ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

টানা তিন ম্যাচে শতক ॥ বাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তান ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শতক

হাফিজের রেকর্ডে ডুবছে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ৩০ এপ্রিল ২০১৫

হাফিজের রেকর্ডে ডুবছে বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার খুলনা থেকে ॥ ওয়ানডে, টি২০’তে যে ক্রিকেটারকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি। ব্যর্থতা আর ব্যর্থতা সঙ্গী হয়েছে। সেই মোহাম্মদ হাফিজ টেস্টে কী দুর্বার খেলছেন! বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে শতক করে ফেলেছেন। ১৭৯ বল খেলে ১২ চার ও ২ ছক্কায় ১৩৭ রান করে অপরাজিতও আছেন। তার এ ব্যাটিংয়ে যেন বাংলাদেশও প্রথম টেস্টে ডুবতে যাচ্ছে। হাফিজ যখন ১২৩ বলে ১০০ রান করলেন, তখন একটি রেকর্ডও হয়ে গেল। এর আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৮ টেস্ট খেলেছে পাকিস্তান। খুলনা টেস্ট নিয়ে নবম টেস্ট খেলছে। বাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তানী ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শতক এখন হাফিজের। সবার উপরে এখন অবস্থান হাফিজের। যেখানে বাংলাদেশের বিপক্ষে ইউনুস খান, মোহাম্মদ ইউসুফ, ইয়াসির হামিদ, আবদুল রাজ্জাক, ইনজামাম উল হক, তৌফিক ওমর ২টি করে শতক করেছেন, সেখানে হাফিজ ৩ শতক করেছেন। খুলনা টেস্টের প্রথম ইনিংসে শতক করে টেস্ট ক্যারিয়ারের অষ্টম শতকও তুলে নিয়েছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশের বিপক্ষেই ৩ শতক করেছেন! শুধু কী তাই। হাফিজ টানা তিন ম্যাচে তিন শতক করেছেন। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে যে কোন একটি ইনিংসে যদি শতক হাঁকাতে পারেন, তাহলে টানা ৪ শতক হবে হাফিজের। তখন পাকিস্তান ব্যাটসম্যানদের মধ্যে টানা ৫ ম্যাচে শতক করা মোহাম্মদ ইউসুফের পেছনে থাকবেন হাফিজ। আর এখন পাশে থাকা ৩ শতক করা জহির আব্বাস, মুদাসসর নজর, শোয়েব মোহাম্মদ, ইউনুস খানদের পেছনে ফেলে দেবেন এ ওপেনার। টেস্টে হাফিজকে নিয়ে শুরু থেকেই ভয় ছিল। মিসবাহ, ইউনুসদের মতো অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে হাফিজকে নিয়েও ভয় ছিল। সেই ভয় যে যৌক্তিক তা প্রমাণ করে দিলেন হাফিজ নিজেই। তিন ওয়ানডেতে তার রান ৮ (৪, ০, ৪)। টি২০’তে করেছেন ২৬ রান। এ ব্যাটসম্যান টেস্টে ব্যাট হাতে নেমেই কী দুর্বার। একবার ‘রিভিউ’য়ের তোপে পড়েছেন। এছাড়া পুরো ইনিংসটি সুন্দরভাবে সাজিয়েছেন। বিশ্বকাপের আগে টানা দুই টেস্টে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন ২০০৩ সালের আগস্টে টেস্ট অভিষেক হওয়া ৩৪ বছর বয়সী এ ব্যাটসম্যানের। খুলনা টেস্টের আগে খেলেছেন ৪০ টেস্ট। তার টেস্ট অভিষেক হয়েছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই। ২০০৩ সালে পেশোয়ারে দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের বিপক্ষে শতক হাঁকান। সেটি তার ক্যারিয়ারের প্রথম শতক। করেন অপরাজিত ১০২ রান। এরপর ২০১১ সালে চট্টগ্রামে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ১৪৩ রান করেন হাফিজ। আবার বুধবার করেন আরেকটি শতক। সেই সঙ্গে এ মুহূর্তে ৩৯.৬৭ গড়ে ২৭৭৭ রানও হয়ে গেছে হাফিজের। বাংলাদেশের বিপক্ষে যে বছর টেস্ট অভিষেক হয়, সেই বছরেই আরেকটি শতক হাঁকান হাফিজ। ২০০৬ সালে করাচীতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৪ রান করেন, প্রায় ৫ বছর পর ২০১১ সালে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে তৃতীয় শতক তুলে নেন। অবশ্য এর মধ্যে ২০০৮ থেকে ২০১০ সালের শেষ পর্যন্ত হাফিজকে টেস্ট খেলতে দেখা যায়নি। যেই তৃতীয় শতক পেলেন, দলেও স্থায়ী হয়ে গেলেন। সেই থেকে একই বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে চট্টগ্রামে প্রথম ইনিংসে ১৪৩, ২০১২ সালে কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৯৬ রান করেন। মাঝখানে আবার ২ বছরের বেশি সময় শতক খরা কাটান হাফিজ। যেই বিশ্বকাপের আগে শেষ সিরিজে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে নামেন হাফিজ, পরপর দুই ম্যাচেই শতক করেন। প্রথম টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ১০১ রান করার পর দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ক্যারিয়ার সেরা ১৯৭ রানের ইনিংস খেলেন। টানা দুই ম্যাচে শতক করেন। এবার বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে খেলতে নেমে করলেন আরেকটি শতক। এ শতকটি হাফিজকে শুধু টানা তিন ম্যাচে শতক করার গৌরবই এনে দেয়নি, বাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তান ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শতক করার রেকর্ডেও ভাসায়। সেই রেকর্ডে আবার ডুবতেও চলেছে যেন বাংলাদেশ।
×