ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

এফবিসিসিআই নির্বাচন জমে উঠছে

প্রকাশিত: ০৩:৫১, ৪ মে ২০১৫

এফবিসিসিআই নির্বাচন জমে উঠছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ এফবিসিসিআইয়ের আগামী ২০১৫-১৭ দ্বিবার্ষিক পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনে তিনটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। সভাপতি প্রার্থী আবদুল মাতলুব আহমাদের নেতৃত্বে উন্নয়ন পরিষদ থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ প্যানেল, সংগঠনটির বর্তমান সিনিয়র সহসভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলীর নেতৃত্বে স্বাধীনতা ব্যবসায়ী পরিষদ (চেম্বার গ্রুপ) এবং সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসাইন-ড. কাজী এরতেজা হাসান ও শাফকাত হায়দারের নেতৃত্বে ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ (এ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ) নামে দুটি আংশিক প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। আংশিক এই দুই প্যানেল থেকে এখন পর্যন্ত কোন সভাপতি প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি। তবে সরাসরি ভোটে পরিচালক পদের নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর দুটি আংশিক প্যানেল থেকে যৌথভাবে একজন সভাপতিসহ দুজন সহসভাপতির নাম চূড়ান্ত করা হবে বলে জানা গেছে। এদিকে আগামী ২৩ মে এফবিবিসিআই নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হয়েছে। আর ২৫ মে সভাপতিসহ একজন সিনিয়র সহসভাপতি ও একজন সহসভাপতি পরিচালকদের ভোটে নির্বাচিত হবেন। ইতোমধ্যে চেম্বার ও এ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে দশজন করে মোট ২০ জন মনোনীত পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন। আর ভোটের মাধ্যমে সরাসরি ১৬ জন করে চেম্বার ও এ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে মোট ৩২ জন পরিচালক নির্বাচিত হবেন। রবিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে একই হোটেলে শনিবার স্বাধীনতা ব্যবসায়ী পরিষদের ব্যানারে চেম্বার গ্রুপের প্যানেল ঘোষণা করেন প্যানেল লিডার মনোয়ারা হাকিম আলী। রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, অর্থনীতির মূল ধারার সঙ্গে নারীকে সম্পৃক্ত করা এবং বর্তমান সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিতে এই প্যানেল দেয়া হয়েছে। এছাড়া গত বৃহস্পতিবার হোটেল পূর্বাণীতে উন্নয়নের অঙ্গীকার নিয়ে আবদুল মাতলুব আহমাদের নেতৃত্বে উন্নয়ন পরিষদের প্যানেল ঘোষণা করা হয়। ওই সময় প্রধান বক্তা হিসেবে মাতলুব আহমাদ বলেন, সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নিয়ে আসতে উন্নয়ন পরিষদ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এছাড়া শক্তিশালী এফবিসিসিআই গড়ে তুলতে তিনি ভোটারদের সমর্থন চান। উন্নয়ন পরিষদের এই প্যানেলে চেম্বার গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছেন ডেপুটি প্যানেল লিডার আলহাজ মোঃ বজলুর রহমান। এ্যাসোসিয়েশন গ্রুপে মোঃ হেলাল উদ্দিনকে ডেপুটি প্যানেল লিডার হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এদিকে এবার চেম্বার ও এ্যাসোসিয়েশন গ্রুপে ১৬টি করে মোট ৩২টি পদে সরাসরি নির্বাচন হবে। এ ৩২ পদের বিপরীতে চেম্বার গ্রুপ থেকে ৪৪ জন এবং এ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে ৪২ জনসহ মোট ৮৬ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তবে এখন ভোটের মাঠে রয়েছেন ৬৪ জন প্রার্থী। মনোয়ারা হাকিম আলীর চেম্বার গ্রুপের প্রার্থী ॥ চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বার থেকে মনোয়ারা হাকিম আলী, টাঙ্গাইল চেম্বারের আবুল কাশেম আহমেদ, লক্ষ্মীপুর চেম্বারের দেওয়ান সুলতান আহমেদ, বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, মোহাম্মদ কোহিনুর ইসলাম, তাবারাকুল তোসাদ্দেক হোসেন খান টিটু, আলহাজ মোহাম্মদ মাসুদ, হাসিন আহমেদ, মোঃ আমিনুল বারী, মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান, মাসুদ পারভেজ খান (ইমরান), তানজিল আহমেদ, হুমায়ূন রশিদ খান পাঠান, মোহাম্মদ আবুল ওয়াহেদ সরকার, আঞ্জুমান সালাউদ্দিন ও রেজা শাহ ফারুক। মনোয়ার হাকিম আলী বলেন, সরকার ঘোষিত রূপকল্প বাস্তবায়ন এবং দেশকে মধ্য আয়ের দেশে নিয়ে যেতে স্বাধীনতা ব্যবসায়ী পরিষদ কাজ করবে। তাঁর সঙ্গে যোগ করে আবুল কাশেম আহমেদ বলেন, স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে অর্থনীতির মূল ধারায় নিয়ে আসতে এই প্যানেল। ব্যবসায়ী উন্নয়ন পরিষদ ॥ এদিকে মাতলুব আহমাদের উন্নয়ন পরিষদের প্যানেলে মনোনীত চেম্বার গ্রুপের প্রার্থীরা হলেন নারায়ণগঞ্জ চেম্বার থেকে আলহাজ মোঃ বজলুর রহমান, প্রবীর কুমার সাহা, হাসিনা নেওয়াজ, একে এম সাহিদ রেজা, নাগিবুল ইসলাম দিপু, শেখ ফজলে ফাহিম, মোঃ হেলাল উদ্দিন চৌধুরী, আমিনুল হক শামীম, মোঃ আবুল খায়ের মুরসালিন পারভেজ, মাহবুবুর রহমান খাঁন, গাজী গোলাম আসরিয়া, নূরুল হুদা মুকুট, মোঃ নিজাম উদ্দিন, দীলিপ কুমার আগরওয়াল, আনোয়ার সাদত সরকার ও রেজাউল করিম রেজনু। চেম্বার গ্রুপের প্রার্থীদের প্রসঙ্গে ডেপুটি প্যানেল লিডার ও সহসভাপতি প্রার্থী মোঃ বজলুর রহমান বলেন, যোগ্যদের এই প্যানেলে নেয়া হয়েছে। আশা করছি নির্বাচনে সবাই ভাল করবেন। একটি শক্তিশালী এফবিসিসিআই গড়তে মাতলুব আহমেদ নেতৃত্বাধীন প্যানেল কাজ করবে। এছাড়া এ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে উন্নয়ন পরিষদের প্রার্থীরা হলেন-মোঃ হেলাল উদ্দিন, আবু মোতালেব, মোঃ সফিকুল ইসলাম ভরসা, মোঃ আবু নাসের, আলহাজ মোঃ নিজাম উদ্দিন রাজেস, রাব্বানী জব্বার, শোয়েব চৌধুরী, মোঃ মুনতাকিম আশরাফ, আলহাজ হারুন-অর রশিদ, মোঃ হাবিবুল্লাহ ডন, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, এনায়েত হোসেন চৌধুরী, কে এম আকতারুজ্জামান, মোঃ আমীন হেলালী, শামীম আহসান ও আব্দুর রাজ্জাক। এফবিসিসিআইয়ের সাবেক প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ আলী উন্নয়ন পরিষদের নির্বাচনী কৌশল নির্ধারণে প্রধান সমন্বয়ের ভূমিকা পালন করছেন। সভাপতি প্রার্থী আবদুল মাতলুব আহমাদকে জয়ী করতে সকল ভোটারদের কাছে ছুটে যাচ্ছেন প্রার্থী ও সমর্থকরা। এ কারণে ইতোমধ্যে জমে উঠেছে এফবিসিসিআই নির্বাচন। ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ থেকে যারা প্রার্থী হলেন ॥ সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, ড. কাজী এরতেজা হাসান, শাফকাত হায়দার চৌধুরী, খন্দকার রুহুল আমিন, মোঃ মিজানুর রহমান বাবুল, মোঃ জামিউল আহম্মেদ, মোঃ আলি জামান, ব্যারিস্টার জাকির আহাম্মদ, আবুল আয়েস খান, হাজী মোয়াজ্জেম হোসেন, মোঃ আসলাম আলী, এমজিআর নাসির মজুমদার, তাহের আহম্মেদ সিদ্দিক, মোঃ ইব্রাহিম, মোহাম্মদ উল্লাহ পলাশ এবং মাহমুদা মুস্তাকিম রুবি। ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ প্যানেলটিতে চেম্বার গ্রুপ থেকে কোন ব্যবসায়ীকে না রেখে শুধু এ্যাসোসিয়েশন গ্রুপের সদস্যদের রাখা হয়েছে। অর্থাৎ এ প্যানেল থেকে এফবিসিসিআইর সভাপতি পদের জন্য কেউ যোগ্য হবেন না। কারণ নিয়ম অনুযায়ী এবার চেম্বার গ্রুপ থেকে এফবিসিসিআইর সভাপতি নির্বাচিত হবেন। সংবাদ সম্মেলনে প্যানেলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরেন ড. কাজী এরতেজা হাসান। তিনি বলেন, দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে সাধারণ শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীরা দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে এফবিসিসিআইর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনের শেষ পর্যায়ে এসে যোগ দেন সংসদ সদস্য হাজী সেলিম। তিনি বলেন, এফবিসিসিআইর নির্বাচন করে লাভ কী। এই যে আপনার নেতা নির্বাচন করেন তারা কি কোন কথা বলেন? ব্যাংক মানুষকে হাত-পা বেঁধে পানিতে ফেলে দেয়। এফবিসিসিআই ব্যাংকের কথা বলে না। কারণ ওনারা ব্যাংকের মালিক। যারা ব্যবসায়ীদের কথা বলবেন তিনি তাদের ভোট দেয়ার আহ্বান জানান।
×