ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে পথ চলার অঙ্গীকার ঢাকার দুই মেয়রের

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ৩০ এপ্রিল ২০১৫

সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে পথ চলার অঙ্গীকার ঢাকার দুই মেয়রের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে পথ চলা, বিশ্বমানের আধুনিক ও সবুজ নগরী গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণে নব নির্বাচিত দুই মেয়র আনিসুল হক ও সাঈদ খোকন। ভোট গণনা শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তারা বেসরকারীভাবে ফল ঘোষণার পরপরই সংবাদ সম্মেলন করে তারা এই অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরেন। প্রথমবারের মতো নির্বাচন করে বিজয়ী হওয়া দুই মেয়র প্রার্থীই ক্ষমতার অপব্যবহার না করে দুর্নীতিমুক্ত নগরভবন গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেন। বিকেলে ধানম-ি ৩২ নম্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তারা। রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিন নবনির্বাচিত মেয়র। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নব নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেছেন, আমার মেয়াদকালে একদিনের জন্যও ক্ষমতার অপব্যবহার করব না। জনগণের বিপুল ভোটে আমি নির্বাচিত হয়েছি। ফলে সুযোগ এসেছে ঢাকাবাসীর জন্য কাজ করার। প্রত্যেককে সঙ্গে নিয়ে কাজ করব। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী, রাজনৈতিক বিরোধীপক্ষসহ ঢাকাবাসী আমার কাছে নিরাপদে থাকবে। আমার নিয়ত পরিষ্কার। দলমত নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে আধুনিক ঢাকা গড়ে তুলতে চাই।’ বুধবার নির্বাচন কমিশনের আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণার পর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় আরও বক্তব্য দেন দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমন্বয়ক সাবেক মন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন, ক্যাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলাম, মুকুল বোস, মৃণাল কান্তি দাস, ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, হাজী মোঃ সেলিম, সুজিত রায় নন্দি, নজরুল ইসলাম বাবু, নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, শাহে আলম মুরাদ, মুক্তিযোদ্ধা সফিকুল বাহার মজুমদার টিপু প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলন শেষে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ধানম-ি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন নবনির্বাচিত মেয়র সাঈদ খোকন। সাঈদ খোকন বলেন, আমার বাবা প্রয়াত ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহম্মদ হানিফ শিখিয়ে গেছেন, সম্মান দিলে সম্মান পাওয়া যায়। তাই আমার বিরোধীদেরসহ ঢাকাবাসীকে সম্মানের সঙ্গে নিরাপদে রাখব। আমার সামনে সুযোগ এসেছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের শামিল হওয়ার। তিনি বলেন, মেয়র হিসেবে শপথ নিয়ে প্রথমেই সকল শ্রেণী পেশার লোকদের নিয়ে ‘ঢাকা ডায়ালগ’ করব। কারণ আমি বিরোধীসহ সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই। আমি একজন ক্ষুদ্র মানুষ। আমার একার পক্ষে ঢাকার এতো সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। তাই প্রত্যেকেই আমাকে সহযোগিতা করবেন। সবাইকে নিয়ে একটি বাসযোগ্য ঢাকা গড়ে তুলব। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, দুই কোটি মানুষের ঢাকা। এত বড় একটি নির্বাচনে যেসব ঘটনা ঘটেছে, সেগুলো বিচ্ছিন্ন দুর্ঘটনা মাত্র। কোন বড় ধরনের ঘটনা ঘটেনি। সমর্থন দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন সাঈদ খোকন। একই সঙ্গে ঢাকাবাসী ও সর্বস্তরের ভোটারদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তাকে জয়যুক্ত করার জন্য। ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, বিএনপি নির্বাচন বর্জন না করলে তাদের পক্ষে আরও বেশি ভোট পড়ত। কিন্তু নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পূর্ব পরিকল্পিত নাটক মঞ্চস্থ করেছে। আসলে জনগণ দ্বারা ধিকৃত হয়ে গণবিচ্ছিন্ন হয়ে হতাশায় ভুগছে বিএনপি। বিএনপির নীলনক্সার কারণে চট্টগ্রামের মেয়র প্রার্থী মনজুর আলম নির্বাচন থেকেই শুধু নয়, রাজনীতি থেকেও সরে দাঁড়িয়েছেন। কামরুল ইসলাম বলেন, সিটি নির্বাচন শুরু হওয়ার পর থেকেই বিএনপি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছিল। একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন জাতিকে উপহার দেয়ায় নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান কামরুল। এদিকে বেসরকারীভাবে বিজয়ী ঘোষণার পর পরই গুলশানে নির্বাচনী কার্যালয়ে আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, একসঙ্গে সবাইকে নিয়ে পথ চলতে চাই। আমাদের লক্ষ্য বিশ্বমানের ঢাকা গড়া। ঢাকা হবে গ্রীন সিটি। তিনি বলেন, কাজ করতে সকলের পরামর্শ নেয়া হবে। সকলের মতামত বিবেচনায় নিয়ে আগামীদিনে পথ চলতে চাই। আশাকরি সকলের সহযোগিতা পাব। নির্বাচনে যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানান আনিসুল হক। এরপর বুধবার বিকেলে তিনি ধানম-িতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
×