ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বরিশালে দুই পরিবার গ্রাম থেকে উৎখাত

প্রকাশিত: ০৪:০৪, ৩ মে ২০১৫

বরিশালে দুই পরিবার গ্রাম থেকে উৎখাত

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ এক সন্তানের জনকের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে চার মাসের অন্তঃস্বত্তা হয়েছে এক কিশোরী। এনিয়ে গ্রাম্য সালিশ বৈঠকে পরকীয়া প্রেমিককে মধ্যযুগীয় নির্যাতনের পর মোটা অঙ্কের টাকা জরিমানা আদায় করে উভয় পরিবারকে চিরদিনের জন্য গ্রাম থেকে উৎখাত করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে জেলার গৌরনদী উপজেলার টরকী এলাকার রামনগর গ্রামে। শনিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সালিশ বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরকীয়া প্রেমিক ব্যবসায়ী শহিদ ফকিরের ঘরের মালামাল নসিমনযোগে নিয়ে যাচ্ছেন তার বোন রুনু বেগম ও বিউটি বেগম। সালিশ বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের মৃত ধোনাই ফকিরের পুত্র এক সন্তানের জনক শহিদ ফকিরের সঙ্গে প্রতিবেশী সোবাহান খলিফার ষোড়শী কন্যা প্রিয়া আক্তারের (১৭) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাদের দৈহিক মেলামেশায় প্রিয়া চার মাসের অন্তঃস্বত্তা হয়ে পড়ে। এ নিয়ে ৩০ এপ্রিল রাতে স্থানীয় প্রভাবশালী বুলবুল দেওয়ান, আবুল হোসেন ফকির, বাচ্চু ফকির, মতিন খলিফার নেতৃত্বে সোবাহানের বাড়িতে সালিশ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। শহিদ ফকিরের বোন রুনু বেগম জানান, গ্রাম্য সালিশ বৈঠকে শহিদ খলিফাকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের পর পিঠমোড়া করে বেঁধে রাখা হয়। একপর্যায়ে অন্তঃস্বত্তা প্রিয়ার অপারেশন ও থানা পুলিশ ম্যানেজের নামে তার ভাইয়ের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। ভাইকে প্রাণে বাঁচাতে ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাদা স্ট্যাম্পে তাদের কাছ থেকে স্বাক্ষর আদায় করা হয়। উভয় পরিবারের সদস্যদের স্বাক্ষর আদায় করে তাদের গ্রাম থেকে বিতারিত করার ঘোষণা দেয় প্রভাবশালীরা। তিনি আরও জানান, জরিমানা টাকা পরিশোধের জন্য শহিদ খলিফার বসত ঘর ও দোকান ক্রয় করে আবুল হোসেন ফকির। আজ পটিয়া মুজাফরাবাদ গণহত্যা দিবস বিকাশ চৌধুরী, পটিয়া, ২ মে ॥ চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার মুজাফরাবাদে আজ গণহত্যা দিবস। ’৭১ সালের ৩ মে পাকবাহিনী তিন শতাধিক নারী-পুরুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে। শুধু তা নয় এলাকার মা বোনদের ইজ্জতহানি ও বসত ঘরে অগ্নিসংযোগ করে চিরতরে তাদের উচ্ছেদের চেষ্টা চালিয়েছিল। হানাদার বাহিনীর ভয়াল তা-বে সেদিন তিন শতাধিক নারী-পুরুষ নিহত হওয়ার পাশাপাশি সম্ভ্রম হারায় অনেক মা- বোন। হত্যাযজ্ঞের পাশাপাশি ওই দিন চলে রাজাকার, আলবদরদের লুটপাট। যুদ্ধপরবর্তী সময়ে ক্ষতিগ্রস্তরা কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করলেও অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছিল বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। সেই হত্যাযজ্ঞ ও পটিয়া মুজাফরাবাদ গ্রামে যাদের সহযোগিতায় হত্যাযজ্ঞ, অগ্নিসংযোগ ও নারীদের ইজ্জতহানি হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে সরকারীভাবে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ হয়নি। স্থানীয় সামাজিক সংগঠক ‘সমন্বয়’ ও নিহতদের পরিবারের দাবির প্রেক্ষিতে ২০১০ সালে উপজেলা প্রশাসন ‘শহীদ স্মৃতি স্তম্ভ’ নির্মাণ করে। গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আজ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এদিকে, মুজাফরাবাদের বধ্যভূমিটি অবহেলায় পড়ে থাকায় গ্রামবাসী ও নিহতের পরিবারগুলো ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
×