ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা

বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির প্রবণতা বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ৩ মে ২০১৫

বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির প্রবণতা বাড়ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কমছেই। টানা পতনের কারণে পুঁজি হারানোর শঙ্কায় হাতে থাকা শেয়ার বিক্রির প্রবণতা আরও বাড়ছে। যার কারণে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্যসূচক কমেছে ১৪৪.৯২ পয়েন্ট। এছাড়া সার্বিকভাবে সপ্তাহটিতে আগের চেয়ে লেনদেন কমেছে ৪২ শতাংশ। ঢাকার মতো অপর শেয়ার বাজারেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। সেখানেও হাতেগোনা দু’একটি নতুন কোম্পানি ছাড়া বাকিগুলোর দর কমেছে। সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, আগের সপ্তাহের ধারাবাহিকতায় পতনের মাধ্যমে লেনদেন শুরু করে প্রধান পুঁজিবাজার। এই সূচকটির সপ্তাহ শুরু হয় সার্বিক সূচক বা ডিএসইএক্স ৪১৯২.২১ পয়েন্ট। আর ধারাবাহিক পতন শেষে তা দাঁড়িয়েছে ৪০৪৭ পয়েন্টে। এর আগে ২০১৩ সালে এই সূচকটি ৪ হাজার ৫৫ পয়েন্ট দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল। তাই প্রাথমিকভাবে ধরে নেয়া হয় প্রথম বারের মতো সূচকটি ভিত্তি পয়েন্টকে ছাড়িয়ে নিচে নামল। এতে বিনিয়োগকারীরা নতুন করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে দায়ী করেছেন। তাদের মতে বাজারে নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিয়ন্ত্রণ নেই। কর্তাব্যক্তিরা শুধু নতুন শেয়ার ইস্যু নিয়েই বেশি ব্যস্ত। এর মাঝে বিনিয়োগকারীদের হৃদয়ের রক্তক্ষরণ শুধু বাড়ছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, বিনোয়োগকারীদের অনাস্থাকে পুঁজিবাজারের নেতিবাচকতার কারণ হিসাবে মনে করেন। এ ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের নিষ্ক্রিয় ভূমিকাও অন্যতম কারণ বলে দাবি। সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হওয়া অধিকাংশ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দর কমেছে। মোট ৩২৪টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩৫টির দর বেড়েছে, কমেছে ২৫টির, অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টির দর। আর ৩টি কোন লেনদেন হয়নি। সূচকের ন্যায় লেনদেনেও ব্যাপক অবনমন হয়েছে গত সপ্তাহে। আগের সপ্তাহে ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছিল ৪৭৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। যা গত সপ্তাহে কমে হয়েছে ৩৪০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহের তুলনায় লেনদেন কমার হার ২৭.৯৯ শতাংশ। সপ্তাহ শেষে ডিএসই বাজার মূলধনের পরিমাণ কমেছে। সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর বাজার মূলধনের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি। আর সপ্তাহ শেষে তা কমে ২ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। সপ্তাহে বাজার মূলধন কমেছে ২.২২ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে ইউনাইটেড পাওয়ার। নতুন তালিকাভুক্ত এ কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৬৪ কোটি ৭ লাখ টাকার। সপ্তাহের মোট লেনদেনের ১২.০৩ শতাংশই লেনদেন হয়েছে এ কোম্পানিটির। যদিও আগের সপ্তাহের তুলনায় কোম্পানিটির লেনদেন কমেছে ৮.০২ শতাংশ। আগের সপ্তাহের তুলনায় ১ শতাংশ লেনদেন বেড়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে এসিআই লিমিটেড। ৯৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে এ কোম্পানির। যা মোট লেনদেনের ৬.৯৪ শতাংশ। লেনদেনের তৃতীয় স্থানে থাকা এসিআই ফরমুলেশনের সপ্তাহজুড়ে ৭৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এই তালিকার অপর কোম্পানিগুলো হলো : বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং মিলস, ওয়েস্টার্ন মেরিন, শাশা ডেনিমস, মবিল যমুনা, খুলনা পাওয়ার, শাহজিবাজার পাওয়ার, সাইফ পাওয়ারটেক। দর বৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলো হলো : এসিআই ফর্মুলেশন, জেমিনী সী ফুড, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স, রেকিট বেনকিজার, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যোকো লিমিটেড, মুন্নু স্টাফলারস, সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড। দর হারানোর সেরা কোম্পানিগুলো হলো : রংপুর ফাউন্ড্রি ও ফুড প্রোডাক্ট লিমিটেড, পপুলার লাইফ, সোনারগাঁও টেক্সটাইল, সাইনপুকুর সিরামিকস, বেক্সিমকো সিনথেটিকস, প্রিমিয়ার লিজিং, নিটল ইন্স্যুরেন্স, আজিজ পাইপস, এ্যাটলাস বাংলাদেশ ও আমরা টেকনোলজিস।
×