ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অনুমোদনহীন নৌযান বন্ধের সুপারিশ বাস্তবায়ন হয়নি

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ৩ মে ২০১৫

অনুমোদনহীন নৌযান বন্ধের সুপারিশ বাস্তবায়ন হয়নি

স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ পটুয়াখালীর রামনাবাদ নদীতে শাথিল-১ লঞ্চডুবির এক বছর পূর্ণ হলো। কিন্তু এই এক বছরেও লঞ্চডুবি ঘটনার পরে তদন্ত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন হয়নি। বরং তদন্ত কমিটির সুপারিশ উপেক্ষা করে পটুয়াখালীর দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীতে চলছে অনুমোদনবিহীন অজ¯্র নৌযান। যা আবারও যে কোন মুহূর্তে বিয়োগান্তক ঘটনার জন্ম দিতে পারে। গত বছর অর্থাৎ ২০১৪ সালের ৩ মে চালকের অবহেলা ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে পটুয়াখালীর শীর্ষস্থানীয় বিএনপি নেতা ও সাবেক এমপি মোঃ শাহজাহান খানের মালিকানাধীন এমএল শাথিল-১ লঞ্চ কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে পড়ে রামনাবাদ নদীতে ডুবে যায়। এতে ১৬ জনের প্রাণহানি ঘটে। লঞ্চডুবির ঘটনায় পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক পরের দিন তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে পটুয়াখালীর গলাচিপা ও রাঙ্গাবালী উপজেলার বিভিন্ন রুটে ঝড়ের মৌসুমে ছোট আকারের লঞ্চ চলাচল বন্ধের সুপারিশ করা হয়। পাশাপাশি বড় আকারের লঞ্চ, সি-ট্রাক অথবা ওই ধরনের নিরাপদ যানবাহন প্রচলনেরও সুপারিশ করা হয়। কিন্তু বাস্তবে এখনও সে সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হয়নি। উপরন্তু লঞ্চ মালিক শাহজাহান খানের বিরুদ্ধে মেরিন কোর্টে মামলা হলে উচ্চ আদালতে জামিন নিয়ে তিনি আবারও এসব রুটে ছোট লঞ্চ চালাচ্ছেন বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছে। প্রসঙ্গত, গত ১৫ মার্চ থেকে উপকূলীয় এলাকায় শুরু হয়েছে সাত মাসের দুর্যোগ মৌসুম, যা ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। ২০০৭ সালে সরকার পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলে ৬৫ ফুটের কম দৈর্ঘ্যের লঞ্চ পুরো সাত মাস বন্ধ রাখার নির্দেশনা জারি করে, যা আজও অব্যাহত আছে। কিন্তু সে নির্দেশনাও কেউ মানছে না। বর্তমানে গলাচিপা ও রাঙ্গাবালীর বিভিন্ন নৌরুটে প্রতিদিন শতাধিক ট্রলার যাতায়াত করছে। রাঙ্গাবালীর কোড়ালিয়া-গলাচিপার পানপট্টি, রাঙ্গাবালী-লালমোহন, গলাচিপা-রাঙ্গাবালী, গলাচিপা-চরমোন্তাজ, গলাচিপা-মৌডুবী, উলানিয়া-চরমোন্তাজ, গলাচিপা-নিজকাটাসহ প্রায় ২০টি রুটে এসব নৌযান চলাচল করছে। এছাড়া, রাঙ্গাবালী উপজেলার মৌডুবী থেকে কলাপাড়া পর্যন্ত বর্তমানে একটি লঞ্চ সার্ভিস চলছে। অনুমোদনবিহীন নৌযান চলাচলের বিষয়ে পটুয়াখালী বিআইডব্লিউটির উপপরিচালক আবদুর রাজ্জাক জানান, ৬৫ ফুটের ছোট নৌযান প্রাকৃতিক দুর্যোগ মৌসুমে চলাচলের অনুমোদন তারা দেননি। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এলাকা হওয়ায় তাদের অগোচরে এসব নৌযান চলতে পারে। তবে অভিযোগ পেলে কড়াকড়ি ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক অমিতাভ সরকার জানান, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে একটি পত্র পাঠানো হয়েছিল কিন্তু পরে এ বিষয়ে আর অগ্রগতি হয়নি। সর্বশেষ অগ্রগতি ফাইল না দেখে বলা সম্ভব নয়।
×