংলাদেশী প্রার্থীদের বিজয়ে সেখানকার প্রবাসীরা প্রচার চালাচ্ছেন রাত-দিন। এর অংশ হিসেবে সিলেটেও প্রচারণা চলছে প্রবাসীদের আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে। সিলেটে বসবাসরত আত্মীয়স্বজনদের ‘ম্যানেজ’ করে প্রবাসী ভোটারদের সমর্থন আদায়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থীদের সমর্থক ও স্বজনরা। ব্রিটেনের পার্লামেন্টে অংশ নেয়া সিলেটী প্রার্থীরা হলেনÑ লেবার পার্টির রুশনারা আলী, ব্যারিস্টার আনোয়ার বাবুল মিয়া, ফয়সল চৌধুরী, ড. রূপা আশা হক, সুমন হক, আলী আখলাকুল, কনজারভেটিভ পার্টির মিনা রহমান, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির আশুক আহমদ, প্রিন্স সাদিক চৌধুরী ও মোহাম্মদ সুলতান। ব্রিটেনের নির্বাচনকে ঘিরে সিলেট বিভাগের প্রবাসী অধ্যুষিত উপজেলাগুলোতে এখন বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। প্রবাসীরা দলবদ্ধ হয়ে সিলেটে এসে তাদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন। প্রবাসী পরিবারের সদস্যদের কাছে দোয়া চেয়ে ‘সিলেটী প্রার্থীদের’ পক্ষে ব্রিটেনে থাকা তাদের আত্মীয়স্বজনদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা-তদ্বির করছেন। কয়েকজন প্রার্থীর সমর্থকরা বিভিন্ন স্থানে আনুষ্ঠানিকভাবে মতবিনিময় সভারও আয়োজন করেছেন। ভোটারদের আত্মীয়স্বজনদের দ্বারে দ্বারে যাওয়া ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে ব্যাপক প্রচারণা। বাংলাদেশী প্রার্থীদের মধ্যে রুশনারা আলী, টিউলিপ সিদ্দিক, রূপা আশা হক উজ্জ্বল অবস্থানে রয়েছেন। নির্বাচনী মাঠে তারা অনেক দূর এগিয়ে গেছেন। রুশনারা আলী ॥ ব্রিটেনে নির্বাচনে অংশ নেয়া সিলেটী প্রার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে ভাল অবস্থানে রয়েছেন লেবার পার্টি থেকে পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রীন এ্যান্ড বো আসন থেকে প্রার্থী রুশনারা আলী। ১৯৭৫ সালে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার ভুরকি গ্রামে জন্মগ্রহণকারী রুশনারা আলী ৭ বছর বয়সে বাবা-মার সাথে ব্রিটেনে পাড়ি জমান। অক্সফোর্ডের ডিগ্রীধারী রুশনারা বেশকিছু দিন শ্যাডো ডিএফআইডি মিনিস্টার ও লেবার পার্টির সাউথ এশিয়াবিষয়ক মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর ছিলেন শ্যাডো এডুকেশন মিনিস্টার। ইরাকে সামরিক হামলায় লেবারপার্টি সমর্থন দেয়ায় রুশনারা শ্যাডো মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করে আলোচিত হন। এখানে উল্লেখ্য, জর্জ গ্যালওয়ে ২০০৫ সালে বেথনাল গ্রীন এ্যান্ড বো থেকে এমপি নির্বাচিত হন। নির্বাচনের প্রাক্কালে তিনি বাংলাদেশীদের জন্য আগামীতে এ আসনটি ছেড়ে দিয়ে দ্বিতীয়বার না দাঁড়ানোর অঙ্গীকার করেছিলেন। ফলে ওই আসনে অধিকসংখ্যক বাংলাদেশীর সমর্থন নিয়ে তিনি লেবার পার্টির শক্তিশালী এমপি ওনাকিংকে পরাজিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। পরবর্তীতে জর্জ গ্যালওয়ে এমপি তার কথা রেখেছেন। দ্বিতীয়বার এ আসনে তিনি আর প্রার্থী হননি। এটিই ছিল ব্রিটিশ বাংলাদেশীদের জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট। জর্জ গ্যালওয়ে সরে দাঁড়ানোতে ২০১০ সালের নির্বাচনে লেবার পার্টি বাংলাদেশী প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে বাধ্য হয়। শুরু হয় ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বাংলাদেশীদের পদচারণা। সিলেটের রুশনারা আলী নির্বাচিত হয়েছিলেন অধিকসংখ্যক বাংলাদেশীদের অবস্থানস্থল পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রীন এ্যান্ড বো আসন থেকে। এবারও এ আসন থেকে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। টিউলিপ সিদ্দিক ॥ তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি। বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ রেহানার কন্যা। রক্তে বইছে তার রাজনীতির স্রোত। তবে সেখানে তিনি পরিবারের পরিচয়ে পরিচিত নন। তার নিজের দক্ষতা ও যোগ্যতা তাকে ব্রিটেনের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বিলেতের রাজনীতিতে প্রতিশ্রুতিশীল একটি নাম টিউলিপ সিদ্দিক। ব্রিটেনের বর্তমান নির্বাচনে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ১০টি আসনের অন্যতম হচ্ছে হ্যাম্পস্ট্যাড এ্যান্ড কিলবার্ন। আলোচিত এ আসনে প্রার্থী হয়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক। গত ২৩ বছর ধরে এ আসনটিতে টানা এমপি নির্বাচিত হয়ে আসছিলেন অস্কার বিজয়ী বিখ্যাত অভিনেত্রী গেলন্ডা জ্যাকসন। ২০১০ সালের নির্বাচনে মাত্র ৪২ ভোট বেশি পেয়ে লেবার পার্টি থেকে নির্বাচিত হন তিনি। ওই নির্বাচনে ব্রিটেনে সবচেয়ে কম ভোটের ব্যবধানে ফলাফল নির্ধারণের আসন ছিল এটি। এবার ব্যবধান গুছিয়ে আসনটি জিতে নিতে প্রাণপণ লড়াইয়ে নেমেছে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি। আর যে কোন মূল্যে লেবার পার্টিও জয়ের ধারা ধরে রাখতে চায়। দলটির নতুন প্রার্থী টিউলিপ সিদ্দিক রীতিমতো চ্যালেঞ্জ নিয়ে ভোটের মাঠে প্রচার চালাচ্ছেন। হ্যাম্পস্ট্যাড এ্যান্ড কিলবার্ন আসনে প্রায় ৮০ হাজার ভোটার রয়েছেন। ২০১০ সালে লেবার পার্টির প্রার্থী গ্লেন্ডা জ্যাকসন ১৭ হাজার ৩৩২ ভোট পেয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলে। ২৩ বছর এমপি থাকার পর গ্লেন্ডা বার্ধক্যজনিত কারণে এবার অবসরের ঘোষণা দেন। ফলে আসনটিতে এমপি প্রার্থী হওয়ার সুযোগ আসে টিউলিপের। ২০১৩ সালের জুলাই মাসে লেবার পার্টির স্থানীয় সদস্যদের ভোটে টিউলিপ হ্যাম্পস্ট্যাড এ্যান্ড কিলবার্ন আসনে লেবার পার্টির মনোনয়ন লাভ করেন। শেখ রেহানা ও শফিক সিদ্দিকীর মেয়ে টিউলিপ লন্ডনের মিচামে জন্মগ্রহণ করেন। তার শিশুকাল কেটেছে ব্রুনেই, বাংলাদেশ, ভারত এবং সিঙ্গাপুরে। লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে পলিটিক্স, পলিসি ও গভর্নমেন্ট বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রীধারী টিউলিপ সিদ্দিক মাত্র ১৬ বছর বয়সেই লেবার পার্টির সদস্য হন। ২০১০ সালে লন্ডন বারা অব ক্যামডেন কাউন্সিলে প্রথম বাংলাদেশী মহিলা হিসেবে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন টিউলিপ সিদ্দিক। পরে কাউন্সিলের সংস্কৃতিবিষয়ক কেবিনেট মেম্বারের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, গ্রেটার লন্ডন অথরিটি ও সেভ দ্য চিলড্রেন ফান্ড চ্যারিটির সাথে কাজ করেন টিউলিপ। লেবার পার্টির লিডার মিলিবান্ডের লিডারশিপ ক্যাম্পেনে কাজ করেন তিনি। এছাড়া সাবেক এমপি উনা কিং, এমপি সাদিক খান, হ্যারি কোহেনের সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন টিউলিপ সিদ্দিক ২০০৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নির্বাচনী ক্যাম্পেনেও অংশ নেন। টিউলিপ সিদ্দিক লন্ডনের ক্যামডেন এ্যান্ড ইজলিংটন এনএইচএস ট্রাস্টের (ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস) গভর্নর, রয়েল সোসাইটি অব আর্টের একজন ফেলো এবং কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট এ্যাসোসিয়েশনের একজন সদস্য। স্থানীয় পত্রিকা হ্যাম্পস্ট্যাড ও হাইগেট এক্সপ্রেসের নিয়মিত লেখক টিউলিপ সিদ্দিক। ব্রিটেনের প্রভাবশালী এক শ’ বাঙালীর তালিকায় নাম রয়েছে তার। ব্যক্তিগত জীবনে টিউলিপ সিদ্দিক বিবাহিত এবং লন্ডনের ওয়েস্ট হ্যাম্পস্ট্যাডে বাস করছেন। ২০১০ সালের নির্বাচনে হ্যাম্পস্ট্যাড এ্যান্ড কিলবার্নে লেবার, কনজারভেটিভ এবং লিবারেল পার্টির মধ্যে ত্রিমুখী লড়াই হয়েছিল। এবারও ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে বলে নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারীরা মনে করছেন। এ আসনে টিউলিপের সাথে লড়বেন কনজারভেটিভ দলের সায়মন মার্কস এবং লিবারেল পার্টির প্রার্থী পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত মাজিদ নাওয়াজ। সংবাদপত্রের সাথে আলাপকালে টিউলিপ বলেন, এমন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন খুবই চ্যালেঞ্জিং। তবে কনজারভেটিভ পার্টি দেশকে যে নাজুক অবস্থায় নিয়ে এসেছে। তাতে জনগণ তার দল লেবার পার্টির দিকেই আবার ফিরে আসবে। ব্যারিস্টার আনওয়ার বাবুল মিয়া ॥ লন্ডনের অদূরে ওয়েলউইন এ্যান্ড হ্যাটফিল্ড আসনে লেবার পাটির প্রার্র্থী বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্যারিস্টার আনওয়ার বাবুল মিয়া। এ আসনে তার সাথে লড়ছেন ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির চেয়ারম্যান মন্ত্রী গ্রান্ট শ্যাপ। ২০০৫ সাল থেকে তিনি টানা এমপি নির্বাচিত হয়ে আসছেন। তবে অতীতের রেকর্ড বলছে আসনটিতে কনজারভেটিভ বা লেবার যে কারও বিজয় ঘটতে পারে। ২০০৫ সাল থেকে এখানে কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী বিজয়ী হয়ে আসছেন। ২০১০ সালের নির্বাচনে গ্রান্ট শ্যাপ প্রায় ১৭ হাজার ভোটের ব্যবধানে লেবার পার্টির প্রার্থী মাইক হাবডিকে পরাজিত করেন। এবার এ আসন থেকে ব্যারিস্টার আনওয়ার বাবুল মিয়া লেবার পার্টির প্রার্থী। বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত প্রার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে ব্যতিক্রমধর্মী নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন আনওয়ার। নিজের মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার পরই তিনি ক্রয় করেন একটি পাবলিক বাস। সেই বাসের চর্তুদিকে দলের লোগো এবং নিজের ছবি ডিজাইন করে বাস নিয়ে যাচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। ব্যারিস্টার আনওয়ার বাবুলের জন্ম ১৯৭২ সালে সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুরে। তিনি ছোটবেলায় তার মা-বাবার সাথে বিলেতে পাড়ি জমান। নর্দাম্পটন শহরে বেড়ে উঠা আনওয়ার বাবুল মিয়া আইন পেশায় উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯৯৮ সালে তিনি ব্যারিস্টার ডিগ্রী নেন। ‘হুজ হু ইন দ্য ল‘ লিগ্যাল ডিরেক্টরিতে ব্রিটেনের ৫শ’ কোম্পানির তালিকায় ব্যারিস্টার আনওয়ার বাবুল মিয়ার নাম উঠে এসেছে। ২০০২ সাল থেকে বাংলাদেশের সুপ্রীমকোর্টের একজন আইনজীবী তিনি। ব্রিটেনে তিনি অনেক হাই প্রোফাইল মামলায় প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত। তার স্ত্রীও একজন ব্যারিস্টার এবং সেন্ট আলবান্স শহরে তার নিজস্ব সলিসিটর ফার্ম পরিচালনা করেন। মিনা রহমান ॥ বার্কিং আসন থেকে কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী মিনা রহমান। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির একমাত্র প্রার্থী বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত প্রার্থী মিনা রহমান। লন্ডনের বার্কিং আসনে লড়বেন তিনি। লেবার পার্টিও নিরাপদ আসন হিসেবে পরিচিত এই এলাকায় বাংলাদেশীসহ এথনিক কমিউনিটির মানুষের বসবাস বেশি। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করতে চান মিনা রহমান। এ আসনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশীসহ এথনিক কমিউনিটির মানুষের বসবাস। ১৯৯০ সাল থেকে এ এলাকায় বাংলাদেশীসহ আফ্রিকান, সোমালিয়ান, ভারতীয়, পাকিস্তানীদের বসবাস বাড়ছে। এখান থেকেই এবারের জাতীয় নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টি থেকে একমাত্র বাঙালী এমপি প্রার্থী হচ্ছেন মিনা রহমান। বার্কিং আসনে বর্তমানে লেবার দলীয় এমপি রয়েছেন। গত নির্বাচনে লেবার পার্টির সাবেক মন্ত্রী মার্গারেট হজ ৫৪ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন। তিনি এ আসনে ১৯৯৪ সাল থেকে এমপি হিসেবে টানা নির্বাচিত হয়ে আসছেন। গতবার এই আসনে কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী ছিলেন সায়মন মার্কাস। তিনি ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। আর এবার শক্তিশালী প্রার্থী মার্গারেট হজের সাথে লড়বেন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত মিনা রহমান। সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় মিনা রহমানের জন্ম। তিনি দীর্ঘদিন থেকে পরিবারের সাথে লন্ডনে বসবাস করছেন। মিনা রহমান দাবি করেন, কনজারভেটিভ পার্টি ‘রাইট টু বাই’ পলিসির কারণে ব্রিটেনে বাংলাদেশী তথা ইমিগ্রান্টরা বাড়ির মালিক হতে পেরেছেন। প্রিন্স সাদিক চৌধুরী ॥ ব্রিটেনের তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল লিবারেল ডেমোক্রেট থেকে এবারের নির্বাচনে নর্দাম্পটন শহরের একটি আসনে প্রার্থী হয়েছেন প্রিন্স সাদিক চৌধুরী। তার নির্বাচনী আসনের নাম সাউথ নর্দাম্পটন। সাদিক চৌধুরী প্রথম কোন বাংলাদেশী যিনি এই শহরে এমপি পদে মনোনয়ন পেলেন। নর্দাম্পটন ব্রিটেনের সাউথ মিডল্যান্ড এলাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর। ১৯৭৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচনের আগে নর্দাম্পটন শহরকে দুই ভাগে বিভক্ত করে নর্দাম্পটন নর্থ এবং নর্দাম্পটন সাউথ দুটি আসনে বিভক্ত করা হয়। এ আসনে ১৯৭৪ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত কনজারভেটিভ দলের দখলে ছিল। ১৯৯৭ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত এ আসনটি লেবার পার্টি তাদের দখলে রাখে। এ আসনের বর্তমান এমপি কনজারভেটিভ পার্টির ব্রায়ান বিনলি। এটি কনজারভেটিভ পার্টির একটি নিরাপদ আসন। এবার এ আসনে কোয়ালিশন সরকারের শরিক দল লিবারেল ডেমোক্রেট পার্টির হয়ে লড়বেন সাদিক চৌধুরী। ২০০৭ সালে লিবারেল ডেমোক্রেট থেকে নর্দাম্পটন কাউন্সিলের একমাত্র বাঙালী কাউন্সিলর নির্বাচিত হন সাদিক চৌধুরী। দীর্ঘ দুই যুগ ধরে তিনি এ দলের একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী হিসেবে কাজ করে আসছেন। তার দলের সাথে বাংলাদেশী কমিউনিটির একটি ভাল পরিচিতি আছে নর্দাম্পটন শহরে। লিবারেল ডেমোক্রেট পার্টিকে এলাকায় জনপ্রিয় করে তুলতে তিনি জোর প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। পেশায় একজন ব্যবসায়ী সাদিক চৌধুরী ১৯৭৩ সালে সিলেট শহরে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র ২ মাস বয়সে তিনি মা বাবার সাথে ব্রিটেনে পাড়ি জমান। ৭০ এর দশকের প্রথমদিকে তার অভিভাবকরা নর্দাম্পটনে এলাকায় বসবাস শুরু করেন। নর্দাম্পটন বাংলাদেশী এ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী কমিটির সদস্য সাদিক চৌধুরী ইউনিভার্সিটি অব নর্দাম্পটনে লেখাপড়া করেন। এ শহরে প্রথমবারের মতো কোন দল বাংলাদেশী কমিউনিটি থেকে এমপি প্রার্থী দেয়ায় নতুন এক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সাদিক চৌধুরী বলেছেন, তার দল ব্রিটেনে একটি ইমিগ্রান্টবান্ধব দল। তাই বাংলাদেশী কমিউনিটি থেকে তিনি ব্যাপক সমর্থন আশা করছেন। ড. রুপা হক ॥ যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত কিংস্টন ইউনিভার্সিটির লেকচারার বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ড. রুপা হক লেবার পার্টির প্রার্থী হয়ে ইলিং সেন্ট্রাল এ্যান্ড একটন আসন থেকে নির্বাচন করছেন। তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আসনগুলোর মধ্যে এ আসন হচ্ছে দ্বিতীয় অবস্থানে। গতবার রীতিমতো লড়াই করে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির কাছে হেরে যান লেবার পার্টির প্রার্থী। এবার আসনটি ফিরিয়ে আনতে কঠোর পরিশ্রম করে চলেছেন রুপা হক। ইলিং সেন্ট্রাল হচ্ছে লন্ডন বারা অব ইলিংয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং একটন হচ্ছে লন্ডনের অন্যতম ডিস্ট্রিক্ট টাউন। এ দুটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ মিলে গঠিত হয়েছে ইলিং সেন্ট্রাল ও একটন নির্বাচনী আসন। এ এলাকাটিতে মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্তের বসবাস বেশি। এখানে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যাও বেশি। এ আসনে ২০১০ সালে নির্বাচনে বিজয়ী হোন কনজারভেটিভ পার্টিও এনগি ব্রে। তিনি সর্বমোট ভোট পেয়েছিলেন ১৭ হাজার ৯শ’ ৪৪ ভোট, যা নিকটতম লেবার পার্টির প্রার্থীর চেয়ে ৩ হাজার ৭শ’ ১৬ ভোট বেশি ছিল। এবারের নির্বাচনে লেবার পার্টি থেকে এ আসনে প্রার্থী হয়েছেন ড. রুপা হক। কিংস্টন ইউনির্ভাসিটির সোশ্যালজির সিনিয়র লেকচারারার রুপা হকের জন্ম ইলিংয়ে ১৯৭২ সালে। ষাটের দশকে তার মা-বাবা বিলেতে এসে বসবাস স্থাপন করেন। লেবার পার্টির প্রার্থী রুপা হক এক সময় ইলিং বারা কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়র ছিলেন। লেখক, কলামিস্ট, রাজনীতিবিদ রুপা হক ১৯৯৩ সালে ক্যামব্রিজ ইউনির্ভাসিটি থেকে পলিটিক্যাল, সোশ্যাল সায়েন্স ও আইন বিষয়ে গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯৯৯ সালে তিনি কালচারাল স্টাডিজের ওপর ইউনির্ভাসিটি অব ইস্ট লন্ডন থেকে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। রুপা হক ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটিতেও দীর্ঘদিন লেকচারারের দায়িত্ব পালন করেন। ড. রুপা হক ১৯৯১ সালে লেবার পার্টির সদস্যপদ গ্রহণ করেন। রুপা ব্রিটেনের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক গার্ডিয়ান, সানডে অবজারভার ও ট্রিবিউন পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লিখেন। আশুক আহমদ ॥ রাজধানী লন্ডনের সবচেয়ে পাশ্ববর্তী শহর লুটনে প্রার্থী হয়েছেন সিলেটের বিয়ানীবাজারের কৃতীসন্তান আশুক আহমদ এমবিই। তিনি প্রথম বাংলাদেশী, যিনি লুটন সাউথ আসন থেকে মনোনয়ন পেলেন। যুক্তরাজ্যের বেডফোর্ডশায়ার এলাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ আসন হচ্ছে লুটন সাউথ। লুটন ইস্ট আসন থেকে ভেঙ্গে ১৯৮৩ সালে এটিকে লুটন সাউথ আসন করা হয়। এ আসনটিতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশী বসবাস করেন। প্রায় ৭০ হাজার ভোটার সংবলিত এলাকায় ২০১০ সালের জাতীয় নির্বাচনে লেবার পার্টির গ্যাবিন সুকার এমপি নির্বাচিত হন। এবার আশুক আহমদ এমবিই বিজয়ী হয়ে এই আসনটি তার দল লিবডেম পার্টিকে উপহার দিতে চান। এমরান হোসেইন ॥ ব্রিটেনের লেবার দলের এমপি প্রার্থী বাংলাদেশী এমরান হোসেইন। ব্রিটেনে বর্তমান প্রজন্মের শীর্ষ মেধাবীদের একজন এমরান হোসেইন ২০০৩ সালের দেশটির বিজিএসসি পরীক্ষায় রেকর্ড সৃষ্টিকারী ফলাফল অর্জন করেছিলেন। অক্সফোর্ড গ্র্যাজুয়েট এমরানের ডারহাম বিশ^বিদ্যালয়, ভারতের মুম্বাই বিশ^বিদ্যালয় এবং চীনের সাংহাই বিশ^বিদ্যালয়ের ডিগ্রী ছাড়াও আমেরিকার বিখ্যাত স্কলারশিপ প্রোগ্রাম ফুলব্রাইটে নাম রয়েছে এমরানের। এমন মেধাবী ব্রিটিশ বাংলাদেশী এবার ভোটের মাঠে। ব্রিটেনের নর্থ হ্যাম্পশায়ার আসন থেকে এবার মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি। ব্রিটেনের সবচেয়ে কম বয়েসী প্রার্থী এমরানের বয়স মাত্র ২৯ বছর। বাংলাদেশী প্রার্থীদের মধ্যে সবশেষে মনোনয়ন পেয়েছেন এমরান হোসেইন। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি লেবার পার্টি এমপি পদে তার মনোনয়ন নিশ্চিত করে। ফয়সল চৌধুরী ॥ হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার বদরদি গ্রামের সন্তান ফয়ছল চৌধুরী। মাত্র ৭ বছর বয়সে পরিবারের সাথে তিনি ব্রিটেনে পাড়ি জমান। ২০০৪ সালে তরুণ বয়সেই ব্রিটিশ রানী কর্তৃক ‘এমবিই’ খেতাবে ভূষিত হন তিনি। তিনিও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন লেবারপার্টির প্রার্থী হিসেবে। সুমন হক ॥ স্কটল্যান্ডের এ্যাবার্ডিনশায়ারের বেন্ফ এ্যান্ড বুখান আসনে লেবার দলের মনোনয়ন পেয়েছেন সুনামগঞ্জের ছাতকের সুমন হক। তিনি ১০ বছর ধরে স্কটিশ লেবার দলের সদস্য। আলী আখলাকুল ॥ লুটনের রিগেইট এ্যান্ড বেনস্ট্যাড আসনে চারজন প্রতিযোগীকে পরাজিত করে লেবার দলের প্রার্থী নির্বাচিত হন আলী আখলাকুল। লুটনে জন্ম নেয়া আখলাকুলের বাড়ি সিলেটের বালাগঞ্জে। মেরিনা আহম্মদ ॥ ব্যারিস্টার মেরিনা আহমেদ বৃহত্তর লন্ডনের বেথেলহাম আসন থেকে লেবার পার্টির প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন। তিনি ৩০ বছর যাবত লেবার পার্টির সদস্য। তার এ আসনটি কনজারভেটিভ পার্টির একটি নিরাপদ আসন। বিলেতে সিলেটীদের প্রথম যাত্রা ॥ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় এ দেশ থেকে বেশকিছু লোক ব্রিটেনে পাড়ি জমান। পরবর্তীতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ক্ষতিগ্রস্ত ব্রিটেনকে গড়ে তুলতে শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৫ এই সময়ে সিলেট থেকে আরও অধিক সংখ্যক লোক ব্রিটেনে যাওয়ার সুযোগ পান। ১৯৬২ সালের পূর্ব পর্যন্ত ভিসার কোন প্রয়োজন ছিল না, শুধু একটি পাসপোর্ট হলেই লন্ডন যাওয়ার সুযোগ পাওয়া যেত। সর্বপ্রথম কমনওয়েলভুক্ত দেশের নাগরিকরা এ সুবিধা পেয়েছেন। যুদ্ধের পর অবাধে লোক প্রবেশের লাগাম টেনে ধরতে আইন পাস করে ভিসা পদ্ধতি চালু করা হয়। এ সময় ৫০ পয়সার একটি ফরম পূরণ করে রেস্টুরেন্ট ও বয় ভাউচার পদ্ধতিতে ব্রিটেনে লোকজন যেতে শুরু করেন। ’৭৬-৭৭ সাল থেকে ব্রিটেনে বসবাসকারীরা তাদের নিজের পরিবারের সদস্যদের সেখানে নেয়ার সুযোগ পান। ’৭০ দশকে বাংলাদেশী মালাকানাধীন প্রথম রেস্টুরেন্ট আল ফাত্তা চালু হয়। ওই দশকে ব্রিটেনের ব্রাডফোর্ড সিটি থেকে প্রথম কাউন্সিলর নির্বাচিত হন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার মনোওয়ার হোসেন। ১৯৮৬ সালের পর নিউক্যাসল ফেনহ্যাম ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন সিলেট নগরীর মধুশহীদ এলাকার ওয়াহিদ উদ্দিন। লন্ডনের হ্যাকমি বারা কাউন্সিলের কাউন্সিলর নির্বচিত হয়ে ১৯৮৮ সালে কাউন্সিলরদের ভোটে প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন সৈয়দ নসর উল্লা।। ১৯৯৫-৯৬ সালে লন্ডন টাওয়ার হ্যামলেটসের কাউন্সিলর হয়ে প্রথম বাঙালী মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন জগন্নাথপুরের গোলাম মর্তুজা। ১৯৯২ সালে সিলেটের পলা মঞ্জিলা ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ বলে খ্যাত হাউস অব লর্ডসের সদস্য মনোনীত হন। ১৯৯০-১৯৯৪ সালে সিলেটের গোলাপগঞ্জের রমিজ আলী ব্রিটেনের লুটন কাউন্টি কাউন্সিলের কাউন্সিলর ছিলেন। ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন পর্যায়ে বাংলাদেশীদের নেতৃত্বের পরিধি বৃদ্ধি পেতে থাকে। ব্রিটেনে এখন ৬ লক্ষাধিক বাংলাদেশীর বসবাস। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ হচ্ছেন বৃহত্তর সিলেটের অধিবাসী। বর্তমানে প্রায় ১২ হাজার রেস্টুরেন্ট রয়েছে ব্রিটেনে, যা পরিচালনা করছেন সিলেট অঞ্চলের লোকেরা। এই রেস্টুরেন্ট ব্যবসার সাথে প্রায় ১ লাখ লোকের সম্পৃক্ততা রয়েছে। ব্রিটেনে লুৎফুর রহমান ॥ লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলে দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাহী মেয়র নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত রাজনীতিক লুৎফুর রহমান। কিন্তু তিনি তার ক্ষমতাকাল থাকতেই আদালতের রায়ে এখন অভিযুক্ত হয়ে ক্ষমতাহীন হতে বসেছেন। নানান অভিযোগ এনে আদালত তার বিরুদ্ধে রায় দেয়ায় তিনি এই পদে আর থাকতে পারছেন না। আগামী ১১ জুন আবারও টাওয়ার হ্যামলেটসে পুনরায় মেয়র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে লুৎফুর রহমানের পক্ষে প্রার্থী হচ্ছেন রাবিনা খান।
×