ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

স্থানীয় বিএনপি নেতারা পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্রে যেতে নিষেধ করে

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ২৯ এপ্রিল ২০১৫

স্থানীয় বিএনপি নেতারা পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্রে যেতে নিষেধ করে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা উত্তর সিটির বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষের অধিকাংশ পোলিং এজেন্ট মঙ্গলবার ভোটকেন্দ্রেই আসেননি। স্থানীয় বিএনপি নেতারাই তাঁদের পোলিং এজেন্টদের আসতে নিষেধ করেছেন বলে জানা গেছে। অথচ বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে আসা বিএনপি সমর্থিত এজেন্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁদের আসতে কোন ধরনের বাধা ছিল না। শান্তিপূর্ণভাবেই তাঁরা দায়িত্ব পালন করেছেন। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, ঢাকা উত্তর সিটিতে ৩৬টি ওয়ার্ডের বিপরীতে ভোটকেন্দ্র করা হয়েছে ১০৯৩টি। আর ভোটকক্ষের সংখ্যা ৫ হাজার ৮৯২টি। এই সিটিতে মেয়র, কাউন্সিলর ও মহিলা কাউন্সিলরদের সমর্থিত পোলিং এজেন্টের সংখ্যা ৫ হাজার ৮৯২ জন। মঙ্গলবার সরেজমিন ঢাকা উত্তর সিটির শতাধিক ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের পক্ষের কোন এজেন্ট আসেননি। সকালে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে দুপুর গড়িয়ে গেলেও পোলিং এজেন্টদের দেখা মেলেনি। অথচ বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বিএনপির সিনিয়র নেতারা এমন অভিযোগ তুলে বলেন, বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেয়া হচ্ছে। সকাল সাড়ে ৮টায় মিরপুরের দুই নম্বর সেকশনের মিরপুর বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সকালে ভোট শুরু হওয়ার আগেই বিএনপিসহ অন্যান্য মেয়র-কাউন্সিলর প্রার্থীদের এজেন্টরা আছেন, অথচ বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর কোন পোলিং এজেন্ট নেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটির ঘড়ি প্রতীকের পোলিং এজেন্ট আফসারা বেগম বলেন, ভোটগ্রহণ শুরুর আগেই অন্য প্রার্থীদের এজেন্ট ভোটকেন্দ্রে আসেন। তবে এখনও বাস প্রতীকের কোন এজেন্ট আসেননি। সকাল সাড়ে ১০টায় মিরপুর আদর্শ বিদ্যানিকেতনে গিয়ে দেখা যায়, মেয়র, কাউন্সিলর ও মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীদের এজেন্ট থাকলেও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের পোলিং এজেন্ট নেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী হাজী রজ্জব হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, কোন প্রার্থীর এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে আসতে কোন ধরনের বাধা ছিল না। তিনি বলেন, বিএনপি নেতারাই তাঁদের এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে আসতে নিধেষ করেছেন। দুপুর সাড়ে ১২টায় ঢাকা উত্তর সিটির রূপনগরে কামাল আহমেদ মজুমদার স্কুল এ্যান্ড কলেজে গিয়ে দেখা যায়, তখন পর্যন্ত বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের পক্ষের কোন এজেন্ট আসেননি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনিসুল হকের পক্ষে থাকা পোলিং এজেন্ট নাসিমুল ইসলাম এবং মমতাজ জানান, এখনও বিএনপির কোন এজেন্টকে আসতে দেখেননি তাঁরা। তবে তাঁরা হয়ত আরেক বেলা হলে আসবেন। দুপুরে মিরপুর এক নম্বর ডি ব্লকের আট নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত মিরপুর উপশহর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সব প্রার্থীর এজেন্ট আছে, কিন্তু বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর কোন এজেন্ট নেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপশহর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই ভোটকেন্দ্রের একটির প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আওলাদ হোসেন বলেন, আমার কাছে যাঁরা এসে পরিচয়পত্র দেখিয়েছেন, তাঁদের আমরা বসিয়ে দিয়েছি। যাঁরা আসেননি, তাঁদের দায়িত্ব আমাদের নয়। মিরপুর গার্লস ল্যাবরেটরি স্কুল, মিরপুর ১৪ নম্বরের সরকারী স্কুল, দারুস সালাম সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পল্লবীর নাহার একাডেমি উচ্চ বিদ্যালয়, মিরপুর আরসি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গাবতলী পাঞ্জেরী মডেল হাই স্কুলে সরেজমিন একই চিত্র দেখা যায়। বেলা সাড়ে ১১টায় মিরপুর বাংলা স্কুলে গিয়ে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে সাইফুল ইসলাম নামের এক পোলিং এজেন্টের দেখা মেলে। তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, সকাল সাড়ে ৭টায় ভোটকেন্দ্রে এসেছি। পথে কোন বাধা এসেছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, তেমন কোন সমস্যা হয়নি। দুপুর ১২টায় মিরপুর আইডিয়াল স্কুলের চারটি কেন্দ্র ঘুরে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর আরও একজন পোলিং এজেন্টকে খুঁজে পাওয়া যায়। নয়ন নামের ওই পোলিং এজেন্ট জনকণ্ঠকে বলেন, আমার নাম আগে থেকেই চূড়ান্ত করা ছিল। তবে বিএনপির এক নেতা ভোটের দিন রাতের অবস্থা বুঝে কেন্দ্রে আসতে বলেছিলেন। আসার পথে কোন বাধা বা সমস্যা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, না ওই ধরনের কোন সমস্যাই হয়নি। আসার পরও কোন সমস্যা হয়নি বলে তিনি জানান।
×